শরণার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ পোল্যান্ডের সেনার
২৬ অক্টোবর ২০২১বেলারুশ সীমান্তে শরণার্থীদের ঠেকাতে সেনার সংখ্যা প্রচুর বাড়িয়েছে পোল্যান্ড। মোট ছয় হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই সেনার সংখ্যা দশ হাজার করা হবে বলে পোল্যান্ড জানিয়েছে।
বেলারুশ থেকে হাজার হাজার শরণার্থী ইউরোপে ঢুকতে চাইছে। তারা প্রথমে পোল্যান্ড হয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেতে চায়। কিন্তু পোল্যান্ড এই শরণার্থী স্রোত আটকাতে চায়।
পোল্যান্ডের সীমান্তরক্ষীদের জারি করা একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ৬০ জন শরণার্থীদের একটি দল সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার উপর গাছের ডাল দিয়ে আঘাত করছে। তারপর সেনা সেখানে গেলে শরণার্থীরা তাদের উপর পাথর ছোড়ে, গাছের ডালের বাড়িও মারে। তাতেই দুই ,সেনা আহত হয়েছেন। তবে আঘাত খুব গুরুতর নয়।
বেলারুশের সীমান্তে আছে ইউরোপের তিনটি দেশ-- লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া ও পোল্যান্ড। তিনটি দেশই এখন নতুন করে শরণার্থীদের চাপে পড়েছে। বেলারুশ সরকারের নীতি হলো, তারা শরণার্থীদের নিয়ে সোজা সীমান্তে ছেড়ে দেয়। তাদের সীমান্ত পার করে প্রতিবেশী দেশে ঢোকার জন্য উৎসাহ দেয়।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নেতাদের মতে, ইইউ বেলারুশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তার পাল্টা হিসাবে প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো এই কৌশল নিয়েছেন।
পোল্যান্ডের সরকারি সংবাদসংস্থা পিএপি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ইউরোপের বর্ডার পেট্রোল এজেন্সি ফ্রন্টেক্স-এর সঙ্গে তারা যোগযোগ রাখছে। ফ্রন্টেক্স যাতে বিমানের ব্যবস্থা করে সীমান্ত থেকে শরণার্থীদের তুলে নিয়ে নিজেদের দেশে পাঠাতে পারে, সেই অনুরোধ করা হয়েছে। এই শরণার্থীরা মূলত ইরাক, ইরান, সিরিয়ার মানুষ।
প্রবল শীতে জঙ্গলে
শীত পড়তে শুরু করেছে। এই অবস্থায় কিছু শরণার্থী রহস্যজনকভাবে মারা গেছেন। মানবাধিকারকর্মীরা দাবি করছেন, সীমান্তে কী হচ্ছে, তা নিয়ে পোল্যান্ডকে আরো স্বচ্ছ হতে হবে।
গত শনিবার নারীদের একটি গোষ্ঠী পোল্যান্ড সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। তাদের মতে, সরকার অমানবিক কাজ করছে। মানবাধিকার কর্মীরাও বলছেন, বেলারুশ ও পোল্যান্ড সীমান্তে জঙ্গলের মধ্যে শরণার্থীদের ঠেলে দেয়া হচ্ছে। শরণার্থীদের মধ্যে অনেক বাচ্চা আছে। তারা এই ঠান্ডা সহ্য করতে পারবে না।
এত সেনা উপস্থিতি সত্ত্বেও গত দুই মাসে কয়েক হাজার শরণার্থী পোল্যান্ডে ঢুকেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, শরণার্থীরা তাদের দেশে ১২ হাজার পাউন্ড দালালদের দিয়েছে। তারা ইউরোপ, বিশেষ করে জার্মানিতে যেতে চায়।
জার্মান ফেডারেল পুলিশ জানিয়েছে, অক্টোবরেই চার হাজার দুইশ শরণার্থী তাদের দেশে ঢুকেছে।
জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, রয়টার্স)