শেয়ার বাজার
৫ মার্চ ২০১২২০১০ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে অস্থিরতা শুরু হয়৷ পুঁজি বাজার পরিনত হয় দরপতন আর বিক্ষোভের বাজারে৷ চলতি মাস পর্যন্ত গত এক বছর দুই মাসে মোট তিন দফা বড় ধ্বসে পুঁজি বাজারে শেয়ারের ৬০ শতাংশ দরপতন হয়৷ এতে প্রধানত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন৷ তাই পুঁজিবাজার চাঙ্গা করতে এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের রক্ষা করতে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সুদের ৫০ ভাগ মওকুফ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ অর্থ মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের যারা মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজ থেকে ঋণ নিয়ে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে লোকসান দিয়েছেন তারা এই সুদ মওকুফের সুবিধা পাবেন৷ আর বাকি সুদ তিন বছরে পরিশোধের সুযোগ দেয়া হয়েছে৷
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত জানান, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী হিসেবে তারাই বিবেচিত হবেন শেয়ার বাজারে যাদের বিনিয়োগ সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা৷ ক্ষুদ্র বিনিয়োগারীদের জন্য ২০১২ এবং ২০১৩ সালে যেসব নতুন শেয়ার বা পাবলিক ইস্যু বাজারে আসবে তাতে ২০ ভাগ কোটা থাকবে৷ এই কোটা সুবিধা ক্ষতিগ্রস্ত হননি এমন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরাও পাবেন৷ মুহিত আরও জানান, এই সিদ্ধান্ত সোমবার থেকেই কার্যকর হবে৷ রোববার দুপুরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রণোদনা প্যাকেজের ওই সভায় সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন৷ তবে সরকারের এই সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে৷ অনেকে মনে করেন সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সুবিধা পাচ্ছেন শুধু যাদের বিনিয়োগ সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা তারা৷
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ড. হেলাল উদ্দিন ডয়চে ভেলেকে বলেন, সরকার তার প্রতিশ্রুতি পুরণ করছে , যা ইতিবাচক৷ তবে ক্ষতিগ্রস্ত বড় বিনিয়োগকারীদের বিষয়টিও দেখা উচিত৷
এদিকে এই সিদ্ধান্তের পর রোববার অপরাহ্নে পুঁজি বাজারে কিছুটা হলেও তেজী ভাব ফিরে আসে৷ সূচক ২৩ পয়েন্ট বেড়ে ৪৫৭৭ পয়েন্টে দাড়ায়৷
প্রতিবেদন: হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম