শীতের শেষ, সাইকেলের শুরু...
জার্মানিতে সাইকেল নেই এমন ঘর বোধহয় হয়ইনা৷ ছেলে-মেয়ে, শিশু-বৃদ্ধ সবাই সময় এলে ঠিকই বেরিয়ে পড়েন সাইকেল নিয়ে৷ সেই সময়টা এসেছে আবার৷ শীত যাই যাই করে অবশেষে ‘চু-উ-উস’, মানে বিদায় বলেছে৷ সবাই বেরিয়ে পড়ছে সাইকেল নিয়ে৷
কোল থেকে নেমেই সাইকেলে....
জার্মানিতে অনেক শিশু হাঁটতে শেখেনি, কিন্তু সাইকেল চালানো শিখে বসে আছে৷ এ দেশে তো কোলের শিশু ভালো করে হাঁটা শুরুর আগেই মা-বাবার সঙ্গে বেরিয়ে পড়ে দু চাকার মিনি সাইকেল নিয়ে, সাইকেলে প্যাডেল মারা না শিখে উপায় আছে! শিশুদের বয়স ৮-৯ হলে তাদের স্কুলে চলে আসে পুলিশ৷ ভয় দেখাতে নয়, ‘বাইসাইকেল লাইসেন্স’ প্রদানের কর্মসূচিতে আনন্দ করতে করতে সাইকেল চালানোর পরীক্ষা নিতে আর রাস্তায় চলাফেরার নিয়ম শেখাতে৷
‘সাইকেলের রাজধানী’ ম্যুনস্টার
দেশের রাজধানী বার্লিন, কিন্তু জার্মানিতে সাইকেলের রাজধানী উত্তর-পশ্চিমের শহর ম্যুনস্টার৷ ম্যুনস্টার আসলে সাইকেল চালানোর স্বর্গরাজ্য৷ শহরে মানুষের চেয়ে সাইকেল বেশি৷ বেশ কিছু রাস্তায় একমাত্র বাহন সাইকেল৷ সম্প্রতি এক জরিপে জার্মানির সবচেয়ে বেশি সাইকেল-বান্ধব শহর নির্বাচিত হয়েছে ম্যুনস্টার৷ দ্বিতীয় হয়েছে কার্লসরুয়ে এবং তৃতীয় হয়েছে ফ্রাইবুর্গ৷ রাজধানী বার্লিন হয়েছে ত্রিশতম!
সব জায়গায় সাইকেল
জার্মানিতে এমন জায়গা পাওয়া দুষ্কর যেখানে সাইকেল চালিয়ে যাওয়া যাবেনা৷ সাইকেল চালানোর জন্য সারা দেশেই রয়েছে আলাদা রাস্তা৷ পাহাড় দেখতে যাবেন? নাকি গহীন বন? নাকি গ্রামের সবুজ প্রান্তর ডাকছে আপনাকে? কোনো সমস্যা নেই৷ আগে স্থির করুন কোথায় যেতে চান, তারপর ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়ুন সাইকেল নিয়ে...৷
পথে বাধা পথচারী!
সাইকেল চালানোর জন্য রয়েছে আলাদা রাস্তা৷ হাঁটার রাস্তাও আলাদা৷ তারপরও অনেকেই ভুল করে উঠে পড়েন সাইকেলের রাস্তায়৷ সাইকেল আরোহীদের অনেকে খুব চটে যান তখন৷ নিয়মিত যাঁরা সাইকেল চালান, তাঁরা অবশ্য বোঝেন এমন হতেই পারে, আর বোঝেন বলে মাথাটা ঠান্ডাই রাখেন৷
সাইকেল চালানোর পোশাক-আশাক
জার্মানিতে যাঁরা নিয়মিত সাইকেল চালান, তাঁরা কিন্তু সাইক্লিংয়ের বিশেষ পোশাক পরে নিতেও ভোলেন না৷ অনেক দূরে কোথাও যেতে চাইলে এবং স্বচ্ছন্দে সাইকেল চালাতে চাইলে যথোপযুক্ত পোশাকটা কিন্তু দরকারও!
মাতাল দূরে থাকো....
জার্মানিতে অ্যালকোহল পান করে গাড়ি তো চালানো যায়ইনা, এমনকি মাতাল হয়ে বাইসাইকেল চালানোও নিষেধ৷ সুতরাং, মাতাল সাবধান!
বড় সাইকেল ছোট করে নিন...
ট্রাম এবং ট্রেনেও সাইকেল তোলার ব্যবস্থা থাকে৷ তবে গরমের দিনে ভিড়ের মধ্যে ট্রাম বা ট্রেনে সাইকেল নিয়ে ঢুকে পড়লে কখনো কখনো বিব্রত হতে হয়৷ অনেকে বিরক্ত হয়ে তাকান৷ কেউ কেউ দু কথা শুনিয়ে দেয়ার সুযোগও ছাড়েননা৷ এ পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য অনেকেই কিনে নেন ‘ফোল্ডিং সাইকেল’৷ ট্রেন বা ট্রামে ওঠার আগে সাইকেলটা গুটিয়ে নিলেই হলো, কারো কিছু বলার সুযোগই থাকেনা তখন৷