সত্তর পূর্ণ করছেন ‘বিগ বি’
১০ অক্টোবর ২০১২অমিতাভের সত্তর৷ ভারতে তথা বিশ্বের মিডিয়াতে এটা একটা বড় খবর৷ গুগল করেও দেখার দরকার নেই৷ পুরস্কার, সম্মান, সাফল্য সারা জীবন ধরে কুড়োচ্ছেন৷ তাঁকে নিয়ে নতুন করে আর কিই বা বলা যেতে পারে৷
হয়ত কিছু খুচরো, ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ৷ মৃণাল সেনের আশ্চর্য ছবি ‘ভুবন সোম'-এ প্রথম অমিতাভের গলা শোনা৷ ‘আনন্দ'-এ তৎকালীন সুপারস্টার রাজেশ খান্নার বিপরীতে সেই ‘বাবুমশাই', চমকে দেবার মতো সংযত অভিনয়৷
‘গুড্ডি'-তে জয়া ভাদুড়ির সঙ্গে পরিচয়, তিয়াত্তরে বিয়ে, যে হিসেবে অমিতাভকে বাংলার জামাই বলা চলতে পারে! তার মধ্যেই - ১৯৭২ - ‘বম্বে টু গোয়া'-র ঢ্যাঙা, ল্যাগব্যাগে হিরো৷ তার পরেই, পঁচাত্তরে, ‘দিওয়ার' এবং ‘শোলে'৷ অর্থাৎ ‘মেরা পাস মা হ্যায়' কিংবা ‘ও তো খালি ড্রামা করতা হ্যায়'-এর মতো সংলাপ৷ ‘শোলে'-তে বিধবার ভূমিকায় জয়া ভাদুড়ির সঙ্গে অমিতাভের সেই অধরা প্রেম কি শুধু বাঙালিদেরই মুগ্ধ করেছে?
আবার অমিতাভ মানেই হৈ-হুজ্জুতি, নাচ-গান, মারকাটারি দাঙ্গা-হাঙ্গামা৷ ‘অমর-আকবর-অ্যান্টনি'-র ‘মাই নেম ইজ অ্যান্টনি গনসালভেস' আর তার সঙ্গে ছাতা হাতে নাচ আজও মনে পড়ে৷ আরও মনে পড়ে, অমিতাভ এমনই একজন অভিনেতা যে, পাশে জয়া থেকে রাখি, রাখি থেকে রেখা অথাবা জীনত আমান, যেই থাকুন, কখনো বেমানান মনে হয়নি৷
তবে অমিতাভের সবচেয়ে বড় সম্পদ যে তাঁর কণ্ঠ - এমনকি প্লেব্যাক গানেও! - সেটা তাঁর অতি বড় শত্রুরাও স্বীকার করবে৷ সেই কণ্ঠও একটি বিশেষ সম্মান পেয়েছে: সত্যাজিৎ রায় তাঁর ১৯৭৭ সালে করা একমাত্র হিন্দি ছবি ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি'-র ন্যারেটর বা নেপথ্য কথক হিসেবে অমিতাভকেই বেছে নেন৷
মিলেনিয়ামের পর বিগ বি'র কথা নতুন করে বলার কিছু নেই৷ কখনও ‘কন বনেগা ক্রোড়পতি', আবার কখনও ‘পা'-এর মতো ছবি - অমিতাভ সর্বোত্রই তাক লাগিয়েছেন৷ এরপরও অনেকের কিন্তু আজও মনে হয়, বলিউড সাম্রাজ্যের ভিত গড়ে দিতে গিয়ে অমিতাভকে একটা সম্পূর্ণ অন্য ধরণের ক্যারিয়ারের স্বপ্ন কিংবা সম্ভাবনা ছাড়তে হয়েছে৷ বিগ বি'র মধ্যে যে অতি উচ্চদরের একজন অভিনেতা ছিল, তাঁকে সেই ধরণের চিত্রনাট্য, নায়িকা এবং পরিচালক দিয়ে কোনো চিরন্তনী ক্ল্যাসিক ছবিতে ধরে রাখতে পারলে যেন বড় ভালো হতো৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