লিটল মিস পিরিয়ড: ঋতুস্রাব নিয়ে ট্যাবু ভাঙ্গার চেষ্টা
২২ ডিসেম্বর ২০১৯জাপানে ‘লিটল মিস পিরিয়ড’-এর যাত্রা শুরু অবশ্য কমিক চরিত্র হিসেবে৷ গোলাপি রঙের পানির ফোঁটার মতো দেখতে লাল ঠোঁট আর লাল প্যান্ট পরা এই চরিত্র নিয়ে একই নামে এবার চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছে ইয়শিমোতো কোগয়ো কোম্পানি লিমিটেড৷
চরিত্রটি দর্শকরা ইতিবাচকভাবেই নিয়েছেন৷ সিনেমাটিকে সহজ ভাষায় লিঙ্গ নিয়ে শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ভাবা হচ্ছে৷ যদিও কিছু নগরী থেকে সিনেমাটিকে সেই একই গৎবাঁধা কথা এবং নারীদের প্রতি সমাজের অমনযোগিতা দেখানো হয়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে৷
লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে জাপানের মতো উন্নত দেশেও নারীদের এখন অনেক ক্ষেত্র পুরুষদের তুলনায় পিছিয়ে থাকতে হয়৷
ওসাকা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক কাজুই মুতা বলেন, ‘‘এখনো এমন একটা বিষয় যেটা লুকিয়ে রাখা হয় এবং অনেক মানুষের এটা সম্পর্কে সঠিক ধারণাই নেই৷’’
‘‘যদিও আমি ওই কমিক চরিত্রটির শতভাগ প্রশংসা করতে পারছি না....তবে যদি এটা সমাজের সঙ্কোচ ভাঙতে এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি পদক্ষেপ হতে পরে তবে সেটা ভালো কিছুই হবে৷’’
এ মাসে তাইওয়ানে এবং জানুয়ারিতে হংকংয়ে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাবে৷ চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও সিনেমাটি প্রদর্শনীর বিষয়ে আলোচনা চলছে৷
এদিকে, এই সিনেমা মুক্তির আগে দিয়ে জাপানে ঋতুস্রাব নিয়ে এক দফা বির্তক হয়ে গেছে৷ দেশটির ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ‘দাইমারু' কয়েক সপ্তাহ আগে নারীকর্মীদের ঋতুস্রাবের দিনগুলোতে ‘পিরিয়ড ব্যাজ' পরার পরামর্শ দিয়েছিল, যাতে সহকর্মীরা বিশেষ দিনগুলোতে তার বিষয়ে একটু যত্নশীল থাকতে পারে৷
কিন্তু এটার মাধ্যমে নারীরা হেনেস্তার শিকার হতে পারেন এ আশঙ্কায় সমালোচনা শুরু হলে দাইমারু কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুনরায় বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেয়৷
ইতিহাস বলে, মধ্যযুগে জাপানে রজঃস্রাবের সময় নারীদের বাড়ি থেকে দূরে একটি কুঁড়েঘরে থাকতে হতো৷ তখন বিশ্বাস ছিল, মাসের নির্দিষ্ট ওই সময়টাতে নারীরা অপবিত্র থাকে৷
‘লিটল মিস পিরিয়ড' সিনেমা অকো নামের এক নারীকে ঘিরে৷ তিনি একটি প্রকাশনা সংস্থায় সম্পাদকের কাজ করেন এবং তার পুরুষ বস মাসের ওই দিনগুলোতে তাকে খুব সামান্য ছাড়ই দেন৷ অন্যদিকে, অকোর বিপত্নীক ছেলেবন্ধু একাই মেয়েকে বড় করছেন৷
সিনেমায় এক জায়গায় অকোকে বলতে শোনা যায়, ‘‘যদি পুরুষদের পিরিয়ড হতো, বছরে একবার হলেও৷’’
জাপানের নারীবাদীরা সিনেমাটি সব পুরুষের দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন৷
এসএনএল/এসিবি (রয়র্টাস)