সমস্যা পরিভাষার নয়, ইচ্ছার
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভাষা সৈনিক অ্যাডভোকেট গাজীউল হক আদালতে মামলার আরজি এবং সওয়াল-জওয়াব বাংলায় করতেন৷ এটা ছিল তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগ৷ ১৯৭১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বাংলা একাডেমিতে দেয়া এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘‘আমার দল ক্ষমতা গ্রহণের দিন থেকেই সকল সরকারি অফিস, আদালত ও জাতীয় জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে বাংলা চালু করবে৷''
আর ১৯৯৮ সালের ১ মার্চ ঢাকায় বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু কন্যা এবং সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভাষণে বলেন, ‘‘আমাদের পবিত্র সংবিধানে আছে, প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ আর প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা৷ সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সব আদালতই এই প্রজাতন্ত্রের আদালত৷''
ডয়চে ভেলে'র পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন উচ্চ আদালতের মাত্র দুইজন বিচারপতি বাংলায় তাঁদের রায় ও আদেশ লেখেন৷ তাঁরা হলেন হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল৷ পাশাপাশি এম. ইনায়েতুর রহিম নামে এক বিচারপতি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় রায় এবং আদেশ লেখেন বলে জানা গেছে৷ তাছাড়াও সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক এবং আপিল বিভাগের দু'জন সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও বিচারপতি হামিদুল হক বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় রায় ও আদেশ লিখতেন৷
দেশের উচ্চ আদালতে বাংলা ব্যবহারের অগ্রগতি এ পর্যন্ত এতটুকুই বলে জানা যায়৷ তবে নিম্ন আদালতে এখন ৭০ ভাগ রায় ও আদেশ বাংলায় লেখা হয় বলে আদালত সংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে ডয়চে ভেলে৷ অথচ এখন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে দু'টি বেঞ্চে প্রধান বিচারপতিসহ মোট সাতজন বিচারপতি রয়েছেন৷ আর হাইকোর্ট বিভাগের ৫৬টি বেঞ্চে মোট বিচারপতি ৯২ জন৷
উচ্চ আদালতের আইনজীবীরাও ইংরেজিতে আদালতে যুক্তি তর্ক তুলে ধরতে বা সওয়াল জওয়াব করতে পছন্দ করেন বলে অনেকেরই মতামত৷
ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘উচ্চ আদালত অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি কমিটি করেছে বাংলা ভাষা প্রচলনের জন্য৷ তবে এই কমিটিই বড় কথা নয়৷ আসলে বাংলাকে আমাদের মর্যাদা দিতে হবে৷ একে মর্যাদাশীল ভাবতে হবে৷''
আর বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পরিভাষা কোনো সমস্যা নয়৷ যথেষ্ঠ পরিভাষা তৈরি করা হয়েছে বাংলা একাডেমির উদ্যোগে৷ আসল বিষয় হল বাংলা ভাষার চর্চা করতে হবে৷ সেই চেষ্টার অভাব আছে৷''
১৯৮৭ সালে দেশে সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনের আইন করা হয়৷ এই আইনের ৩(৩) উপধারায় বলা হয়েছে, ‘‘যদি কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী এই আইন অমান্য করেন, তাহলে ওই কাজের জন্য তিনি সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধির অধীনে অসদাচরণ করেছেন বলে গণ্য হবে এবং তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধি অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷''
