লকডাউনে যুক্তরাজ্যে গৃহনিপীড়ন বেড়েছে
২৯ এপ্রিল ২০২০দেশটির পার্লামেন্টারি কমিটি থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ভয়াবহ এই তথ্য উঠে এসেছে৷ ওই প্রতিবেদনে লকডাউনের সময় গৃহনিপীড়ন বন্ধে জরুরি সরকারি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বানও জানানো হয়৷
বলা হয়, নির্যাতনের অভিযোগ জানাতে সুপারমার্কেট বা অন্যান্য দোকানে ‘সেফ স্পেস’-এর ব্যবস্থা করা উচিত৷ গৃহনির্যাতন বিষয়ে টেলিফোন ও অনলাইনে সেবার পরিধি বাড়াতে তহবিল সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷
‘কাউন্টিং ডেড উইম্যান প্রজেক্ট’-এর গবেষকরা জানান, যুক্তরাজ্যে লকডাউনের প্রথম তিন সপ্তাহে ১৪ জন নারী ও দুই শিশুকে খুন করা হয়েছে৷
গত ১১ বছরে এই প্রথম মাত্র তিন সপ্তাহে এত বেশি সংখ্যায় নারীকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হলো, সাধারণ গড়ের তুলনায় যা প্রায় দ্বিগুণ৷
লকডাউনের দ্বিতীয় সপ্তাহে ‘ন্যাশনাল ডমেস্টিক অ্যাবিউস’ হেল্পলাইনে ফোনের সংখ্যা ২৫ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল৷ তৃতীয় সপ্তাহে তা ৪৯ শতাংশ বেড়ে যায়৷
এই সময়ে অনেক পুরুষও গৃহনিপীড়নের শিকার হওয়ার অভিযোগ জানাতে ফোন করেছেন৷ লকডাউনের প্রথম সপ্তাহে পুরুষদের অভিযোগের সংখ্যা ৩৫ শতাংশ বেড়েছে৷
প্রতিবেদনে গৃহনির্যাতন বন্ধে যেসব ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো: সচেতনতা বাড়ানো, প্রতিরোধ ব্যবস্থা, নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিকে সমর্থন, তার থাকার ব্যবস্থা করা এবং আইনি সহায়তা দেওয়া৷
গৃহনিপীড়নের শিকার অনেকেই ফোন ব্যবহার করার সুযোগ পান না৷ ফলে তাদের পক্ষে হেল্পলাইনে সাহায্য চাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে৷ তাদের জন্য সুপারমার্কেট বা ওষুধের দোকানে ‘সেফ স্পেস’ তৈরির পরামর্শও দেওয়া হয়েছে৷
পার্লামেন্টারি কমিটির প্রধান ইভেট কুপার বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণের বিস্তার রোধে বাড়িতে থাকাটা জরুরি৷ কিন্তু কারো কারো জন্য বাড়ি মোটেও নিরাপদ জায়গা নয়৷ তাদের সুরক্ষার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে৷
‘‘বিশেষ করে বাড়িতে ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের জন্য এটা খুব কঠিন সময়৷ আমরা তাদের এই সংকটের মাঝে ছেড়ে যেতে পারি না৷ কারণ গৃহনিপীড়নের কারণে তাদের মধ্যে যে মানসিক, শারীরিক ও সামাজিক আতঙ্ক তৈরি হয় তা তাদের সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হয়৷’’
এসএনএল/জেডএইচ (বিবিসি)
২০১৮ সালের ৪ ডিসেম্বরের ছবিঘরটি দেখুন...