1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাফিয়াত রশিদ মিথিলা: একের ভিতরে অনেক

জামিল আশরাফ খান
১১ জুলাই ২০২৩

অভিনয়ের জন্য বেশি আলোচনায় এলেও রাফিয়াত রশিদ মিথিলার নিজের জগতে আছে মেয়ে আইরা, বিশ্বের কোটি অধিকারবঞ্চিত শিশু, সংগীত এবং জ্ঞানচর্চা৷ কেমন করে এতদিক সামলান তিনি? ডয়চে ভেলেকে সে বিষয়েই বিস্তারিত বলেছেন মিথিলা..

https://p.dw.com/p/4TghV
অভিনেত্রী ও উন্নয়নকর্মী
অভিনেত্রী ও উন্নয়নকর্মীছবি: Privat

ডয়চে ভেলে :  সম্প্রতি ইউরোপ ট্যুরে ছিলেন আপনি৷ ট্যুরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে একটু বলবেন?

রাফিয়াত রশিদ মিথিলা: জুন মাসে ইউরোপ ট্যুরে গিয়েছিলাম দুটো কাজে। একটা হলো লেখাপড়া- সুইজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব জেনিভাতে আর্লি চাইল্ডহুড এডুকেশন নিয়ে পিএইচডি করছি, পিএইচডি রিসার্চের কিছু প্রেজেন্টেশন ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামার ইউনিভার্সিটি প্রোগ্রামের জন্য একটি লেকচার দিয়েছি। অন্য কারণটা হলো- আমার মেয়ে আইরার সামার ভ্যাকেশন চলছে, সেই উপলক্ষ্যে তাকে নিয়ে ভ্রমণ করলাম। মা-মেয়ে মিলে ইটালি, সুইজারল্যান্ড ঘুরেছি। এক ঢিলে দুই পাখি মারা হলো।

জেনিভাতে
জেনিভাতেছবি: Rafiath Rashid Mithila

আপনি একটি প্রতিষ্ঠানে আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্টের প্রধান হিসাবে কর্মরত আছেন। সেখানে কী কী করতে হয়?

বাংলাদেশের ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালে কাজ করছি ১৫ বছর যাবত। সেখানে এখন আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের প্রধান হিসেবে কর্মরত আছি। ডেভেলপমেন্ট ফিল্ডের টেকনিক্যাল টার্মে বললে, আমাকে পুরো পোর্টফোলিওটা তদারকি করতে হয়৷ আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম আছে। এই প্রোগ্রাম ডিজাইন করা থেকে বাস্তবায়ন করা, টিমকে লিড করা, পুরো প্রোগ্রাম দেখি। শিশুর সার্বিক বিকাশ ও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন দেশে সুবিধাবঞ্চিত শিশু এবং তাদের বাবা-মায়ের সাথে কাজ করি।

Rafiath Rashid Mithila
ছবি: Rafiath Rashid Mithila

অভিনয়, চাকরি- এর বাইরে আর কোনো ভালো লাগার কাজ...?

অভিনেত্রী ও উন্নয়নকর্মী হিসেবে আমি নারী ও শিশু অধিকার নিয়ে আমি সবসময় সোচ্চার। নারী ও শিশু অধিকার রক্ষায় যেকোনো উদ্যোগে যুক্ত থাকার চেষ্টা করি। এছাড়া একটা দায়িত্ব ও ভালোবাসার জায়গা থেকে বই লিখি। আমার আর আমার মেয়ের ভ্রমণ নিয়ে পাঁচ থেকে আট বছরের শিশুদের জন্য ভ্রমণকাহিনিনির্ভর ‘আইরা আর মায়ের অভিযান' নামে একটি সিরিজ লিখছি। দুইটা গল্প ইতোমধ্যে প্রকাশ হয়েছে।

এর আগে তো দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ও অ্যামেরিকার স্কুলে শিক্ষাকতা করেছেন আপনি এত কিছু করতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে যায় না? কিভাবে সব সামলান?

একজন অভিনেত্রী ও কর্মজীবি মা হয়েও পিএইচডি করছি। অনেকটা সময়জুড়ে সিঙ্গেল মা ছিলাম, বলতে গেলে আমার সন্তানকে একা মানুষ করতে হয়েছে। অবশ্যই আমার বাবা-মায়ের সাপোর্ট ছিল। আমি আত্মনির্ভরশীল একজন মানুষ, পরিবারের জন্য আমাকে উপার্জন করতে হয়। সন্তান লালন পালন করতে হয়। আবার একটা ভালোবাসার জায়গা থেকে লেখাপড়া করি, অভিনয় করি। যেকোনো কর্মজীবী মায়ের জন্যই একসঙ্গে চাকরি ও বাচ্চা সামলানো কঠিন। অনেক দায়িত্ব পালন করার কারণে সোশাল লাইফে খুব বেশি সময় দিতে পারি না। কাজের জন্য দেশের বাইরে গেলে বাবা-মা, ভাই-বোন সবসময় সাপোর্ট দেয়। মেয়েকে স্কুলে নেয়া, দেখা-শোনা করা। আমার কর্মক্ষেত্রও সেই সাপোর্টটা দেয়, যেন সব ম্যানেজ করতে পারি। সেজন্য আমি বলবো টাইম ম্যানেজমেন্টের কথা- যেটাতে আমি যথেষ্ট ভালো।

Rafiath Rashid Mithila | Bangladeschische Schauspielerin
ছবি: Privat

এত ব্যস্ততার ফাঁকে মেয়ে আইরাকে কি যথেষ্ট সময় দিতে পারেন? মা-বাবার যথেষ্ট সান্নিধ্য পায় আইরা?

আইরা ক্লাস ফোরে পড়ে। ও বয়সের তুলনায় যথেষ্ট সৃজনশীল মানসিকতার, খুব বুঝদার একটা বাচ্চা। আমার সাথে বন্ডিং একদম বন্ধুর মতো।  সে আমার কাজটাও বুঝতে পারে। খুব ছোটবেলা থেকে সে আমার সাথে ট্র্যাভেল করেছে। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে বা আমি যখন কলকাতা মুভ করেছি, সে-ও সঙ্গে গিয়েছে। যখন ও ঢাকায় থাকে, ও বাবার (তাহসান) কাছে বেড়াতে যায়। বাবাও দেখতে আসে। সে বাবা মায়ের সান্নিধ্য খুব পায়। নানা-নানী, খালা সবার মধ্যে বড় হচ্ছে। এটাও খুব জরুরি যে সে বৃহত্তর পরিবারে বড় হচ্ছে।

এখন কী কী কাজ করছেন?

এই বছর আমি একটা কাজই করেছি, ওয়েবসিরিজ ‘অ্যালেন স্বপন'। অভিনয়ের ক্ষেত্রে এখন অতটা সময় দিতে পারি না। খুব বেছে বেছে অল্প কাজ করি। আমি এত বেশি কাজও করতে চাই না। যদি ইন্টারেস্টিং কোনো গল্প বা চরিত্র পাই, তাহলে করবো। গত দুই-তিন বছরের মধ্যে অনেক কাজ করা হয়ে গেছে, সেগুলো সামনে রিলিজ পাবে।

কোনগুলি মুক্তির অপেক্ষায় আছে?

কলকাতায় আমার প্রথম সিনেমা ৭ জুলাই রিলিজ পেয়েছে৷ কলকাতায় আরো তিনটি সিনেমা করেছি, সেগুলোও মুক্তির অপেক্ষায়। বাংলাদেশে কিছু আছে। ‘জলে জ্বলে তারা', ‘কাজল রেখা', ‘নুলিয়াছড়ির সোনার পাহাড়' রিলিজের অপেক্ষায়।

‘মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন' ওয়েব সিরিজে অভিনয় করে কেমন সাড়া পেয়েছেন? নেতিবাচক কমেন্টগুলোকে কিভাবে দেখেন?

‘মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন' আসলেই মানুষ খুব পছন্দ করেছে। আমরা নেগেটিভ বেশি ফোকাস করার চেষ্টা করি। একটা দুইটা নেগেটিভ কথা কেউ বলেছে। ‘বৈয়াম পাখি' গানটাকে. শায়লা চরিত্রটিকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ খুব পজিটিভলি নিয়েছে। শায়লা চরিত্রটি অনেক লেয়ার্ড ও বৈচিত্রপূর্ণ। এরকম একটা চরিত্র করাটাও কঠিন। আমি সার্থক যে মানুষ এই চরিত্রকে ভালোবেসেছে।

একটা সময় আপনার গান প্রকাশিত হয়েছে, নাটক, বা প্লেব্যাকের জন্য আবার কি গাওয়ার ইচ্ছা আছে?

মাাঝেমধ্যে গিটার প্র্যাক্টিস করার সময় এখনো গাই, একান্তই নিজের জন্য। তবে সেরকম কোনো সুযোগ এলে ভেবে দেখবো।