বিভক্ত মিশর
১ ডিসেম্বর ২০১২সংবিধানের উপর গণভোট হতে পারে আগামী দুসপ্তাহের মধ্যেই৷
মুসলিম ব্রাদারহুড এর সমর্থন নিয়ে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ গণবিক্ষোভে রূপ নেয় গত ২২শে নভেম্বর তাঁর ঘোষিত বিশেষ আদেশের প্রেক্ষিতে৷ কারণ উদারপন্থী বিরোধী দলগুলো মনে করছে এই আদেশের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা শুধুমাত্র প্রেসিডেন্টের হাতেই ন্যস্ত করা হচ্ছে৷ তবে কয়েকদিন বিক্ষোভ চলার পর সেই আন্দোলনের সাথে যোগ হয়েছে তড়িঘড়ি করে সংবিধানের খসড়া তৈরির আলোচনা৷
একদিন আগে ইসলামপন্থীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সংসদে সংবিধানের খসড়ার উপর ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ বিরোধীদলগুলো এই ভোটাভুটির অধিবেশন বর্জন করেছে৷ তাদের অভিযোগ, এই সংবিধান ত্রুটিপূর্ণ এবং অসম্পন্ন৷ এছাড়া এই সংবিধানে ইসলামপন্থীদের চাপিয়ে দেওয়া একপেশে বিধান রাখা হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে বিরোধী দলগুলো রাজধানী কায়রোর তাহরির চত্বরে মিছিল সমাবেশ করছে৷ তবে পিছিয়ে নেই মুরসির সমর্থক মুসলিম ব্রাদারহুড এর রাজনৈতিক শাখা ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি এবং সমমনা ইসলামি দলগুলো৷ তারাও তাহরির চত্বরে সমাবেশ করার পরিকল্পনা করলেও বিরোধীদের সাথে সংঘাত এড়াতে তারা আল নাদা চত্বরে সমাবেশ করেছে৷
মুরসির সমর্থনে হাজার হাজার নারী-পুরুষ ব্যানার ও পোস্টার হাতে এবং স্লোগান দিতে দিতে সমাবেশে হাজির হয়৷ সেখানে তারা স্লোগান দিতে থাকে যে, মিশরের মানুষ স্রষ্টার বিধান চায় এবং বিপ্লব রক্ষায় আমরা মুরসির সাথে রয়েছি৷ এছাড়া তাদের হাতে সৌদি আরব ও মিশরের পতাকা এবং মুরসির ছবি সম্বলিত পোস্টার দেখা গেছে৷ মুরসির সমর্থকরা আলেক্সান্দ্রিয়া এবং আসিউত শহরেও মিছিল-সমাবেশ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে৷
এদিকে, সংসদে অনুমোদিত সংবিধানের খসড়া শনিবার প্রেসিডেন্ট মুরসির কাছে হস্তান্তরের কথা রয়েছে৷ এছাড়া এই খসড়ার নানা দিক বিবেচনা করতে রবিবার দেশটির সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালত শুনানি শুরু করার কথা রয়েছে৷ সব ঠিকঠাকভাবে সম্পন্ন হলে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই এই সংবিধান অনুমোদনে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে৷ তবে ইতিমধ্যে খসড়া সংবিধানের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো৷ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর মুখপাত্র জো স্টোর্ক শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘মৌলিক অধিকারসমূহের ব্যাপারে সুস্পষ্ট বিধান ছাড়াই তাড়াহুড়োর মধ্য দিয়ে তৈরি সংবিধান নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হবে৷''
এএইচ / আরআই (ডিপিএ, এপি, রয়টার্স)