শিশুদের অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াই
২৬ অক্টোবর ২০১৩গুয়াতেমালার সবচেয়ে বড় সমস্যা এখন ক্ষুধা৷ পামুমুস গুয়াতেমালার একটি পাহাড়ি গ্রাম৷ সেখানে এক থেকে চার বছর বয়সি ১১২টি শিশুর মধ্যে ৬৭ জনই ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছে৷ আর পাঁচ বছরের নীচে দু'জন শিশুর মধ্যে একজন মারাত্মক অপুষ্টির শিকার৷
স্থানীয় চিকিৎসক আরনুলফো আলভারেজ জানালেন, পামুমুসের বেশিরভাগ অধিবাসী কৃষক, যাঁরা গম, যব এবং শাক-সবজির চাষ করেন৷ কিন্তু এগুলো বেচে যে পরিমাণ অর্থ তাঁরা পান, তা দিয়ে তাঁদের সংসার চলে না৷ তাঁদের মাথাপিছু আয় দিনে আড়াই ইউরো৷ এ অর্থ দিয়ে পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, ভালোমতো খাবারই জোটে না তাঁদের৷
ডয়চে ভেলেকে তিনি জানান, এ সব শিশুরা যেসব খাবার খায় তাতে আমিষ, ভিটামিন আর খনিজ পদার্থের অভাব রয়েছে, যা তাদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে৷
বলা বাহুল্য, অপুষ্টি এখন গুয়াতেমালার সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ ২০১৫ সালের মধ্যে অপুষ্টির হার ১০ ভাগে নামিয়ে আনতে ‘জিরো হাঙ্গার প্যাক্ট' নামের একটি প্রস্তাবে গত বছর সই করেছেন প্রেসিডেন্ট অটো পেরেজ মলিনাইট৷ সেই লক্ষেই সম্প্রতি পামুমুস সফর করেছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট রোক্সানা বালদেটি৷ প্রকল্পের অংশ হিসেবে শিশুদের ভিটামিন এবং খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে৷ এমনকি, কৃষকদের বীজ দেয়া ও শিশুদের মায়ের দুধ খাওয়ানো এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে জোর দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ পঞ্চবার্ষিক এ পরিকল্পনার ব্যয় ধরা হয়েছে অন্তত চার কোটি ইউরো৷
সম্প্রতি গুয়াতেমালা সফরে গিয়ে ইউরোপিয়ান কমিশনার ফর ডেভেলপমেন্ট আন্ড্রিস পিয়েবাল্গস বলেছেন, আগামী সাত বছরে অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য গুয়াতেমালাসহ মধ্য আমেরিকার চারটি দেশকে ৭৭৫ মিলিয়ন ইউরো অর্থ সহায়তা দেয়া হবে৷
তবে অভিযোগ উঠেছে যে, আদিবাসী ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে, যেখানে খাদ্যাভাব বেশি, সেখানে পৌঁছাচ্ছেনা কোনো সহায়তা৷ সোলোলা গ্রামের আদিবাসীদের প্রতিনিধি আলব্যার্টো পানজোজ সিসাজৌ জানালেন, তাঁরা কখনো কোনো আন্তর্জাতিক সহায়তা পাননি৷ তাঁদের অভিযোগ, সরকার আদিবাসী ও দরিদ্র মানুষদের তুলে ধরে আন্তর্জাতিক সহায়তা চায়, কিন্তু তাঁরা সেই অর্থ শেষ পর্যন্ত পান না৷