সবচেয়ে মিষ্টি রাজপুত্তুর বা রাজকন্যা কে?
প্রিন্স উইলিয়াম আর কেটের তৃতীয় সন্তান পৃথিবীর মুখ দেখেছে – সেই সঙ্গে নিজের মুখও দেখিয়েছে! হাজার হোক রাজপরিবারের সন্তান৷ তবে সব রাজা-রাজড়া কিংবা রানিরাও তো এককালে কচিই ছিলেন...৷
‘ইটস এ বয়!’
মা’র কোলে ক্লিনিক থেকে বেরিয়েই রাজকীয় খোকন দেখে না দেখবে কী করে, তার চোখই তো ভালোমতো খোলেনি৷ তবে বাবা উইলিয়াম পাশে দাঁড়িয়ে পাপারাৎসিদের দিকে হাত নাড়ছেন, মা’র মুখে গর্বের হাসি৷ ২৩শে এপ্রিল বেলা এগারোটা বেজে এক মিনিটে ইংল্যান্ডের রাজপরিবারে এই সর্বাধুনিক সংযোজন – সেন্ট জর্জের দিনে, যাঁর ক্রুশ চিহ্ন ইংল্যান্ডের পতাকায় আঁকা আছে৷
ঠিক বাবার মতো?
কার মতো দেখতে, সে পরের কথা, বেচারার নামই এখনও ঠিক হয়নি অথবা জানানো হয়নি৷ রাজপুত্তুর হওয়ার ফ্যাকড়াও তো কম নয়: কোনো হালফ্যাশনের নাম হলে চলবে না৷ বাজি ধরা হচ্ছে নতুন প্রিন্সের নাম হবে আর্থার, হেনরি কিংবা ফিলিপ৷
পরম্পরা
দাদু প্রিন্স চার্লস আর বাবা প্রিন্স উইলিয়ামের পর যার রাজা হওয়ার কথা, তিনি হলেন জর্জ আলেক্সান্ডার লুইস ওরফে প্রিন্স জর্জ, কেট আর উইলিয়ামের প্রথম সন্তান৷ প্রিন্স জর্জের জন্ম ২০১৩ সালের ২২শে জুলাই৷ তার বছর দু’য়েক পরে, ২০১৫ সালের দোসরা মে জন্ম নেয় জর্জের ছোটবোন আর নবজাতকের বড় বোন রাজকন্যা শার্লট৷
চার নম্বর
প্রিন্স জর্জের পরেই সিংহাসনে চড়ার অধিকার রাজকন্যা শার্লটের৷ শার্লটের পুরো নাম আবার শার্লট এলিজাবেথ ডায়ানা – অর্থাৎ প্রপিতামহী রানি এলিজাবেথ আর পিতামহী প্রিন্সেস ডায়ানার নামও বহণ করছে শার্লট৷ ওপরের ছবিটি তার বছর খানেক বয়সের৷
মায়ের কোলে রানি এলিজাবেথ
তখনও তাঁর রানি হতে অনেক বাকি৷ মা তখন ডাচেস অফ ইয়র্ক, বাবা ভবিষ্যতের রাজা ষষ্ঠ জর্জ৷ এলিজাবেথের জন্ম সিজারিয়ান করে, ১৯২৬ সালের ২১শে এপ্রিল তারিখে৷ বড় হয়েছেন চার বছরের ছোট বোন মার্গারেটের সঙ্গে – যিনি ২০০২ সালে পরলোকগমন করেন৷ রানি এলিজাবেথের বয়স এখন ৯২৷
কে, বলুন তো?
প্রিন্স ফিলিপ, রানি এলিজাবেথের সুযোগ্য প্রিন্স কনসর্ট৷ জন্ম ১৯২১ সালের ১০ই জুন তারিখে৷ পঁচিশ বছর পরে ডিউক অফ এডিনবরা হিসেবে প্রিন্স ফিলিপ রাজকন্যা এলিজাবেথের পানিগ্রহণ করেন৷ অবশ্য দু’জনের প্রথম দেখা ১৯৩৯ সালে, ফিলিপের বয়স যখন ১৮ আর এলিজাবেথের ১৩৷ ফিলিপ তখন নৌবাহিনীর অফিসার হবার মুখে৷ আজ তাঁর বয়স ৯৬৷
কান নিয়ে কানাঘুষো?
দুর্মুখরা বলে, কান দেখলেই নাকি চার্লস ফিলিপ আর্থার জর্জকে চেনা যায়৷ প্রিন্স চার্লসের জন্ম ১৯৪৮ সালের ১৪ই নভেম্বর৷ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ যখন সিংহাসনে আরোহণ করেন, তখন চার্লসের বয়স মাত্র চার বছর৷ রানি এলিজাবেথের পর তাঁরই রাজা হওয়ার কথা – কিন্তু কবে?
প্রিন্সেস ডায়ানা
ইংল্যান্ডবাসীদের ‘হৃদয়ের রানি’ লেডি ডাই, ডায়ানা স্পেন্সারের জন্ম ১৯৬১ সালের পয়লা জুলাই তারিখে৷ ১৯৮১ সালে প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে বিবাহের সময় ডায়ানার বয়স ছিল বিশ বছর; টেলিভিশনে বিশ্বের ৭৫ কোটি মানুষ দেখেছিলেন সেই বিবাহ অনুষ্ঠান – যদিও সে বিয়ে টেকেনি৷ ১৯৯৭ সালের ৩১শে আগস্ট প্যারিসে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান প্রিন্সেস ডায়ানা৷
হাসিটা যেন একই রয়ে গেছে
সে বয়সে প্রিন্স উইলিয়াম আর্থার ফিলিপ লুইস মাউন্টব্যাটেন-উইন্ডসরের মাথায় অবশ্য চুল কিছুটা বেশি ছিল৷ জন্ম লন্ডনে, ১৯৮২ সালের ২১শে জুন৷ বাবা-মা’র ছাড়াছাড়ি হয়ে যাবার পর উইলিয়াম ও তাঁর ভাই হ্যারি কিছুটা সময় লন্ডনের কেনসিংটন প্যালেসে মা’র কাছে কাটাতেন; বাকি সময়টা বাবা আর দাদী রানি এলিজাবেথের কাছে৷ দু’টি মাত্র দুধের দাঁতের সেই ছোট্ট খোকাটি আজ নিজেই তিন সন্তানের জনক৷
হ্যারিকেও যেন চেনা যায়...
১৯৮৪ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর তারিখে জন্ম নেন প্রিন্স হেনরি চার্লস অ্যালবার্ট ডেভিড মাউন্টব্যাটেন-উইন্ডসর বা প্রিন্স হ্যারি৷ আগামীতে তিনি বিয়ের বর৷ এছাড়া যে সাবেক মার্কিন অভিনেত্রী ও মডেল মেঘান মার্কলেকে হ্যারি বিয়ে করছেন, তিনি একজন ডিভোর্সি ও তাঁর মা একজন অ্যাফ্রো-অ্যামেরিকান৷ কাজেই এই বিয়ে ব্রিটেনের রাজকীয় ঐতিহ্যে আরো অনেক পরিবর্তনের আভাস দিচ্ছে৷