আর সংবিধানের প্রথম ভাগের ৪ নম্বর অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রভাষার ব্যাপারে বলা আছে, ‘‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা৷'' বাংলাদেশের সংবিধান বাংলায় লেখা৷ এর একটি নির্ভরযোগ্য ইংরেজি ভাষ্য আছে৷ তবে সংবিধানের কোন বিষয়ে অস্পষ্টতা দেখা দিলে বাংলাই প্রাধান্য পাবে৷
এদিকে এরশাদ সরকারের সময়ে ১৯৮৪ সালে এক নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছিল, সব সাইনবোর্ড ও গাড়ির নম্বর ফলক বাংলায় হতে হবে৷ তবে কেউ যদি প্রয়োজন মনে করে তবে নীচে ছোট করে ইংরেজিতে লিখতে পারে৷ গাড়ির নম্বর ফলক এখন শতভাগ বাংলায় হয়ে গেছে৷ এর কারণ হলো এখন আর কেউ ব্যাক্তিগতভাবে নম্বর ফলক লিখে গাড়িতে লাগাতে পারেন না, কেননা গাড়ির মালিকদেরকে এখন সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ডিজিটাল নম্বর ফলক নিতে হয়৷ আর সেটা বাংলায় লেখা হয়৷
কিন্তু সাইনবোর্ড লেখার ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার ব্যবহার পুরোপুরি কার্যকর হয়নি৷ ছোট-খাট দোকান, হোটেল বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বাংলা ভাষায় লেখা সাইনবোর্ড দেখা গেলেও অভিজাত হোটেল, রোস্তারাঁ, বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা শিল্প কারখানার সাইনবোর্ডে এখনো ইংরেজি ভাষার প্রাধান্য দেখা যায়৷ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামও দেখা যায় ইংরেজি ভাষায় দেওয়া হচ্ছে৷ সরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের নামও এখনো ইংরেজি ভাষাতেই রয়ে গেছে৷
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘আইন করে দেন, সাইনবোর্ড বাংলায় না হলে এক লাখ টাকা জরিমানা হবে৷ ভুল বানানে বাংলা লিখলে জরিমানা হবে৷ দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে৷ প্রয়োজন মানসিকতা ও শক্ত পদক্ষেপ৷''
বাংলাদেশে সরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে শিক্ষার মাধ্যম বাংলা৷ তবে ইংরেজি মাধ্যমেও পড়া যায়৷ আর বেসরকারি পর্যায়ে ইংরেজি মাধ্যমেরই প্রাধান্য৷ উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মাধ্যম হিসেবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষাই প্রচলিত৷ তবে বই ও রেফারেন্স বইয়ের ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষারই প্রাধান্য৷ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ইংরেজি ভাষাকেই গুরুত্ব দেয়া হয়৷
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলার খুব দুরাবস্থা৷ সরকারি বেসরকারি যে বিশ্ববিদ্যালয়ই বলেন না কেন বাংলা বিভাগ ছাড়া আর কোথাও বাংলা নেই৷ প্রশ্নও এখন আর বাংলায় হয়না, ইংরেজিতে হয়৷ আগে বাংলা ইংরেজি দু'ভাষায়ই হত৷ আমাদের অবস্থা হয়েছে এমন যে আমরা ভুল বাংলায় লিখলে বা বললে লজ্জা পাইনা কিন্তু ভুল ইংরেজিতে লজ্জা পাই৷ বিদেশে থেকে আমার সন্তান বাংলা ভুলে গেছে এটা বলতে আমরা গর্ববোধ করি৷ পরীক্ষায় ভুল ইংরেজিতে উত্তর লিখলেও নম্বর বেশি দেয়া হয়৷ এই মানসিকতার কারণেই বাংলা তার জায়গা পাচ্ছেনা৷''
