লোকসংগীত সম্রাজ্ঞী জোয়ান বেইজ’এর ৭০ তম জন্ম বার্ষিকী
৬ জানুয়ারি ২০১১গীতিকার, সুরকার, গিটারবাদিকা ও গায়িকা, লোকসংগীত সম্রাজ্ঞী জোয়ান বেইজ'কে বলা হয় ষাট দশকের বিবেকী কণ্ঠস্বর৷ বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, শান্তি ও মানবাধিকারের সপক্ষে আজও তিনি এক জোরালো কণ্ঠস্বর৷
জোয়ান বেইজ এর জন্ম ১৯৪১ সালে নিউ ইয়র্কে৷ বাবা ছিলেন মেক্সিকান বংশোদ্ভূত৷ পেশায় পদার্থবিদ৷ মা ছিলেন স্কটিশ৷ বাবা মায়ের সমাজ সচেতনতার প্রভাব পড়ে তাঁর উপর৷ ছোট বেলায় তাঁর শ্যামলা রঙের জন্য শেতাঙ্গ সহপাঠিরা দূরত্ব বজায় রেখে চলত৷ এই অভিজ্ঞতা তাঁর মনে দাগ কাটে গভীর ভাবে৷ লোকসংগীতের অন্যতম পুরোধা পিট সিগার ও অ্যাফ্রো-অ্যামেরিকান সংগীত তারকা হ্যারি বেলাফন্টের গভীর অনুরাগী ছিলেন তিনি৷ ১৯৫৬ সালে বাবা মায়ের কাছ থেকে উপহার পান তাঁর প্রথম গিটার৷ আর সে থেকেই শুরু হয় তাঁর সংগীত চর্চা৷ ১৯৫৯ সালে বিখ্যাত ‘নিউ পোর্ট ফোক ফেস্টিভেল' এ অংশ গ্রহণের সুযোগ পান জোয়ান৷ অসাধারণ সুরেলা কন্ঠের জন্য রাতারাতি ছড়িয়ে পড়ে তাঁর নাম৷ এর পরের বছর বের হয় তাঁর প্রথম অ্যালবাম ‘জোয়ান বেইজ'৷ গোল্ডেন স্ট্যাটাস পায় এই অ্যালবাম৷
৬১ সালে অ্যামেরিকার বিভিন্ন স্থানে কনসার্ট ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন জোয়ান৷ এই সময় তাঁর পরিচয় হয় পরবর্তীকালের প্রতিবাদী সংগীতের সম্রাট বব ডিলানের সাথে৷ তরুণ প্রতিভাবান ববের রচিত সমাজ সম্পৃক্ত সংগীত তাঁকে আকর্ষণ করে৷ তারা এক সঙ্গে গান পরিবেশন করেন বহু কনসার্টে এবং পরে ভালবাসার বন্ধনেও আবদ্ধ হোন৷
১৯৬৯ সালে ঘটে ঐতিহাসিক ‘উডস্টক ফেস্টিভ্যাল'৷ সেখানে অনেকের মত জোয়ান বেইজ'ও তাঁর সংগীতের মধ্য দিয়ে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ভিয়েৎনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে৷
৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে রচিত তাঁর ‘সং অফ বাংলাদেশ' গানে অসাধারণভাবে ফুটে উঠেছে বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নিধনযজ্ঞের ছবি, মূর্ত হয়েছে আক্রান্ত বাঙালির বেদনা, দুঃখ দুর্দশার ছবি৷
ছ'বার গ্র্যামিসহ আরো বহু সম্মাননায় ভুষিত হয়েছেন জোয়ান বেইজ৷ আজো দেশে দেশে কনসার্টে পরিবেশন করছেন বিভিন্ন আঙ্গিকের গান৷ গাইছেন শান্তি ও সাম্যের ললিত গীতি৷
প্রতিবেদন: মারুফ আহমদ
সম্পাদনা: আব্দুলাহ আল-ফারুক