ড. ইউনূসের ৬ মাসের কারাদণ্ড, আপিলের শর্তে জামিন
১ জানুয়ারি ২০২৪ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা তার জামিন মঞ্জুর করেন৷
এর আগে, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের তিন শীর্ষ কর্মকর্তাকে শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় ছয় মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত৷ এছাড়া তাদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়৷
গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূস এবং শীর্ষ কর্মকর্তা আশরাফুল হাসান, নুরজাহান বেগম ও মোহাম্মদ শাহজাহানের নামে এই মামলা করা হয়৷
রায় ঘোষণার আগে দুপুর পৌনে ২টার দিকে ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে পৌঁছান ড. ইউনূস৷
যে দোষ করিনি, সেই দোষের শাস্তি পেলাম: ড. ইউনূস
প্রফেসর ইউনূস ডয়চে ভেলের আরাফাতুল ইসলামকে বলেন, “আমি আমার সাধ্যমত বাংলাদেশের জনগণ-এর সেবা করে যাব ও সামাজিক ব্যবসার আন্দোলনে কাজ করে যাব। আমার আইনজীবীরা আদালতে দৃঢ়ভাবে যুক্তি দেখিয়েছেন, আমার বিরুদ্ধে এই রায় সব আইনি নজির ও যুক্তির পরিপন্থী। আমি বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিককে অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পক্ষে এক কন্ঠে কথা বলার আহ্বান জানাই।”
রায়ের পর আদালত থেকে বেরিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘যে দোষ করিনি, সেই দোষের শাস্তি পেলাম৷ এটাকে ন্যায়বিচার যদি বলতে চান, তাহলে বলতে পারেন৷’’ তিনি আরো বলেন, ‘‘২০২৪ সালের প্রথম দিন আজকে। আমরা আজকে আদালতে এসেছিলাম রায় শোনার জন্য৷ এসে মনটা ভরে গেল, আমার বহু বন্ধু-বান্ধব এখানে পেয়ে গেলাম, যাদের সঙ্গে আমার বহুদিন দেখা হয়নি৷..এরা আজকে এসেছে, এই আনন্দের দিনে যে কী রায় হয় দেখার জন্য৷ আমার কী অবস্থা দাঁড়াবে৷ আমি কিন্তু খুবই খুশি তাদের দেখে৷ মনটা ভরে গেল৷ বহুদিন পরে যারা বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছে, ছুটিতে এসেছে৷ এক জায়গায় একত্র হওয়ার সুযোগ পেলাম আমরা৷’’
মামলার কার্যক্রম
গত ১৬ নভেম্বর এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করে৷ এর আগে, গত ৬ জুন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের চার সাক্ষীর জবানবন্দিও রেকর্ড করা হয়৷
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলাটি করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) এসএম আরিফুজ্জামান৷ মামলার নথি অনুসারে, আইএফইডি কর্মকর্তারা ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট ঢাকার মিরপুরে গ্রামীণ টেলিকমের অফিস পরিদর্শন করে শ্রম আইনের বেশকিছু লঙ্ঘন খুঁজে পান৷
সেই বছরের ১৯ আগস্ট গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির ৬৭ কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা ছিল, কিন্তু তা করা হয়নি৷ এছাড়া, কর্মচারীদের পার্টিসিপেশন ও কল্যাণ তহবিল এখনো গঠন করা হয়নি এবং কোম্পানির যে লভ্যাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা ছিল তার পাঁচ শতাংশও পরিশোধ করা হয়নি৷
এপিবি/এফএস (দ্য ডেইলি স্টার বাংলা)