রাজীব এখনো অধরা, এবার নজর নারদায়
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯এবার সেই মামলার তদন্তে তৎপর হলো সিবিআই৷ সারদা কেলেঙ্কারির অন্যতম সন্দেহভাজন, কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার, বর্তমানে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তরের প্রধান রাজীব কুমার এখনো অধরা৷ তবে সিবিআই বসে নেই, এবার তারা তৎপর নারদা দুর্নীতি নিয়ে৷
আচমকাই গ্রেপ্তার করা হয়েছে এই মামলার অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত, আইপিএস অফিসার সৈয়দ মহম্মদ হুসেন মির্জাকে৷ স্টিং অপারেশনে দেখা গিয়েছিল, তিনিই শাসকদলের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন শিল্পপতির ছদ্মবেশে থাকা সাংবাদিক ম্যাথুকে৷
গত সপ্তাহের শেষে হঠাৎ সৈয়দ মহম্মদ হুসেন মির্জাকে গ্রেপ্তারের পর সিবিআই তিন দফায় জেরা করে মুকুল রায়কে৷ একদা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা, মমতা ব্যানার্জির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং বিশ্বস্ত মুকুল রায় এখন বিজেপিতে৷ মুকুলকে একদফা জেরার পর ধৃত আইপিএস মির্জার সামনে মুখোমুখি বসিয়ে তাদের একসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়৷ এরপর রবিবার মির্জাকে নিয়ে সিবিআই অফিসাররা যান মুকুল রায়ের ফ্ল্যাটে৷
নারদার স্টিং অপারেশনে স্যামুয়েলের সঙ্গে মুকুলকে টাকা দেওয়া নেওয়া নিয়ে কথা বলতে শোনা গিয়েছিল৷ তারপর মুকুল রায়কে দেড় কোটি টাকা দিয়েছিলেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন মির্জা৷ কীভাবে সেই টাকা হাতবদল হয়েছিল, তার পুনরাভিনয় করানো হয় মির্জাকে দিয়ে৷ সেই পর্ব মিটে যাওয়ার পর মুকুল রায় জোর গলায় দাবি করেছেন, তিনি যে টাকা নিয়েছিলেন, তার কোনো প্রমাণ নেই৷ বাকি নেতা-নেত্রীদের টাকা নেওয়ার ভিডিও থাকলেও তার অমন কোনো ভিডিও কেউ দেখাতে পারবেন না৷
রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের ধারণা, প্রাক্তন তৃণমূল, এখন বিজেপি মুকুল রায়কে দিয়ে নারদার তদন্ত শুরু হলেও আসলে তৃণমূলের বাকি নেতা-নেত্রীদের কাছে পৌঁছতে চাইছে সিবিআই, যেটা সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারির তদন্তে সম্ভব হয়নি৷ কারণ, এই তদন্তের মূল যোগসূত্র, আইপিএস অফিসার রাজীব কুমার এখনো অধরা৷ পুলিসের ওপর মহলে যদিও রাজনৈতিক কারণে রাজীব কুমারের এই হয়রানি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে৷ মমতা ব্যানার্জির সরকারের নির্দেশ মানতে বাধ্য হওয়ার খেসারত গিয়েই একজন সৎ ও দক্ষ পুলিশ অফিসারকে এভাবে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্ন উঠে আসছে৷
আরো প্রশ্ন উঠছে, রাজীব কুমারই কি সারদা তদন্তের সাফল্যের চাবিকাঠি? অনেকের ধারণা, ‘‘সরকার ওঁকে বাঁচাতে চাইছে, উনি সরকারকে বাঁচাতে চাইছেন৷'' ডয়চে ভেলেকে এমনটিই বললেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য৷ তাঁর মতে, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তরের প্রধান যিনি, সেই ডিজি সিআইডি নিজেই পলাতক! রাজ্য সরকার এবং পুলিশের কর্মদক্ষতা এতে এক হাস্যকর পর্যায়ে পৌঁছেছে৷