ই-মেলের ওপর নজর রাখছে ইয়াহু
৫ অক্টোবর ২০১৬দৃশ্যত মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা যে সব শব্দসমষ্টি, সংখ্যা ও অক্ষরের ফিরিস্তি দিয়েছিলেন, ইয়াহু তার গ্রাহকদের ই-মেলে তার খোঁজ করার জন্য একটি প্রোগ্রাম সৃষ্টি করে৷ ইয়াহুর তিনজন সাবেক কর্মচারী ও এক অজ্ঞাত ব্যক্তি রয়টার্সকে বলেন যে, এভাবে কোটি কোটি ই-মেল অ্যাকাউন্টে আড়ি পাতা হয়ে থাকতে পারে৷ খবরটা ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি৷
ইয়াহু মঙ্গলবার প্রকাশিত হওয়া খবরটির সত্যতা অস্বীকার করেনি৷ কোম্পানির বিবৃতিতে শুধু বলা হয়েছে, ইয়াহু ‘‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইন মেনে চলে''৷ রয়টার্সের সূত্ররা বলেছেন যে, ইয়াহুর সিইও মারিসা মায়ার ও কোম্পানির কৌঁসুলি রন বেল যে কোম্পানির সিকিউরিটি টিমকে এই প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট করেননি, সে ব্যাপারে কিছু কিছু কর্মচারী প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন৷ বরং ইয়াহু তার ই-মেল ইঞ্জিনিয়ারদের একটি প্রোগ্রাম লিখতে বলে, যা মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার নির্দিষ্ট অক্ষর সমষ্টি সম্বলিত ই-মেলগুলিকে রিমোট রিট্রিভ্যালের জন্য আলাদা করে রাখবে৷
ইয়াহুর সিকিউরিটি টিম ২০১৫ সালের মে মাসে প্রোগ্রামটি আবিষ্কার করে৷ কর্মচারীরা গোড়ায় ভেবেছিলেন যে, হ্যাকাররা হ্যাক করেছে৷ ই-মেলে নজর রাখা নিয়ে নাকি সিইও মায়ার ও সিকিউরিটি প্রধান অ্যালেক্স স্ট্যামোসের মধ্যে মনোমালিন্যও হয়৷ স্ট্যামোস নাকি বলেছিলেন যে, হ্যাকাররা ই-মেলগুলির সুযোগ গ্রহণ করতে পারে৷ স্ট্যামোস ইয়াহু ছেড়ে ফেসবুকে যোগ দেন ২০১৫ সালের জুন মাসে৷
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এখনই কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে৷ এনএসএ অনুরূপভাবে নীরব৷ মার্কিন ফরেন ইন্টেলিজেন্স সার্ভেইল্যান্স অ্যাক্ট বা ফিসায় ২০০৮ সালে যে সংশোধন সংযোজিত হয়, তা অনুযায়ী সরকারি গোয়েন্দা সংস্থাগুলি মার্কিন টেলিফোন ও সেবাদাতাদের বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে তাদের গ্রাহকদের তথ্য সরবরাহ করতে বলতে পারে৷ ২০১৩ সালে হুইসেলব্লোয়ার অ্যাডওয়ার্ড জয়ী স্নোডেন এই মার্কিন ‘সার্ভেইল্যান্স' বা আড়ি পাতা সম্পর্কে নানা তথ্য ফাঁস করার পর মার্কিন কর্তৃপক্ষ তাদের কিছু কিছু নজরদারি প্রোগ্রাম কমিয়ে আনতে বাধ্য হয়৷ তবে টেক কোম্পানিরা যেমন এনক্রিপশন বাড়াচ্ছে, সেই অনুপাতে সরকারি তরফে তথ্য প্রদানের নির্দেশ বাড়তে পারে বলে পর্যবেক্ষকদের আশঙ্কা৷ ইয়াহুর আড়ি পাতার খবর ফাঁস হওয়ার পর স্নোডেনের টুইটটি অনুধাবনযোগ্য৷
বারাক ওবামা বার্লিনে সাংবাদিকদের বলেন যে, এনএসএ সাধারণ মানুষের ই-মেল ঘেঁটে দেখছে না - এই ছিল ব্রিটিশ ‘দ্য গার্ডিয়ান' পত্রিকার খবর৷ মঙ্গলবারের তারিখে স্নোডেনের টুইট: ‘কেউ কি প্রেসিডেন্টকে আজকের খবরটা পড়ে দেখতে বলেতে পারেন?'
এসি/এসিবি (রয়টার্স, এপি)