রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত
২৭ নভেম্বর ২০১৮বেশ কিছুকাল অপেক্ষাকৃত শান্ত থাকার পর রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সংঘাত আবার তীব্র হয়ে উঠেছে৷২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ দখলও ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশপন্থি বিদ্রোহীদের মদত দিয়ে চলেছে রাশিয়া৷ সেই প্রেক্ষাপটে সর্বশেষ পরিস্থিতি শান্ত না হলে এমনকি যুদ্ধের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ সোমবার ইউক্রেন রাশিয়ার সঙ্গে সীমান্ত ও কৃষ্ণ সাগর উপকূলের কাছের কিছু অংশে ৩০ দিনের জন্য সামরিক শাসন জারি করেছে৷ প্রেসিডেন্ট পেট্রো পোরোশেংকো স্থলপথে রাশিয়ার হামলার আশঙ্কা করছেন৷ তাঁর মতে, প্রতিরোধের প্রস্তুতির কারণেই সীমান্তবর্তী এলাকায় সামরিক শাসন জারি করা প্রয়োজন৷
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার৷ এ দিন রাশিয়া আজভ সাগরে ২৪ জন নাবিকসহ ইউক্রেনের ৩টি জাহাজ আটক করেছে৷ ৩ আহত নাবিকের চিকিৎসা চলছে৷ রাশিয়ার দাবি, এই জাহাজগুলি বেআইনিভাবে রাশিয়ার জলসীমায় প্রবেশ করেছিল৷ রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইউক্রেনকেই এই সংকটের জন্য দায়ী করেছে৷ মস্কোর দাবি, রাশিয়ার উপর আরো আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত প্ররোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন এমন সংকট সৃষ্টি করেছে৷ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন ইউক্রেনে সামরিক শাসন জারি নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন৷ ইউক্রেন অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে৷
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেট্রো পোরোশেংকো ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন এই মুহূর্তে নিজেদের দেশে চাপের মুখে রয়েছেন৷ তাঁদের জনপ্রিয়তাও কমে চলেছে৷ এই অবস্থায় এমন সংঘাত তাঁদের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে৷
আন্তর্জাতিক মঞ্চেও এই উত্তেজনা নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে৷ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ তাতে রাশিয়া অবশ্য বেশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল৷
সামরিক জোট ন্যাটো ইউক্রেনের ঐক্য ও অখণ্ডতার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে৷ বর্তমান সংকটের সমাধান করতে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সংলাপের ডাক দিয়েছেন৷ তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন৷ বার্লিনে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রাশিয়া, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানির প্রতিনিধিরা ‘নর্মান্ডি' কাঠামোর আওতায় ইউক্রেনের সংকট নিয়ে আলোচনা করেন৷ তাঁরা যৌথভাবে উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে স্পষ্ট পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন৷
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনা সম্পর্কে তিনি উদ্বিগ্ন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে মার্কিন প্রশাসন পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে, বলেন ট্রাম্প৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও অবশ্য সরাসরি রাশিয়ার পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছেন৷ এক বিবৃতিতে তিনি রাশিয়ার উদ্দেশ্যে আটক ইউক্রেনীয় জাহাজ ও নাবিকদের অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব মেনে চলার ডাক দিয়েছেন৷ তিনি ইউক্রেনের প্রেসি়ডেন্টের সঙ্গেও টেলিফোনে কথা বলেছেন৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ)