রুশ হামলার মাঝেই কিয়েভে শীর্ষ সম্মেলনের ঘোষণা
৩ জানুয়ারি ২০২৩রাশিয়ার লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার কারণে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ বর্তমাবে মোটেই নিরাপদ কোনো শহর নয়৷ তা সত্ত্বেও সে দেশের প্রতি সমর্থন দেখাতে কিয়েভেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউক্রেনের শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে৷ তবে আগামী ৩রা ফেব্রুয়ারি ইইউ সদস্য দেশগুলির রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানেরা সেখানে উপস্থিত থাকবেন না৷ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন ও ইইউ সরকার পরিষদের প্রধান শার্ল মিশেল সেই রাষ্ট্রজোটের প্রতিনিধিত্ব করবেন৷ ডিসেম্বর মাসেই সেই ঘোষণা করা হলেও ব্রাসেলসেই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে ধরে নেওয়া হয়েছিলো৷
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি ও ফন ডেয়ার লাইয়েনের মধ্যে টেলিফোনে আলোচনার পর সোমবার সন্ধ্যায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে কিয়েভে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনের ঘোষণা করা হয়েছে৷ ফলে ওয়াশিংটনের পর জেলেনস্কির সম্ভাব্য ব্রাসেলস সফর নিয়ে জল্পনাকল্পনা আপাতত বন্ধ হলো৷ সম্মেলনে রাশিয়ার চলমান হামলা ছাড়াও ইউক্রেনের ইইউ সদস্যপদের ক্ষেত্রে অগ্রগতি এবং ইউক্রেনের জন্য ইইউ-র আর্থিক সহায়তা নিয়েও আলোচনা হবে৷ জেলেনস্কি বলেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ব্রাসেলস থেকে ২০২৩ সালের প্রথম দফার অর্থের জন্য তিনি অপেক্ষা করছেন৷ ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেন, যতদিন প্রয়োজন ইইউ ইউক্রেনকে সহায়তা করে যেতে বদ্ধপরিকর৷
সোমবার রাতেও ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা অব্যাহত ছিল৷ ইউক্রেন জানিয়েছে, রাশিয়ার সব ড্রোন আগেভাগে ধ্বংস করা সম্ভব হয়েছে৷ কিয়েভ শহরের উপর ২২টি উড়ন্ত বস্তু ধ্বংস করা হয়েছে বলে সামরিক প্রশাসন দাবি করেছে৷ দেশের পূ্র্বাঞ্চলেও ইরানে তৈরি নয়টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে৷ প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তাঁর রাতের ভাষণে বলেন, রাশিয়া ইরানে তৈরি ড্রোন কাজে লাগিয়ে আরও ব্যাপক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ তবে অতীতের সব প্রচেষ্টার মতো ‘সন্ত্রাসবাদীদের' এই কৌশলও ব্যর্থ করতে ইউক্রেনকে সব পদক্ষেপ নিতে হবে বলে তিনি মনে করেন৷
ক্রমাগত হামলার মুখে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীও রাশিয়ার হানাদার বাহিনীর উপর পালটা আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে৷ নতুন বছরের শুরুতে অধিকৃত মাকিয়িভকা শহরে রুশ সৈন্যদের অবস্থানের উপর হামলায় প্রায় ৪০০ জন সৈন্য নিহত ও প্রায় ৩০০ জন আহত হয়েছে বলে ইউক্রেন দাবি করছে৷ রাশিয়ার দাবি, সেই হামলায় ৬৩ জন রুশ সৈন্য নিহত হয়েছে৷ সোমবার ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার ব্রিয়ানস্ক অঞ্চলে এক বিদ্যুৎ স্থাপনার উপর ইউক্রেনের ড্রোন হামলার কারণে কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়েছিল বলে আঞ্চলিক গভর্নর জানিয়েছেন৷ মাকিয়িভকার ঘটনার জন্য রাশিয়ায় অসন্তোষ ও ক্ষোভ দানা বাঁধছে৷ জাতীয়তাবাদী ও রাজনৈতিক মহলে রুশ কমান্ডারদের শাস্তির প্রকাশ্য দাবি শোনা যাচ্ছে৷ বিশেষ করে গোলাবারুদের ভাণ্ডারের পাশেই বিশাল সংখ্যায় রুশ সৈন্যদের বাসস্থান রাখার ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা শোনা যাচ্ছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)