এবার শামীম ওসমান
২৪ মে ২০১৪নারায়ণগঞ্জের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম এবং আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাত জনকে অপহরণ এবং হত্যার ঘটনায় ব়্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতারের পর এখন দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে৷ তবে তদন্তকারীরা বলছেন, প্রধান আসামি নূর হোসেনকে গ্রেফতার করতে না পারায় অনেক তথ্যেরই সত্যতা যাচাই করা যাচ্ছে না৷ আর এটা এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে যে নূর হোসেন দেশের বাইরে পালিয়ে গেছেন৷
আগে অবশ্য অভিযোগ উঠেছিল, ঘটনা ধামাচাপ দিতে ব়্যাব সদস্যরাই নূর হোসেনকে দেশের বাইরে পালাতে সহায়তা করেছে৷ তবে এবার অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে শাসক দল আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে৷ অপহরণ এবং হত্যাকাণ্ডের পর শামীম ওসমানের সঙ্গে নূর হোসেনের ফোনালাপ সংবাদ মাধ্যমেও প্রকাশ হয়েছে৷ শামীম ওসমান ফোনালাপের বিষয়টি স্বীকার করে দাবি করেছেন, তাঁর ফোনালাপের খণ্ডিত অংশ প্রকাশ করা হয়েছে৷ তিনি নূর হোসেনকে আত্মসমর্পণের পরামর্শ দিয়েছিলেন৷
এদিকে নিহত ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুলের শ্বশুর শহিদুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শামীম ওসমানকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে৷ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে নূর হোসেনেরে পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে৷''
তবে তিনি দাবি করেন, ‘‘নূর হোসেনকে শেষ পর্যন্ত পালিয়ে যেতে ব়্যাবই সহায়তা করেছে৷ তাকে ব়্যাবের নামে এখনো হুমকি দেয়া হচ্ছে৷''
তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘সরকারের কোন গোয়েন্দা সংস্থা ফোনালাপ রেকর্ড করেছে৷ আর তখন তারা নূর হোসেনের অবস্থান জানতেন৷ তাহলে তখন তাকে কেন গ্রেফতার করা হয়নি?''
শহিদুল বলেন, ‘‘আমি এখনই শামীম ওসমানের গ্রেফতার দাবি করছি না৷ তবে জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর সংশ্লিষ্টতা স্পষ্ট হলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হোক৷''
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মহিদ উদ্দিন আহমেদ ডয়চে ভেলের কাছে দাবি করেছেন, ‘‘নূর হোসেন যদি দেশের বাইরে পালিয়ে গিয়ে থাকে তাহলে অবৈধভাবে গিয়েছে৷ আমরা নিশ্চিত যে সে বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দেশের বাইরে যায়নি৷''
শামীম ওসমানকে গ্রেফতার বা জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কী না - এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘তদন্তের প্রয়োজনে যে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে৷ কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাকে গ্রেফতারের বাইরে রাখা হবে না৷''
এদিকে নারায়ণগঞ্জের সন্ত্রাস বিরোধী ‘ত্বকী মঞ্চ' এক বিবৃতিতে শামীম ওসমানকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে৷ মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি এবং সদস্য সচিব হালিম আজাদ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘সংবাদ মাধ্যমে শামীম ওসমান এবং নূর হোসেনের ফোনালাপ প্রকাশ হওয়ার পর এটা স্পষ্ট যে নারায়ণগঞ্জের সাতজনকে অপহরণ এবং হত্যার ঘটনায় শামীম ওসমানের হাত আছে৷ তাঁকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মূল ঘটনা জানা যাবে৷''
তারা বলেন, ‘‘সাতখুনের প্রধান আসামি নূর হোসেন শামীম ওসমানেরই সৃষ্টি৷ অথচ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এখনো তাঁর ব্যাপারে নিরব আছে যা দুঃখজনক৷''
উল্লেখ্য, নূর হোসেনকে গ্রেফতারে ইতোমধ্যে ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হয়েছে৷