রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ একাধিক দেশের
১৮ মার্চ ২০২২বৃহস্পতিবারই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরাসরি রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলেছিলেন। এবার সরব হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও। রাশিয়ার বিরুদ্ধে রীতিমতো প্রস্তাব পাশ হয়েছে ইইউ পার্লামেন্টে। অভিযোগ, হামলার নামে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণ চালিয়েছে রাশিয়ার সেনা।
এদিকে এখনো মারিউপলের থিয়েটারে উদ্ধারকাজ চলছে। উদ্ধারকারীদের বক্তব্য, কেউ বেঁচে আছে বলে তারা মনে করছেন না। উদ্ধারকাজ বার বার ব্যাহত হচ্ছে কারণ, রাশিয়ার লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। তারই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া হামলা চালানোর পর এখনো পর্যন্ত ৪২ জন স্বাস্থ্যকর্মীর উপর আক্রমণ চালানো হয়েছে। বিভিন্ন ভাবে তারা আহত মানুষের সেবার কাজে যুক্ত ছিলেন। ডাব্লিউএইচও-র দাবি, মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। বাকিরা আহত।
মারিউপলের থিয়েটারে আশ্রয় নেওয়া এবং বেঁচে যাওয়া এক ব্যক্তি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই থিয়েটারটির ১০০ মিটারের মধ্যে কোনো ভবন নেই। ইউক্রেন আগেই রাশিয়াকে সতর্ক করেছিল যে, ওই ভবনে সাধারণ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তারপরেও এই ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান অনুযায়ী, দুপুর দুইটা নাগাদ একটি বিদেশি বিমান ওই ভবনের খুব কাছ দিয়ে উড়ে যায়। পাইলট খুব নীচ ফ্লাই করছিলেন। থিয়েটারটি স্পষ্টভাবেই দেখতে পেয়েছেন তিনি। এবং ইচ্ছাকৃতভাবে তার উপর একটি উচ্চশক্তিসম্পন্ন বোমা নিক্ষেপ করেন। প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য, যে উচ্চতা থেকে বোমাটি ফেলা হয়েছে, তাতে পরিষ্কার রাশিয়া থিয়েটারটিকেই টার্গেট করেছিল।
মারিউপলের ঘটনার পর বিশ্বের একাধিক দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরব হয়। সকলেরই বক্তব্য রাশিয়া যুদ্ধাপরাধ করছে। মার্কিন কংগ্রেসে রাশিয়ার বিরুদ্ধে রেসেলিউশন নেওয়া হয়েছে। রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরো কড়া নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্তও হয়েছে। ডাচ পার্লামেন্টও সে দেশে রাশিয়ার ২০০ মিলিয়ন ইউরোর সম্পত্তি ফ্রিজ করে দিয়েছে। যুক্তরাজ্য, ক্যানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান এবং অ্যামেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। যেখানে বলা হয়েছে, আটকে থাকা মানুষদের উদ্ধারের জন্য রাশিয়াকে সেফ প্যাসেজ তৈরি করে দিতেই হবে। ইউক্রেন বার বার অভিযোগ করছে, সেফ প্যাসেজেও হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া।
কিন্তু সত্যিই কি ইউক্রেন ছাড়তে চাইছেন সকলে? হিসেব বলছে, এখনো পর্যন্ত ২০ লাখেরও বেশি মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আশপাশের দেশে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু বহু মানুষ ঘর ছাড়তেও চাইছেন না। ক্যানাডার এক ঐতিহাসিক সম্প্রতি কিয়েভে গিয়েছিলেন। তার বাবা সেখানে থাকেন। ওই ঐতিহাসিক ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, বাবাকে নিয়ে তিনি ক্যানাডা ফিরে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাবা বাড়ি ছাড়তে রাজি হননি। প্রয়োজনে লড়াই করবেন বলেও জানিয়েছেন। বহু যুবক সেনার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ)