মিয়ানমারের ব্লগার
১৮ আগস্ট ২০১২মিয়ানমারের ব্লগার নে ফোন লাট৷ ২০০৭ সালে মিয়ানমারে ‘জাফরান বিপ্লব'-এর সময় অন্য বিপ্লবীদের সঙ্গে তাঁকে জেলে পুরেছিল সামরিক জান্তা সরকার৷ ধারণা করা হয়, ব্লগিং এবং একইসঙ্গে সামরিক জান্তা সরকারের বিরোধীদের সহায়তার অভিযোগে তাঁকে বন্দি করা হয়েছিল৷
নে ফোন লাট'কে দুই দশক জেলে পুরে রাখার পাকা বন্দোবোস্ত হয়ে গিয়েছিল ২০০৮ সালে৷ সাজাও শুরু হয় তাঁর৷ কিন্তু মিয়ানমারের রাজনীতিতে সম্প্রতি যে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে, সেই হাওয়ায় জেল থেকে ছাড়া পেলেন এই ব্লগার৷ প্রথমে তাঁর সাজার মেয়াদ কমিয়ে ১২ বছর করা হয়, তারপর গত জানুয়ারিতে সেটি আরো কমানো হয়৷
বর্তমানে মুক্ত জীবনযাপন করছেন নে ফোন লাট৷ ব্লগ লিখছেন আগের মতোই৷ রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে লেখালেখি করেছেন তিনি৷ কিন্তু সেদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা নে ফোন লাট'এর এই নিরপেক্ষ অবস্থান মানতে রাজি নন৷ একসময় যারা তাঁর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করেছিল, তারাই এখন তাঁকে ‘কালার' হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে৷ মিয়ানমারের মুসলমানদের নেতিবাচকভাবে প্রকাশ করতে এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়৷ বার্তাসংস্থা এএফপিকে নে ফোন লাট বলেন, ‘‘আমি এই বিষয়ে নিরপেক্ষ থাকতে চাই কিন্তু ফেসবুক (ব্যবহারকারীরা) আমার এই নিরপেক্ষতার সমালোচনা করছে৷ তারা চায় আমি যাতে রাখাইনদের পক্ষ অবলম্বন করি৷''
নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ'এর গবেষক মাথিউ স্মিথ মনে করেন, মিয়ানমারের সাধারণ নাগরিকদের পক্ষে বাস্তবতার ভিত্তিতে অবস্থান গ্রহণ খুব কঠিন৷ কেননা, সেখানে একটি বিশ্বাস ব্যাপকভাবে চালু রয়েছে যে, সকল রোহিঙ্গা ‘বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী'৷ এমনকি মিয়ানমার সরকারের শীর্ষ পর্যায়ও বিষয়টিকে এভাবেই মূল্যায়ন করে৷ অথচ রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী নয়৷ রাখাইন রাজ্যে তাদের অবস্থান দীর্ঘকাল থেকে৷
উল্লেখ্য, রাখাইন রাজ্যে মুসলিম রোহিঙ্গা এবং বৌদ্ধদের মধ্যকার সাম্প্রতিক জাতিদাঙ্গায় নিহতের আনুষ্ঠানিক সংখ্যা ৮০ জনের মতো৷ তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো মনে করে, হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে৷ এই মাসের শুরুতেও সেখানে নতুন করে শুরু হওয়া দাঙায় বেশ কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছে৷
এআই / ডিজি (এএফপি)