‘শান্তি না আসলে জাতিসংঘের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে না’
২৯ আগস্ট ২০১১জার্মানির রাজধানী বার্লিনে অনুষ্ঠিত বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে যোগ দিতে আসেন বাংলাদেশের এই কূটনীতিক৷ তাঁকে প্রশ্ন করেছিলাম এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য নিয়ে৷ জবাবে তিনি বলেন, গোটা বিশ্বে এখন নানা ধরণের সংকট চলছে৷ অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি বেকারত্বও বেড়ে চলেছে৷ কিন্তু বড় দেশগুলো যেন এই নিয়ে তেমন কোন গা করছে না৷ এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন এবং সুশীল সমাজ এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে৷ তাদের উদ্দেশ্য বর্তমান সংকট কাটিয়ে উঠে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা৷
সম্মেলনের একটি প্যানেল আলোচনায় বক্তব্য রাখেন ড. আবদুল মোমেন৷ সেই আলোচনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, বর্তমান সংকটগুলোর কোন জবাব যেন কেউ দিতে পারছে না৷ প্রবৃদ্ধি বাড়লেই সংকট কাটবে, এমন ধারণা যেন এখন অকেজো হয়ে গেছে৷ এই অবস্থায় আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী একটি নতুন মডেল নিয়ে এসেছেন৷ সেটি হচ্ছে জনগণকে সম্পৃক্ত করে একটি টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা৷ কেবল প্রবৃদ্ধি বাড়লেই হবে না, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রান্তিক পর্যায়ের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে একটি সার্বিক উদ্যোগ নিতে হবে৷ যেসব দেশে শান্তি নেই সেসব দেশে জাতিসংঘের মিলেনিয়াম উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এমডিজি বাস্তবায়িত হবে না৷ আমাদের দেশে নানা সমস্যা থাকা সত্ত্বেও শান্তি রয়েছে, তাই বাংলাদেশ এমডিজি পুরণের পথে রয়েছে৷
এর উদাহরণ হিসেবে জাতিসংঘের বাংলাদেশের প্রতিনিধি বলেন, জাতিসংঘের ৬০টি লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে৷ প্রথমেই আসবে দারিদ্র দূরীকরণ৷ এটার লক্ষ্য আমরা পুরণ করতে পারিনি, তবে আমাদের দেশে ৫৯ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে ছিল এখন সেটা ৩২ শতাংশে নেমে এসেছে৷ এরপর আসছে শিক্ষার ব্যাপার৷ আমাদের প্রাথমিক শিক্ষায় অংশগ্রহণের মাত্রা প্রায় ৯৯ শতাংশ, এই বছর আশা করছি সেটা ১০০ ভাগে উন্নীত হবে৷ এদিক থেকে আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কার পরেই রয়েছি৷ লিঙ্গ বৈষম্য দূর করার বেলায় আমরা এগিয়েছি৷ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছেলে ও মেয়ের হার এখন ৪৯-৫১ শতাংশ৷ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই হার ৪৭-৫৩ শতাংশে৷ নবজাতক মৃত্যুর হার আমরা শতকরা ৬৭ ভাগ কমিয়ে ফেলেছি৷ এজন্য গত বছর আমরা জাতিসংঘের কাছ থেকে স্বীকৃতিও পেয়েছি৷ এরপর রয়েছে মাতৃমৃত্যুর হার কমানো৷ এখন পর্যন্ত আমরা শতকরা ৪৫ ভাগ মৃত্যুর হার কমিয়েছি৷ তবে উন্নত চিকিৎসার সুবিধা এখনও আমরা পুরোপুরি চালু করতে পারিনি৷ তবে সরকার ইতিমধ্যে সারা দেশে ক্লিনিক চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: জাহিদুল হক