শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের পথে যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ
২৬ জুলাই ২০১৮যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ মিলে বিশ্বের প্রায় ৫০ শতাংশ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে৷ ফলে গত কয়েক মাসে পরস্পরের ওপর নানা ধরনের শুল্ক আরোপের কারণে বিশ্বব্যাপী শঙ্কা দেখা দিয়েছিলো৷ বুধবার হোয়াইট হাউজে ট্রাম্প ও ইয়ুংকার বৈঠকের পর বাণিজ্য নিয়ে দুই পক্ষে চলা উত্তেজনা নিরসনের অঙ্গীকার করেন দুই নেতা৷
আলোচনার মূল সিদ্ধান্ত
বৈঠক শেষে যে কোনো ঘোষণা আসতে পারে, তার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না কেউ৷ অথচ বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদেরও অবাক করে দিয়ে একমত হওয়া মূল বিষয়গুলো জানান দুই নেতা৷
- যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ ‘শুল্কমুক্ত রপ্তানি, শুল্ক সংক্রান্ত সব বাধা দূর করা এবং গাড়ি ছাড়া অন্যান্য শিল্পপণ্যে ভর্তুকি বন্ধ' করার লক্ষ্যে কাজ করবে৷
- ইইউ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভাল পরিমাণ তরল প্রাকৃতিক গ্যাস কিনবে, বাড়াবে সয়াবিন আমদানিও৷
- উভয় পক্ষই নতুন করে কোনো শুল্ক বোঝা চাপানো থেকে বিরত থাকবে এবং আলোচনা চলাকালীন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর চাপানো শুল্ক ইইউ পুনর্বিবেচনা করবে৷
- যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ যৌথভাবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা- ডাব্লিউটিও পুনর্গঠনে কাজ করবে৷ ট্রাম্প শুরু থেকেই অ্যামেরিকার প্রতি বিমাতাসুলভ আচণের অভিযোগ তুলে আসছেন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিরুদ্ধে৷
এর আগে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির উপর শুল্ক চাপায় অ্যামেরিকা৷ ইউরোপও পিনাট বাটার, হুইস্কি ও মোটরসাইকেলের মতো কিছু পণ্যের উপর শুল্ক চাপিয়ে তার পালটা জবাব দেয়৷ এরপর গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানির উপরও শাস্তিমূলক শুল্ক চাপানোর হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প৷ এর ফলে জার্মানির মতো গাড়ি রপ্তানিকারক দেশের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছিলো৷
প্রতিক্রিয়া
জার্মানির অর্থমন্ত্রী পেটার আল্টমায়ার দুই নেতাকে স্বাগত জানিয়ে টুইট করেছেন৷ তিনি বলেন, এ বৈঠকের ফলে একটি বিশাল ‘বাণিজ্য যুদ্ধ' এড়ানো সম্ভব হয়েছে এবং ‘লাখ লাখ চাকরি' বাঁচানো সম্ভব হয়েছে৷
তবে এই বৈঠককে সতর্কতার সাথে স্বাগত জানিয়েছেন জার্মান চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড কমার্স- ডিআইএইচকের প্রেসিডেন্ট এরিক শোয়াইৎসার৷ গাড়ি আমদানিতে শুল্ক আরোপের হুমকি সংক্রান্ত জটিলতার এখনও সুনির্দিষ্ট সমাধান হয়নি বলে সবাইকে মনে করিয়ে দেন তিনি৷ সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘প্রস্তাবিত চুক্তি সঠিক পথেই এগুচ্ছে, কিন্তু অনেকক্ষেত্রে সন্দেহের অবকাশ এখনও রয়েই যাচ্ছে৷''
তবে মার্কিন রাজনীতিবিদদের পক্ষ থেকে মিলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া৷ কৃষির জন্য বিখ্যাত রাজ্য আইওয়ার রিপাবলিকান সিনেটর জনি আর্নস্ট ইইউয়ের সয়াবিন কেনার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে টুইট করেছেন৷
তবে এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত ‘অবাস্তব' বলছেন ইইউতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত অ্যান্থনি গার্ডনার৷ তিনি বলছেন, ইইউ কয়েকটি দেশের একটি সংস্থা, এর সয়াবিন বা গ্যাস কেনার সামর্থ্যই নেই৷
এডিকে/জেডএইচ (এপি, এএফপি, রয়টার্স)