রাশিয়ার তেমন সাফল্যের সম্ভাবনা দেখছে না ন্যাটো
১৭ মে ২০২৪রাশিয়া ইউক্রেনের উত্তর পূর্বে খারকিভ এলাকায় হামলার মাধ্যমে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে৷ গত প্রায় ১৮ মাসে রুশ সেনাবাহিনী নতুন করে ইউক্রেনের জমি দখলের ক্ষেত্রে আবার কিছুটা সাফল্য পাচ্ছে৷ তবে এমন ‘ট্যাকটিকাল গেইন' সত্ত্বেও ইউক্রেনের দাবি, দখলদারি সৈন্যদের সহজে আরো অগ্রসর হতে দেওয়া হচ্ছে না৷ প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, সেই এলাকায় বাড়তি সামরিক সম্পদ পাঠানো হয়েছে৷ তিনি রাশিয়া সীমান্ত থেকে ৩৯ কিলোমিটার দূরে খারকিভ শহরে সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছেন৷ তাঁর মতে, সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ইউক্রেনের সৈন্যরা দখলদারি শক্তির ক্ষতি করছে৷
দখল করা এলাকায় রুশ সেনাবাহিনী নিরীহ মানুষকে হত্যা করছে বলে ইউক্রেন অভিযোগ করেছে৷ এমনকি ভোভোচানস্ক শহরের বাসিন্দাদের ‘মানবিক বলয়' হিসেবে অপব্যবহারেরও অভিযোগ করছে ইউক্রেন৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের চলে যেতেও দেওয়া হচ্ছে না৷ তাদের ধরে জোর করে বাসার বেসমেন্টে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে৷ খারকিভ অঞ্চলের পুলিশের তদন্ত বিভাগের প্রধান সের্গি বোলভিনভ এমন দাবি করেছেন৷ উল্লেখ্য, রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেন প্রায় ৮,৮০০ মানুষকে উদ্ধার করেছে৷
ইউরোপে ন্যাটোর শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল ক্রিস্টোফার কাভোলি বলেছেন, যথেষ্ট সংখ্যক সৈন্যের অভাবের কারণে রাশিয়ার পক্ষে ইউক্রেনে আরো সাফল্য পাওয়া কঠিন৷ তাছাড়া তাদের যথেষ্ট দক্ষতা ও ক্ষমতাও নেই৷ তিনি ইউক্রেনের সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন৷ জেনারেল কাভোলি-র মতে, ইউক্রেনের সৈন্যরা রাশিয়াকে আরো অগ্রসর হতে দেবে না৷
তিনি অবশ্য সেই অঞ্চলে রুশ সৈন্যসংখ্যা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেন নি৷ ন্যাটোর সামরিক কমিটির সভাপতি অ্যাডমিরাল রব বাউয়ার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী আরো গোলাবারুদ হাতে পেতে চলেছে৷ তারপর তিনি উল্লেখযোগ্য সাফল্যের আশা করছেন৷ বর্তমানে রাশিয়া দশ গুণ বেশি গোলাবারুদ ব্যবহার করছে বলে সামরিক কর্মকর্তারা মনে করছেন৷
এদিকে নিউ ইয়র্ক টাইমস সংবাদপত্রের সূত্র অনুযায়ী ন্যাটো এই প্রথম ইউক্রেনের ভূখণ্ডে সামরিক প্রশিক্ষক ও কনট্রাকটর পাঠানোর বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে৷ সৈন্যদের প্রশিক্ষণ ও সামরিক সরঞ্জামের মেরামতির ক্ষেত্রে এমন সরাসরি সহায়তা ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর জন্য সুবিধাজনক হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ উল্লেখ্য, ইউক্রেন সীমান্ত এলাকায় প্রায় দেড় লাখ সৈন্যের প্রশিক্ষণের জন্য অ্যামেরিকা ও অন্যান্য দেশকে অনুরোধ করেছে৷ কিন্তু ইউক্রেনের ভূখণ্ডে ন্যাটোর প্রতিনিধিরা হামলার শিকার হলে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাতের ঝুঁকির কারণে বিষয়টি নিয়ে দ্বিধা রয়েছে৷ এর আগে ইউক্রেনের পশ্চিমাংশে পোল্যান্ড ও রুমেনিয়া সীমান্তের কাছে রাশিয়ার হামলার ক্ষেত্রে ন্যাটোর এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহারের প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা হয়েছে৷ কিন্তু এমন পদক্ষেপ রাশিয়ার সঙ্গে ন্যাটোর সরাসরি সংঘাত হিসেবে বিবেচিত হবে কিনা, সে বিষয়ে তর্কবিতর্ক চলছে৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)