সমালোচনার বাণে জর্জরিত ভারতীয় ক্রিকেট পরিবার
২৩ আগস্ট ২০১১ভারতের এবারের ইংল্যান্ড সফরের ফলটা ঠিক এমন দাঁড়িয়েছে - প্রথম টেস্টে ১৯৬ রানে, দ্বিতীয় টেস্টে ৩১৯ রানে, তৃতীয় টেস্টে এক ইনিংস ও ২৪২ রানে এবং চতুর্থ বা শেষ টেস্টে এক ইনিংস ও আট রানে শোচনীয় পরাজয়৷ অবশ্য ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে এমন অঘটন নতুন নয়৷ ১৯৯১-৯২ মৌসুমে ঠিক একই ঘটনা ঘটেছিল অস্ট্রেলিয়ায়৷ সেসময়ও স্বাগতিকদের কাছে ৪-০ ম্যাচে টেস্ট সিরিজ হেরে ব়্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ আসন থেকে তৃতীয় স্থানে জায়গা পেয়েছিল ভারত৷ তবে তখন ভারতের উপরে অবস্থান ছিল ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার৷ ক্রিকেট বোদ্ধারা অবশ্য ইংল্যান্ডের এই চমৎকার জয়কে ১৯৭৪ সালের ধবল ধোলাইয়ের পুনরাবৃত্তি হিসেবে দেখছেন৷ স্বাগতিকরা তখনও তিন ম্যাচের সিরিজ এবং দু'টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের সবগুলোতেই ভারতকে হারিয়েছিল খুব শোচনীয়ভাবে৷
এবারের সফরে অবশ্য অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ইনজুরির কারণে জহির খান এবং হরভাজন সিং-এর মতো সহকর্মীদের ছাড়াই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে৷ ফলে সেটিও এমন পরাজয়ের পেছনে কিছুটা দায়ী হতে পারে৷ তবে ব্যর্থতার কারণ যা-ই হোক, দলের হাল ছাড়তে চাননি ধোনি৷ সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘‘আমি অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে ভাবছি না৷ আমাকে যখন এই দায়িত্ব দেওয়া হয়, তখন আমি এটা চাইনি৷ তবে এই দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সর্বোচ্চ ভালো কিছু দিতে চেষ্টা করে যাচ্ছি৷''
ইংল্যান্ডের মাঠে এমন শোচনীয় পরাজয়ের পর ভারতের গণমাধ্যম নানাভাবে সমালোচনার বাণ ঝুঁড়েছে বিসিসিআই-এর দিকে৷ টাইমস অফ ইন্ডিয়া এই পরাজয়কে বলেছে ‘এ ক্রায়িং শেম' অর্থাৎ অশ্রুসিক্ত লজ্জা৷ পত্রিকাটি অভিযোগ তুলেছে, শুধু অর্থ আয়ের দিকেই নজর দিচ্ছে বিসিসিআই৷ দলের দক্ষতা এবং মান বাড়ানোর দিকে তাদের নজর নেই৷ পত্রিকাটি ব্যঙ্গ করে বিসিসিআই-কে তাদের প্রত্যেকটি অক্ষর নিয়ে বিশেষায়িত করেছে বম্বাসটিক, ক্যালাস, কেওটিক এবং ইনকরিজিবল শব্দ দিয়ে৷ মেল টুডে শিরোনাম করেছে ‘দুর্দশাগ্রস্ত ভারত ধবল ধোলাই'৷ দ্য হিন্দু পত্রিকার মন্তব্য - ‘অবমাননার আর কিছু বাকি নেই'৷
এদিকে, শচিন টেন্ডুলকারের শততম শতক পূরণ হলো না মাত্র নয় রানের জন্য৷ ফলে দলের ভরাডুবির সাথে শচিনের বিশাল রেকর্ড গড়ার ব্যর্থতাটিও যোগ হয়েছে ভক্তদের মনে৷ অবশ্য, শচিনের এই ব্যর্থতাই আনন্দিত হিন্দুস্তান টাইমস৷ তাদের যুক্তি, দলের এমন খারাপ দিনে শচিনের এই রেকর্ড তৈরি হলে তা দলের ব্যর্থতার দিক থেকে মনোযোগ ঘুরিয়ে দিত৷ তাই শচিনের এই রেকর্ড না হয়ে বরং ভালই হয়েছে৷ তবুও সব মিলিয়ে ভারতের যে বেহাল দশা হয়েছে এবারের ইংল্যান্ড সফরে তাতে প্রচণ্ড হতাশ ভারতীয় ক্রিকেট অঙ্গনের সবাই৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক