রোহিঙ্গাদের পক্ষে সু চি
২৮ মে ২০১৩দীর্ঘ দিন সামরিক শাসনে থাকা মিয়ানমারে তো বটেই, এমনকি সারা বিশ্বেই ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা' হিসেবে পরিচিত অং সান সু চি৷ দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে তাঁর সুদীর্ঘ সংগ্রামের কথা সবাই জানেন, এ কারণে নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ের খবরও অজানা নয় কারো৷ কিন্তু মিয়ানমারে যে ক'দিন পরপরই শুরু হয়ে যায় বৌদ্ধ-রোহিঙ্গা দাঙ্গা, সেই দাঙ্গায় যে গত বছরও মারা গেছে কমপক্ষে ১৯২ জন, এ নিয়ে যেন খুব একটা মাথা-ব্যথা নেই তাঁর৷ নিহতদের বেশিরভাগ মুসলিম রোহিঙ্গা বলে সু চি-র ভূমিকা আরো বেশি সমালোচিত৷ বৃহত্তর স্বার্থেই কথা-বার্তায় সংযত – সু চি এমন দাবি করলেও সমালোচনা থামেনি৷ তবে সম্প্রতি একটি বিষয়ে রোহিঙ্গাদের পক্ষে সোচ্চার হয়েছেন মিয়ানমারের প্রধান বিরোধী দলনেত্রী৷ বিষয়টি রোহিঙ্গাদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত৷
রোহিঙ্গারা একটির বেশি বিয়ে করতে পারবেন না এবং কোনো দম্পতি দুটির বেশি সন্তান নিতে পারবেনা – এমন একটি আইন হয়েছিল ১৯৯৪ সালে৷ আইন কার্যকর করায় সরকার কখনো উদ্যোগী হয়নি৷ তবে সম্প্রতি মাউংড জেলা প্রশাসন এ আইন কড়াকড়িভাবে কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে৷ অং সান সু চি-র নজর কেড়েছে বিষয়টি৷ মুখপাত্র নেয়ান উইনের মাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের সন্তান ধারনের সিদ্ধান্তকেও বাধ্যবাধকতায় নিয়ে আসা কোনোভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়৷ সু চি মনে করেন, এ আইন মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল৷
মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা সাংবিধানিকভাবেও বৈষম্যের শিকার৷ বৌদ্ধদের হামলায় মৃত্যুবরণ এবং ঘরছাড়া, এমনকি দেশছাড়া হওয়া অনেকদিন ধরেই ব্যাপক আলোচিত৷ এতদিন হামলা এবং হামলার কারণে দেশ ছাড়তে রোহিঙ্গাদের বাধ্য হওয়ার বিষয় নিয়েই কথা হয়েছে৷ এবার সামনে এলো জন্মনিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও৷ ‘দু সন্তান নীতি' মিয়ানমারে থেকে যাওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যাবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ এবং এ প্রক্রিয়ায় তাদের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমানোর পাঁয়তারা কিনা এ প্রশ্ন উঠতেই পারে৷
এসিবি/ডিজি (রয়টার্স)