1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোহিঙ্গা নিবন্ধনে নেই আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭

নির্যাতনের মুখে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করছে বাংলাদেশ৷ এই প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘ বা আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থার অংশগ্রহণ বা অনুমোদন নেই৷ 

https://p.dw.com/p/2kZXU
ছবি: DW/M. Mostqfigur Rahman

১১ই সেপ্টেম্বর থেকে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন শুরু হয়৷ আর শুক্রবার পর্যন্ত ১১ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে নিবন্ধনের আওতায় আনতে পেরেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন৷ তারা প্রাথমিক পর্যায়ে ২৫শে আগস্ট থেকে আসা সাড়ে চার লাখ রোহিঙ্গাকে নিবন্ধনের আওতায় আনবে৷ তবে এই কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কক্সবাজারের প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেট একেএম লুৎফর রাহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘এর আগে আসা চার লাখ রোহিঙ্গাকেও নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে৷ আমরা এখনো কাজে গতি আনতে পারিনি৷ তবে গতি আসবে৷''

নিবন্ধনের ক্ষেত্রে নাম, বাবা-মা'র নাম, ঠিকানা, বাংলাদেশে প্রবেশের তারিখ, ছবি এবং ১০ আঙ্গুলের ছাপ নেয়া হচ্ছে৷ এসব নেয়ার পর তাদের একটি পরিচয়পত্রও দেয়া হয়৷ মোট তিনটি জায়গায় এখন বায়োমেট্রিক নিবন্ধন হচ্ছে৷ নওয়াপাড়া, কুতুপালং এবং বালুখালি৷ রবিবার থেকে আরো একটি কেন্দ্র খোলা হবে৷

পাসপোর্ট অধিদপ্তর এবং বিজিবি'র সহায়তায় এই নিবন্ধনের কাজ চলছে৷ কিন্তু জাতিসংঘ বা আন্তর্জাতিক কোনো সংগঠন এরসঙ্গে যুক্ত নয়৷ এক প্রশ্নের জবাবে লুৎফর রহমান বলেন, ‘‘রোহিঙ্গাদের রেজিস্ট্রেশনের জন্য সেন্টারে আনতে আইওএম এবং ইউএনএইচসিআর-এর কর্মীরা সহয়তা করছেন৷ পরিচয়পত্রে বা নথিপত্রে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষেরই স্বাক্ষর থাকছে৷''

তিনি আরো জানান, ‘‘এখন আমরা প্রতিদিন দেড়-দুই হাজার নিবন্ধন করতে পারছি৷ তবে প্রতিদিন ১০-১৫ হাজার করতে পারলে তিন মাসে নিবন্ধন শেষ হবে৷''

খন আমরা প্রতিদিন দেড়-দুই হাজার নিবন্ধন করতে পারছি

তবে তৃতীয় পক্ষকে ছাড়া এককভাবে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের এই নিবন্ধন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকরা৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজিমউদ্দিন খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া জাতিসংঘ বা তাদের সংঠন ইউএনএইচসিআর-কে সংযুক্ত করা প্রয়োজন৷ আন্তর্জাতিক কোনো তৃতীয় পক্ষ যদি রোহিঙ্গাদের আইডেনটিফিকেশন বা অথেনটিকেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত না থাকে তাহলে ভবিষ্যতে সংকট তৈরি হতে পারে৷ আর এই সংকট সৃষ্টি করবে মিয়ানমার৷ কারণ তারা রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না এবং বাঙালি হিসেবে অভিহিত করে৷ যদি রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে তারা রাজিও হয় তখন এই পরিচয়পত্র বা নিবন্ধন নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলবে বলে আমার ধারণা৷ কিন্তু বাংলাদেশ যদি এখন তৃতীয় পক্ষকে যুক্ত করে তাহলে তখন তাদের আপত্তি বা অজুহাত ধোপে টিকবে না৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘১৯৯১-৯২ সালে ইউএনএইচসিআর-কে সঙ্গে নিয়ে আমরা রোহিঙ্গাদের অথেনটিকেশনের কাজ করেছিলাম৷ তখন কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো গেছে৷ আর ২০১৪ সালে আমরা একটা কমিশন করি৷ বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের শরণার্থী হিসেবে স্বীকার করে না৷ তাদেরকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করে৷ এই বিষয় নিয়ে একটা সংকট আছে৷ তাই এখনই একটা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশের সব ধরণের তৎপরতা চালানো উাচত৷''

‘নিবন্ধন প্রক্রিয়া জাতিসংঘ বা তাদের সংঠনকে সংযুক্ত করা প্রয়োজন’

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদন:

মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি ৫ই সেপ্টেম্বরের পর থেকে মিয়ানমারে আর কোনও সেনা অভিযান হয়নি বলে যে দাবি করেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ রাখাইন রাজ্যের ভেতর থেকে সম্প্রতি ধারণ করা নতুন তিনটি ভিডিও ও স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে অ্যামনেস্টি দেখিয়েছি, শুক্রবারও নতুন করে জ্বলতে দেখা গেছে রাখাইনের গ্রাম৷ উড়তে দেখা গেছে ধোঁয়ার কুণ্ডলি৷ স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে অ্যামনেস্টির দাবি, স্থানীয় উগ্র বৌদ্ধরা এবং নিরাপত্তা বাহিনী সম্মিলিতভাবে এইসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে৷ সংস্থাটির ক্রাইসিস রেসপন্স বিভাগের একজন মুখপাত্র মন্তব্য করেছেন, ঐসব ছবি আর ভিডিও সু চির দাবির অসারতা প্রমাণ করে৷

বৃহস্পতিবার রাখাইনের হাপর ওয়াট চুয়াং নামে গ্রামের কাছে ধারণ করা তিনটি ভিডিও হাতে পেয়েছে অ্যামনেস্টি৷ ওই গ্রাম থেকে পাওয়া স্যাটেলাইট ছবিগুলো অ্যামনেস্টি ১৬ থেকে ২২শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পর্যালোচনা করেছে৷ সর্বশেষ ২২শে সেপ্টেম্বরেও ওই গ্রামে ধোঁয়া দেখা গেছে৷ ওয়াট চুয়াং গ্রামের আশপাশ থেকে ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, গ্রামের কৃষিজমি, ঘরবাড়ি ও গাছপালা আগুনে পুড়ছে৷ ২৫শে আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৪ লাখ ২৯ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য