1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিকারের বদলে ফলের চাষ

২৪ মার্চ ২০১৭

অনেক সময় জঙ্গলে যারা বাস করেন, তাদের পেশা বদলালেই জঙ্গল ও জঙ্গলের জীবজন্তুদের বাঁচানো যায়৷ যেমন শিকারির পরিবর্তে ফলচাষি বা স্কুটারট্যাক্সি চালক – যা ঘটেছে আফ্রিকার ক্যামেরুনের একটি গ্রামে৷

https://p.dw.com/p/2ZqtE
Buschfleisch Afrika Kinder Jagd Fleisch
ছবি: Getty Images

বহু শতাব্দী ধরে মানুষ এই জঙ্গলে বাস করছে, জীবজন্তু শিকার করছে৷ কিন্তু ইতিমধ্যে বহু প্রজাতি বিপন্ন হয়ে পড়ায় প্রকৃতি সংরক্ষণের দাবি জোরালো হয়েছে৷

ন্যাশনাল পার্কের ফরেস্ট রেঞ্জারদের সঙ্গে আজকাল একটি এনজিও-র কর্মীরাও থাকেন৷ বিভিন্ন প্রজাতির সংখ্যা কীভাবে কমছে, সেটা তারা ক্যামেরা ট্র্যাপ বসিয়ে যাচাই করতে চান৷

বিশেষ করে শিম্পাঞ্জি ও ড্রিল বা ম্যান্ড্রিল বানর প্রজাতি দু'টি বিপন্ন৷ শিম্পাঞ্জি আর ড্রিল বানরদের শিকার করা হয় তাদের মাংসের জন্য৷ তাদের জীবন্তও বিক্রি করা হয়ে থাকে৷

জাতীয় উদ্যানের প্রধান এসেছেন এরাট গ্রামে৷ দু'বছর আগেও তাঁকে এভাবে স্বাগত জানানো হতো না৷ কিন্তু গ্রামবাসী আর রেঞ্জাররা এখন একসঙ্গে কাজ করেন৷ গ্রামবাসীরা পার্কের নিয়ম মেনে চলেন; পরিবর্তে তারা সৌরশক্তির মতো বাস্তব সুযোগ-সুবিধা পান৷

গ্রামের মোড়লের ভাই ডানিয়েল আগুনস বললেন, ‘‘এবার সংরক্ষণ প্রচেষ্টার কেন্দ্রে রয়েছে স্থানীয় মানুষ৷ এই প্রথম প্রতিটি পর্যায়ে আমাদের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়েছে৷ আমরা বুঝতে পেরেছি যে, জাতীয় উদ্যানের বাইরে আমাদের জীবিকা অর্জনের পন্থা আছে৷''

শিকারের বিকল্প

রেঞ্জার আর গ্রামবাসীরা মিলে স্থায়ী এলাকা নির্দেশ করে সেখানে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছেন৷ সংরক্ষিত অরণ্য কোথায় শেষ হচ্ছে, তা স্পষ্ট বলে দেওয়া হচ্ছে৷ কোথা থেকে গ্রামবাসীদের জঙ্গল শুরু হচ্ছে, যেখানে তারা কাঠ কাটতে পারেন, কোথায় তারা চাষ করতে পারেন, সবই বলে দেওয়া হয়েছে৷

সাবেক শিকারি জন একপো যেমনটা করেছেন৷ বয়স ষাট ছুঁই ছুঁই, শিকার করাটা ক্রমেই আরো শক্ত হয়ে উঠছিল৷ এখন তিনি কোকো, কলা আর আমের চাষ করেন৷ প্রকৃতি সংরক্ষণকারীরা জানতে চান, তারা কিভাবে অন্য শিকারিদেরও জন একপোর পন্থা অনুসরণ করতে অনুপ্রাণিত করতে পারেন৷ একপোর পরিবার এখন আগের চেয়ে ভালো আছে৷ একপো জানালেন, ‘‘আমি কোকো চাষ থেকে বছরে এক লাখ ফ্রঁ রোজগার করি, কিন্তু চাইলে তার বেশিও রোজগার করতে পারি – কেননা, কাজটা খুব সোজা৷ ফসল তোলাও বেশ সোজা৷ কোকো বিনগুলোকে ভেঙে কোকোর বিচিগুলোকে রোদ্দুরে শুকিয়ে বিক্রি করলেই হলো৷ আগে শিকার করতে এর চেয়ে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হতো৷''

শিকারিদের দিনের পর দিন, রাতের পর রাত জঙ্গলে কাটাতে হয় – সেটাও বিপজ্জনক৷ তাহলে সকলে কৃষিকাজে আসেন না কেন?

দক্ষিণ-পশ্চিম ক্যামেরুন এলাকার ‘প্রাকৃতিক সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা' প্রকল্পের উপদেষ্টা ফ্রাংক স্টেনমান্স বললেন, ‘‘টাকার জরুরি প্রয়োজন থাকলে, লোকে শিকারে যায়, কেননা, কোকো চাষে সময় লাগে৷ গাছ পুঁততে হয়৷ কোকো গাছের সঙ্গে অন্যান্য ফলের গাছ লাগানো যায়৷ তা থেকে রোজগার হতে চার বছর লেগে যায়....সে অনেকটা সময়৷''

বন্দুকের বদলে মোটর সাইকেল

পৌরভবনে গুরুগম্ভীর আবহাওয়া: গাঁয়ের মোড়ল শিকার নিষিদ্ধ করছেন৷ বিভিন্ন পরিবারের কর্তাব্যক্তিদের তাতে আপত্তি নেই৷ দশজন শিকারি প্রকৃতি সংরক্ষণকারীদের কাছে তাদের বন্দুক জমা দিলেন – এটা শুধু প্রতীকী নয় বলে আশা করছেন পার্কের রেঞ্জাররা৷

পরিবর্তে গ্রামকে দশটি মোটর সাইকেল দেওয়া হচ্ছে৷ প্রথম কয়েকজনকে মোটর সাইকেল চালানো শেখানো হচ্ছে৷ এরা ছিলেন শিকারি, এখন তারা ট্যাক্সি চালক অথবা কুরিয়ার হিসেবে পয়সা রোজগার করতে পারবেন৷

সেটা সম্ভব, কেননা, বছর খানেক হলো জঙ্গলের ভিতর দিয়ে একটি ছোট রাস্তা তৈরি হয়েছে৷ এর ফলে এরাট গ্রাম আজ বহির্জগতের সঙ্গে যুক্ত৷ রাস্তা তৈরি হবার আগে পায়ে হেঁটে পরের গ্রামে পৌঁছাতে ছয় ঘণ্টা সময় লেগে যেতো৷ বর্ষার সময় নদী ভরা থাকলে পৌঁছানোই যেত না৷ কাজেই আগামী এপ্রিলের মধ্যেই ব্রিজটা শেষ হতে হবে৷ স্টেনমান্স বললেন, ‘‘বাজারে যেতে পারা, অথবা অন্যান্য পরিষেবা নিতে পারাটা গ্রামবাসীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ এভাবে তারা কেনাকাটা করতে পারেন, ছোটরা আরো সহজে স্কুলে যেতে পারে, ডাক্তারের কাছে যাওয়া সহজ হয়৷ এরকম নানা সুবিধে৷''

অবশ্য জন একপো'র আশা, রাস্তাটা ছোটই থাকবে৷ নয়ত ঐ রাস্তা ধরে চোরাই কাঠ পাচার হয়ে জঙ্গলের সর্বনাশ হয়ে যেতে পারে৷ কিন্তু পন্থাই বা আর কী!

গ্রিট হফমান/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান