রানার বিরুদ্ধে হত্যা চার্জশিট
১৬ এপ্রিল ২০১৪
রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় মোট দুটি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি৷ একটি ইমরাত নির্মাণ আইনে এবং অপরটি দুর্ঘটনা জনিত হত্যা৷ দুটি মামলার তদন্তই এ মুহূর্তে শেষ পর্যায়ে রয়েছে৷ সিআইডি-র এএসপি বিনয় কৃষ্ণ কর ডয়চে ভেলেকে বলেন, এর আগে দায়ের করা দুর্ঘটনা জনিত হত্যা মামলায় তারা সরাসরি হত্যার অভিযোগে রানা ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে আদালতে টার্জশিট দেবেন৷ তারা তদন্তে অপরাধ প্রমাণের যথেষ্ঠ স্বাৰ্য ও আলামত সংগ্রহ করেছেন৷
তিনি জানান, ‘‘প্রথমে মামলাটি দণ্ডবিধির ৩০৪/ক ধারায় দেয়া হলেও, তারা আদালতে চার্জশিট দেবেন ৩০২/৩৪ ধারায়৷ এই ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড৷ এই মামলায় সোহেল রানাসহ ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ কিন্তু আসামি আরো বেশি হবে বলে জানান তিনি৷ রানা ও রানার বাবা ছাড়াও রানা প্লাজার পাঁচটি পোশাক কারখানার মালিক-কর্মকর্তা এবং স্প্যানিশ নাগরিক ডেভিড মেয়রসহ ৮ জনকে প্রাথমিকভাবে এই মামলার আসামি করা হয়েছিল৷ ডেভিড মেয়র রানা প্লাজা ধসের পর আর বাংলাদেশে ফিরে আসেননি৷
গত বছরের ২৪শে এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে মোট ১,১৩৫ জন পোশাক শ্রমিক নিহত হন৷ তার আগের দিন ঐ ভবনে ফাটল দেখা দিলেও, রানা ও পোশাক কারখানার কর্মকর্তারা জোর করে শ্রমিকদের ২৪শে এপ্রিল ভবনে ঢুকতে বাধ্য করেন৷ শ্রমিকরা ভবনে প্রবেশ করতে না চাইলে পোশাক কারখানার কর্মকর্তারা তাঁদের ছাটাই করার হুমকি দেয়৷ তাঁদের জোর করে ভবনে ঢোকানোর কিছুক্ষণ পরই ভবনটি ধসে পরে৷ যুবলীগ নেতা রানাকে ভবন ধসের কয়েকদির পর সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ ইমারত আইনের মামলায় তিনি জামিন পেলেও হত্যা মামলায় তিনি এখনও কারাগারে আছেন৷
সিআইডি-র এএসপি বিনয় কৃষ্ণ কর বলেন, ‘‘ভবনটিতে ফাটল দেখা দেয়ার পরও জোর করে শ্রমিকদের সেই ভবনে ঢুকতে বাধ্য করা আর সেই ভবন ধসে তাঁদের মৃত্যু সরাসরি হত্যাকাণ্ড ছাড়া আর কিছুই নয়৷'' তাঁর কথায়, ‘‘শ্রমিকদের যে জোর করে ঢোকানো হয়েছে তার প্রত্যক্ষদর্শী ছাড়াও স্বাৰ্য প্রমাণ আছে৷ আছে ভিডিও ফুটেজ৷''
অন্যদিকে ইমরাত আইনে দায়ের করা মামলায়ও চার্জশিট দেয়া হবে একই সঙ্গে৷ সেই মামলায়ও রানা, রানার বাবাসহ অন্যান্যদের আসামি করা হচ্ছে৷
তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ‘‘তাঁরা মামলার তদন্ত কাজ শেষ করে এখন আইনগত মতামত নিচ্ছেন৷ মতামত পেলেই চার্জশিট দেবেন৷ তাঁদের আশা, ২৪শে এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের এক বছর পূর্তির আগেই চার্জশিট দেয়া সম্ভব হবে৷''
রানা প্লাজা ধসের পর দুটি মামলাই হয়েছিল সাভার থানায়৷ ঢাকা জেলার এসপি হাবিবুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান যে, প্রাথমিক তদন্ত শেষে সিআইডি-কে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়৷