আরব বসন্ত
৭ সেপ্টেম্বর ২০১২আগে যে ধরণের সামাজিক বিষয়বস্তুগুলি জিনের মতো বোতলে পোরা থাকত, এখন তারাই যেন বেরিয়ে এসে রুপোলি পর্দায় নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছে৷ পুরনো, সরকার-ঘেঁষা চিত্রপরিচালকরা তাদের কায়েমি স্বত্ব হারাচ্ছেন, তাদের স্থান নিচ্ছে নতুনরা৷
তিউনিশিয়ার চিত্রপরিচালক হিন্দে বুজেমা তাঁর ‘‘ইয়ে মন আখ'' বা ‘‘আগামীকালই তো ভালো ছিল'' তথ্যচিত্রটি নিয়ে এসেছিলেন ভেনিসে৷ ২০১১ সালের জানুয়ারিতে তিউনিশিয়ায় বিপ্লব চলার সময় বুজেমা তাঁর ছবিটি তৈরি করেন৷ বিবাহবিচ্ছেদের পর এক মায়ের কাহিনি, বিপ্লবের পর সুদিনের আশা যার ব্যর্থ হবে৷ বুজেমা এই আইদা'কে খুঁজে পান রাজপথের বিক্ষোভে৷ তখন ভিডিও ক্যামেরা নিয়ে রাস্তায় বেরোলেই ছবি হয়ে যেতো, বলেছেন বুজেমা৷
তিনি আইদা'র কাহিনি বেছে নেন কেননা মিডিয়া কভারেজে সাধারণ তিউনিশীয়দের কোনো জায়গা ছিল না, তারা ছিল উপেক্ষিত৷ ‘‘অথচ এই মানুষগুলিই তো বিপ্লবকে সফল করেছে,'' বলেছেন বুজেমা৷
শীত জুড়ে বসন্ত
‘‘এল শৈতা এলি ফৎ'', ‘উইন্টার অফ ডিসকন্টেন্ট' নামধারী কাহিনিচিত্রটি তৈরি করছেন মিশরীয় চিত্রপরিচালক ইব্রাহিল এল বাতুত৷ যে বিক্ষোভে হোসনি মুবারককে তাঁর গদি ছাড়তে হয়, সেই বিক্ষোভ চলাকালীন এই ছবি নির্মিত হয়েছে৷ এক ইন্টারনেট আন্দোলনকারী এই ছবির নায়ক - তাকে মুবারকের রাজত্বে শারীরিক নিপীড়নও সহ্য করতে হয়েছে৷ প্রখ্যাত অভিনেতা আমর ওয়াকেদ এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন৷ মিশরের কলাজগতের যে সব বিশিষ্ট ব্যক্তি সর্বাগ্রে বিপ্লবের সপক্ষে নাম লেখান, ওয়াকেদ ছিলেন তাদের অন্যতম৷
ছবিটির পরিচালক এল বাতুত ছিলেন যুদ্ধের সংবাদদাতা৷ তিনি বিপ্লব প্রসঙ্গে বলেছেন: ‘‘আমরা যে দেওয়ালটিতে একটি ছোট্ট গর্ত করার চেষ্টা করছিলাম, মুবারক ও তার প্রশাসনের পতনের সঙ্গে সেটি অপ্রত্যাশিতভাবে ভেঙে পড়ে৷'' নিজের ছবি করা প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য: ‘‘ভাবনাচিন্তার কোনো সময় ছিল না, তাই আমি একলাফে আমার পুরনো কাজেই ফিরে যাই৷ দেখতে শুরু করি, কিভাবে একটা ছবি করা যায়৷''
এই প্রথম সৌদি আরবে তৈরি একটি পূর্ণদৈর্ঘের কাহিনিচিত্র ভেনিসে প্রদর্শিত হয়েছে৷ ‘‘ওয়াজদা'' ছবির পরিচালক হাইফা আল মনসুর বলেছেন: ‘‘সমাজের জটিলতা যেন ফুঁসলে উঠে ফেটে বেরোচ্ছে৷ ছবি করার পক্ষে একটা দারুণ সময়৷''
এসি / জেডএইচ (এএফপি)