রামমন্দিরের উদ্বোধনে যাচ্ছেন না চার শঙ্করাচার্য
১২ জানুয়ারি ২০২৪উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ, গুজরাতের দ্বারকা, ওড়িশার পুরী এবং কর্নাটকের শ্রীঙ্গেরির শঙ্করাচার্যরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ২২ জানুয়ারি তারা অযোধ্যায় থাকবেন না। উত্তরাখণ্ডের জ্য়োর্তিপীঠের শঙ্করাচার্য বলেছেন, সনাতন ধর্ম অনুযায়ী অর্ধসমাপ্ত মন্দিরের উদ্বোধন করা যায় না। রামমন্দিরের নির্মাণ এখনো শেষ হয়নি। তাই তিনি না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জ্যোর্তিপীঠের শঙ্করাচার্য যা বললেন
উত্তরাখণ্ডের জ্য়োর্তিপীঠের ৪৬তম শঙ্করাচার্য অভিমুক্তেস্বরানন্দ সরস্বতী বলেছেন, তার এই সিদ্ধান্তকে মোদীবিরোধী বলে দেখা হতে পারে। কিন্তু এর সঙ্গে মোদী-বিরোধিতার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি শাস্ত্রবিরোধী হতে চান না বলেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ''শঙ্করাচার্যদের দায়িত্ব হলো, ধর্মীয় শাস্ত্র অনুসরণ করা এবং দেখা যে এই শাস্ত্র যাতে ঠিকভাবে অনুসরণ করা হয়।''
তিনি জানিয়েছেন, ''শাস্ত্রে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, মন্দিরের কাজ সম্পূর্ণ না হলে তার উদ্ঘাটন করা যায় না। এত তাড়াহুড়ো করার কোনো কারণ নেই। অসমাপ্ত মন্দিরে ঈশ্বরের মূর্তি স্থাপনের পরিকল্পনা ঠিক নয়। সবচয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, মন্দির অসমাপ্ত থাকা অবস্থায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।''
পুরীর শঙ্করাচার্যের বক্তব্য
পুরীর শঙ্করাচার্য নিশ্চলানন্দ সরস্বতী জানিয়েছেন, তিনি তার পদের মর্যাদা সম্পর্কে সচেতন। তিনি বলেছেন, ''আমি সেখানে গিয়ে কী করব? মোদীজি উদ্বোধন করবেন, মূর্তি ছোঁবেন, আর আমি সেখানে দাঁড়িয়ে হাততালি দেব?''
টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানাচ্ছে, পুরীর শঙ্করাচার্য জানিয়েছেন, ''রামমন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠান পুরোটাই রাজনৈতিক শো হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচন আসছে বলে এরকম একটা ইভেন্ট করা হচ্ছে। যখন মন্দির নির্মাণের কাজ চলছে, তখন মন্দিরের উদ্বোধনে আমি সায় দিতে পারিনি। তাই সেখানে যাচ্ছি না।''
গুজরাটের দ্বারকাপীঠের মন্ত্রী ব্রক্ষ্মচারী নরয়ানন্দ আউটলুককে বলেছেন, ''মন্দিরের উদ্বোধন নিয়ে শঙ্করাচার্যর কোনো আপত্তি নেই। তিনি খুশি। তবে তাকে বেশ কিছু প্রটোকল অনুসরণ করতে হয়। আর সেসময় তার আগে থেকে নির্ধারিত কিছু সূচি আছে। দ্বারকাতেও আছে। তাই তিনি অযোধ্য়া যতে পারবেন না।''
যাচ্ছেন না কংগ্রেস নেতারা
কংগ্রেস জানিয়ে দিয়েছে, তাদের কোনো নেতা অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনের দিন যাবেন না। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, সংসদীয় দলের চেয়ারম্যান সোনিয়া গান্ধী ও লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসার জন্য আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশ জানিয়েছেন, তারা কেউই অযোধ্যায় যাবেন না।
কংগ্রেস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ''ধর্ম হলো মানুষের ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু বিজেপি-আরএসএস এটাকে একটা রাজনৈতিক ইভেন্ট বানিয়ে দিয়েছে। রাজনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যে অসমাপ্ত মন্দিরের উদ্বোধন করা হচ্ছে। কংগ্রেস শ্রীরামকে শ্রদ্ধা করে। ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়কেও তারা মানে। কিন্তু আরএসএস-বিজপি ইভেন্টে তারা যাবে না।''
তিন রাজ্যে ছুটি
আগামী ২২ জানুয়ারি রামমন্দির উদ্বোধন ও শ্রীরামের মূর্তির প্রাণপ্রতিষ্ঠার দিনে ছুটি ঘোষণা করেছে ভারতের তিন রাজ্য উত্তরপ্রদেশ, অসম ও ছত্তিশগড়। তিনটি রাজ্যই বিজেপি শাসিত।
সারা দেশে তো বটেই, নিউ ইয়র্কের টাইম স্কোয়ারেও রামমন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠান লাইভ দেখা যাবে।
জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এএনআই)