বাংলাদেশের সচিবালয়সহ সরকারি দপ্তরগুলোতে এখন বলতে গেলে বাংলার ব্যবহার পুরোপুরি চালু হয়ে গেছে৷ সরকারি আদেশ, পরিপত্র, বিজ্ঞপ্তি, প্রজ্ঞাপন সবই বাংলা ভাষায় হচ্ছে৷ অভ্যন্তরীন ফাইল, ফাইলের নোটেও বাংলা ভাষাই ব্যবহার করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে৷ কিন্তু বেসরকারি খাতে পুরো উল্টো চিত্র৷ যেখানে প্রয়োজন ছাড়াও ইংরেজি বহুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে৷
তবে সরকারি দপ্তরগুলোতে বাংলা ভাষার প্রমিত ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন আছে৷ প্রশ্ন আছে বাক্য গঠন ও সঠিক শব্দ ব্যবহার নিয়ে৷ আর সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণও লক্ষনীয়৷
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘ফরাসী দেশে একটি আইন আছে৷ যদি সেখানে সরকারি কোনো লেখায় বা আদেশে বা নথিতে কোনো একটিও বিদেশি ভাষা ব্যবহার করা হয়, তাহলে এক বছরের জন্য বেতন বৃদ্ধি বন্ধ করে দেয়া হয়৷ আমাদের দেশেও এরকম বিধান করা যায়৷''
ভাষাবিজ্ঞানী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সিকদার মনোয়ার মুর্শেদ (সৌরভ সিকদার) ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আসলে এখন সমস্যাটা দাড়িয়েছে আমাদের মানসিকতায়৷ আমাদের আইন আছে সুযোগ আছে তারপরও আমরা বাংলাকে অবহেলা করি৷ আমরা বাংলার চেয়ে ইংরেজিকে কুলীন মনে করি৷ আমাদের বাংলা ভাষা ব্যবহারের জন্য ইচ্ছা থাকতে হবে৷''
তিনি বলেন,‘‘সরকারিভাবে কিছু নীতিমালা তৈরি করে দেয়া আছে কিন্তু সেটার বাস্তবায়ন নেই৷ সরকারিভাবে বিশ্ববিদ্যালয় আইন হচ্ছে৷আমদানি রপ্তানি আইন হচ্ছে৷ নেপালে আইন করে বলে দেয়া আছে নেপালি ভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় শিক্ষা প্রতষ্ঠানের নাম থাকতে পারবেনা৷ করলে সরকারের অনুমোদন পাবেনা৷ আমাদের দেশে একশ'র বেশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে৷ এর মধ্যে মাত্র দুই-তিনটির নাম বাংলায়৷ বাকি সবগুলোর নাম ইংরেজিতে৷ এই নামগুলো দেখে বোঝার উপায় নেই যে এগুলো আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়৷ সরকার এখানে আইন করে বলে দিতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বাংলায় হতে হবে৷''
বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ একটা বিরাট বাজার সৃষ্টি করেছে৷ আর এই বাজারকেও ব্যবহার করা যায় বাংলা ভাষার সমৃদ্ধির জন্য৷ বাইরে থেকে যে পণ্য এখানে আসে তাতে যদি বাংলায় পণ্যের নাম লেখা বাধ্যতামূলক করা হয় তাহলে তারা তা-ই করবে৷ কারণ তারা ব্যবসা করতে চায়৷ বাজার হারাতে চাইবে না৷
ড. সিকদার মনোয়ার মুর্শেদ বলেন, ‘‘সরকার যদি আইন করে দেয় বিদেশ থেকে যে মোবাইল ফোন সেট আসবে, সেখানে বাংলা লেখার সফটওয়্যার থাকতে হবে৷ রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন দিবসে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বার্তা দেয়া হয়৷ আর রোমান হরফে বাংলা লিখে সেটা করা হয়৷ এরকম কেন হবে?''
তিনি বলেন, ‘‘সরকার দু'বছর আগে একটা প্রকল্প নিয়েছে তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বাংলার ব্যবহার নিয়ে৷ বাজেট ১৬০ কোটি টাকা৷ ওই প্রকল্পে আমিও আছি৷ কিন্তু দুই বছরেও আমরা কাজটি শুরু করতে পারিনি৷ দরপত্র আহ্বান করতে পারিনি৷ আমার তাই মনে হচ্ছে বাংলা ভাষা প্রচলনে কখনো কখনো সরকারও বাধা হয়ে দাঁড়ায়৷''
