রোড টু ফাইনাল: ক্রোয়েশিয়া
ক্রোয়েশিয়া খেলবে ফাইনাল! যত ধরনের ভবিষ্যৎবাণী ছিল, এর কোনোটিতেই ছিল না ক্রোয়েশিয়ার নাম৷ কিন্তু মদ্রিচ-রাকিটিচরা এখন স্বপ্নের ট্রফি থেকে কেবল ৯০ মিনিট দূরে৷
সুপার ঈগল পরীক্ষা
১৬ই জুন, কালিনিনগ্রাদ৷ ধারণা করা হচ্ছিল, আফ্রিকান দলটির পাওয়ার ফুটবলের সামনে ক্রোয়েশিয়াকে জয় আদায় করতে বেশ ঘাম ঝরাতে হবে৷ কিন্তু হলো ঠিক তার উলটো৷ প্রথমার্ধেই আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় ক্রোয়াটরা৷ দ্বিতীয়ার্ধে খেলার ১৯ মিনিট বাকি থাকতে পেনাল্টি থেকে গোল করে ৩ পয়েন্ট নিশ্চিত করেন অধিনায়ক লুকা মদ্রিচ৷
আর্জেন্টিনাবধ মহাকাব্য
ক্রোয়েশিয়া যে বিশ্বকাপ কাঁপাতে যাচ্ছে, তার প্রমাণ মিললো গ্রুপপর্বে দলটির দ্বিতীয় ম্যাচে৷ পরিসংখ্যান, পারফরম্যান্স, তারকাখ্যাতি, সব দিকেই এগিয়ে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা৷ কিন্তু মাঠে যে পরিসংখ্যানের বদলে ৯০ মিনিটে পায়ের জাদুই বড় নির্ধারক, তা মেসি-হিগুয়েইনদের ভালোমতো বুঝিয়ে দিলো ক্রোয়েশিয়া৷ ৩-০ গোলে হেরে রীতিমতো প্রথম পর্ব থেকে বাদ পড়ার ঝুঁকিতে পড়ে যায় আর্জেন্টিনা৷
গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন
গ্রুপের অন্য দলগুলোকে প্রতিদ্বন্দ্বীতার কোনো সুযোগই দেয়নি ক্রোয়েশিয়া৷ গ্রুপপর্বের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে আইসল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে দাপটের সাথে পূর্ণ ৯ পয়েন্ট নিয়েই হয় গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন৷
দানবীয় সুবাসিচ
শেষ ষোলতে ডেনমার্কের সাথে ১-১ গোলেই শেষ হয় খেলার মূল সময়ের ৯০ মিনিট৷ অতিরিক্ত সময়েও কেউ সমতা ভাঙতে পারেনি৷ ফলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে৷ আর সেখানেই বিশ্বকাপের সেরা নৈপুণ্য দেখালেন ক্রোয়াট গোলকিপার ডানিয়েল সুবাসিচ৷ প্রতিপক্ষের তিন তিনটি শট অসাধারণ বুদ্ধিমত্তায় ঠেকিয়ে একাই দলকে তুলে দেন কোয়ার্টারফাইনালে৷
রুশ বিশ্বকাপে রাশিয়াই বিদায়
সোচির মাঠে গ্যালারিভর্তি দর্শক৷ পুরো সমর্থন রাশিয়ার পক্ষে৷ কোনোরকমে জায়গা খুঁজে বসেছেন ক্রোয়েশিয়ার সমর্থকেরা৷ রাশিয়া একটু আক্রমণে গেলেই সমর্থকদের চিৎকারে কান পাতা দায়৷ প্রচণ্ড চাপের মধ্যেও সমানে লড়াই করে ২-২ গোলে ড্র করে ক্রোয়েশিয়া৷ পর পর দুই ম্যাচে আবার টাইব্রেকারে যেতে হয় ক্রোয়েশিয়াকে৷ আবার সুবাসিচের ঝলক৷ ফার্নান্দেজের মিসের পর স্মোলভের শট ঠেকিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সেমিতে তুলে দেন ক্রোয়েশিয়াকে৷
দ্বিতীয়বারেই বাজিমাত, বাড়ি গেল ইংল্যান্ড
১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠেছিল ক্রোয়েশিয়া৷ বিদায় নিতে হয় সেবারের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের কাছে হেরে৷ এবারও সেই ভয় দেখা দিয়েছিল৷ খেলা শুরুর ৫ মিনিটের মধ্যেই প্রথম গোল করে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড৷ কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধ করে এবং অতিরিক্ত সময়ে আরেক গোল করে স্বপ্নের ফাইনালে পৌঁছে যায় ক্রোয়েশিয়া৷ সমর্থকেরা ততক্ষণে ভাসছেন আনন্দের অশ্রুতে৷