লেবানন সীমান্তে হেজবোল্লাহ-ইসরায়েল সংঘর্ষ
২৮ জুলাই ২০২০ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে হেজবোল্লাহ জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে ইসরায়েলের সেনার তুমুল সংঘর্ষের কথা ঘোষণা করল নেতানিয়াহুর সরকার। যদিও হেজবোল্লাহ দাবি করেছে, এটি ইসরায়েলের চক্রান্ত। পুরো বিষয়টিই তাদের তৈরি করা।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে সেবা ফার্ম অঞ্চল দীর্ঘ দিন ধরেই বিতর্কের কেন্দ্রে। ১৯৮১ সালে ইসরায়েল এই অঞ্চল দখল করেছিল বলে লেবাননের কোনও কোনও সংগঠনের দাবি। সোমবার রাত থেকে সেখানেই লড়াই শুরু হয়। ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) দাবি ওই অঞ্চল দিয়ে লেবানন সীমান্ত পার করে ইসরায়েলে ঢোকার চেষ্টা করছিল বেশ কিছু শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত হেবোল্লাহ জঙ্গি। ওই অঞ্চলে সেনার কাঠামো লক্ষ্য করে আক্রমণ চালানো হচ্ছিল বলেও অভিযোগ। তা দেখেই আইডিএফ গুলি চালায়। পাল্টা গুলি চালায় জঙ্গিরাও। গুলির লড়াই এখনও চলছে বলে আইডিএফের তরফে জানানো হয়েছে। তবে ঘটনার বিস্তৃত রিপোর্ট দেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সবিস্তারে জানানো হবে বলে প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
ইসরায়েল প্রশাসন ওই অঞ্চলের নাগরিককে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। নোটিসে বলা হয়েছে, খুব প্রয়োজন না হলে কেউ যেন রাস্তায় না নামেন।
হেজবোল্লাহ অবশ্য ইসরায়েল দাবি সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, আইডিএফের সঙ্গে তাদের কোনও সংঘর্ষই হয়নি। তাদের কোনও কর্মী সীমান্ত পার করার চেষ্টাও চালায়নি। তবে সময় মতো ইসরায়েলকে যে 'উচিত শিক্ষা' দেওয়া হবে, সে বিষয়ে ফের একবার হুমকি দিয়েছে হেজবোল্লাহ। কিছুদিন আগেই ইসরায়েলের সেনার হাতে সিরিয়ায় এক হেজবোল্লাহ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছিল। তারপর থেকেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বদলার হুমকি দিয়ে রেখেছে হেজবোল্লাহ। হেজবোল্লাহর বক্তব্য, ওই হুমকি পাওয়ার পর থেকেই ইসরায়েল সীমান্তে হাই অ্যালার্ট জারি করে রেখেছে। সোমবারের ঘটনা তারই জের। হেজবোল্লাহর দাবি অতি দ্রুতই ইসরায়েল তাদের যোদ্ধাকে মারার জবাব পাবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, গোটা ঘটনার দিকে তিনি নজর রেখেছেন। তাঁর বক্তব্য, লেবাননের দিক থেকে হেজবোল্লাহ যদি কোনও রকম আক্রমণ চালায় তা হলে তার দায় হেজবোল্লাহ এবং লেবাননকে নিতে হবে। আইডিএফ সব রকম পরিস্থিতির জন্য তৈরি হয়ে আছে। প্রয়োজনে তারাও জবাব দেবে।
একই সঙ্গে নেতানিয়াহুর বক্তব্য, ''সিরিয়ার সীমান্ত দিয়ে ইরান যদি আমাদের ভূখণ্ডে জঙ্গি পাঠানোর চেষ্টা করে, তার ফলও ভালো হবে না। আইডিএফ সব রকম জবাব দেবে।''
লেবাননে জাতিসংঘের শান্তি বাহিনী রয়েছে। এই ঘটনার পরে তারা দুই পক্ষকেই শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে। তবে ইন্টারেনেট এই ঘটনা নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া অন্যরকম। অনেকেরই বক্তব্য, পুরো ঘটনাটিই তৈরি করা। দুই পক্ষই এই ঘটনাটিকে সামনে রেখে নিজেদের দেশের নাগরিকদের ক্ষমতা দেখাতে চাইছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এএফপি)