তবে তিনি বলেন, ‘‘উচ্চশিক্ষার কথা আলাদা৷ এখনো আমরা বই করতে পারিনি বাংলায়৷ আদালতের অনেক পরিভাষা তৈরি করতে পারিনি৷ চিকিৎসা বিজ্ঞানের অনেক পরিভাষা আমরা এখনো বাংলায় পাইনি৷ কিন্তু একজন চিকিৎসক চাইলে কিন্তু বাংলায় চিকিৎসাপত্র লিখতে পারেন৷ সরকার নিয়ম করে দেয়ায় ওষুধের নাম কিন্তু বাংলায়৷ ইংরেজির পাশে বাংলাও থাকছে৷''
বাংলাদেশে বাংলা ভাষা নিয়ে আরেকটি সমস্যা এখন প্রকট৷ সেটা হল বাংলার সঙ্গে ইংরেজি মিশিয়ে এক অদ্ভুত ভাষা তৈরি হচ্ছে এখানে৷ আর ইরেজি উচ্চারণে বাংলা শব্দ উচ্চারণের প্রবণতা দেখা যায়৷ আর এই প্রবণতা টেলিভিশন এবং এফএম রেডিওতে প্রকট৷ কবি ড. কামাল চৌধুরী তথ্য সচিব থাকাকালে এই প্রবণতা রোধের চেষ্টা করেছিলেন৷ সংবাদ মাধ্যমগুলোর নীতি নির্ধারকদের নিয়ে বার বার বৈঠকও করেছেন৷ তার চেষ্টা ছিল কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি৷
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘ভাষার একটা বিশ্বজনীন রূপ আছে৷ তাই বিদেশি ভাষা প্রয়োজনমত গ্রহণে কোনো আপত্তি নেই৷ কিন্তু যেখানে বাংলা শব্দ আছে সেখানে কেন আমাদের বিদেশি শব্দ বা ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করতে হবে৷ যেমন বিরতি একটি অসাধারণ শ্রুতি মধুর শব্দ৷ কিন্তু টেলিভিশন অনুষ্ঠানের মাঝে বলা হয়, এখন নিচ্ছি একটা ব্রেক৷ এটা আমাদের ঔপনিবেশিক মানসিকতা৷''
তবে তিনি বলেন,‘‘বাংলা ভাষা এগিয়ে আসছে৷ আগের চেয়ে অবস্থান সংহত৷ পুরোপুরি প্রতিষ্ঠা পেতে আমাদের অর্থনীতিকে আরো এগিয়ে যেতে হবে৷ আমাদের অর্থনৈতিক শক্তি আমাদের ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করবে৷ আমার মনে হয় ৬-৭ বছরের মধ্যে পরিস্থিতি আরো ভালো হবে৷''
ড. সিকদার মনোয়ার মুর্শেদ বলেন, ‘‘এশিয়ার দেশ চীন-জাপানতো তাদের নিজের ভাষায়ই সব করছে৷ তাদেরতো কোনো সমস্যা হচ্ছেনা৷''
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরই বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলা পরিভাষা তৈরির কাজ শুরু হয়৷ একটি কমিটিও কাজ করে সাবেক সচিব মুজিবুল হকের নেতৃত্বে৷ সেই কমিটির সদস্য ছিলেন বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ওই কমিটির নাম ছিল পরিভাষা প্রচলন কমিটি৷ এখন আমরা প্রায় সবক্ষেত্রেই পরিভাষা তৈরি করে ফেলেছি৷ পরিভাষার সমস্যা আছে- এটা আমি বলবনা৷ এখন বাংলায় লেখার চেষ্টা করতে হবে৷ নিষ্ঠা ও ভালোবাসা দিয়ে লেখার চেষ্টা করতে হবে৷ যারা বলেন পরিভাষা নেই, তারা চেষ্টা করেন না৷ বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু থেকে শুরু করে সত্যেন বসু সকলেই এই কথা বলেছেন৷ আব্দুল্লাহ আল মুতি শরফুদ্দিন বিজ্ঞানের কত বিষয় বাংলায় লিখে গেছেন তার তো পরিভাষার সমস্যা হয়নি৷''
তিনি বলেন, ‘‘যারা নানা অজুহাত দেন তারা বাংলাও জানেন না ইংরেজিও ঠিকমত জানেন না৷ তারা বলে বটে আমরা ইংরেজি জানি৷ কিন্তু তাদের ইংরেজিতো আমরা বাইরে চালাতে পারিনা৷ ইংরেজি অনুবাদ করার জন্য কায়সার হক আর ফখরুল আলম ছাড়া আর তেমন কেউ নেই৷''
বাংলা ভাষা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অনেকের অনাগ্রহের কারণ কী? লিখুন মন্তব্যের ঘরে৷