1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজশাহীতে পুলিশের মামলায় গ্রেপ্তার ক্রীড়াবিদদের অসহায়ত্ব

আবু সাদাত ঢাকা
৬ মার্চ ২০২৩

শেখ কামাল বাংলাদেশ যুব গেমসের সমাপনীর তিনদিন পরও সংবাদের শিরোনামে গেমসে অংশ নেয়া খেলোয়াড়রা৷ রাজশাহীতে গ্রেফতার হয়েছেন যুব গেমসে অংশ নেয়া এক কোচ ও ১১ জন ক্রীড়াবিদ৷

https://p.dw.com/p/4OJxA
Bangladesch | Die Polizei verhaftete am Sonntag 11 Athleten und einen Trainer
ছবি: privat

ঘটনার সুত্রপাত ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে৷ যুব গেমসের সমাপনী অনুষ্ঠান শেষ করে রোববার সকালে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন রাজশাহীর খেলোয়াড়রা৷ ট্রেন থেকে নামার সময় পুলিশ সদস্য গোলাম কিবরিয়া ও তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানার সঙ্গে তর্কে জড়ায় তারা৷ এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়৷ পরে পুলিশ সদস্যের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোচসহ ১২ জন জনকে আটক করে রাজশাহী রেলওয়ে পুলিশ৷

এরপর পুলিশ দম্পতি মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা করলে, তাদেরকে রাতেই কারাগারে পাঠায় আদালত৷ ১২ জনের মধ্যে ৫ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় বিশেষ শর্তে পরে জামিন পায়৷  বাকি ৭ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে৷ 

এই ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে৷ বিশেষ করে তরুণ এসব ক্রীড়াবিদকে ঢাকায় নিয়ে আসা এবং নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি কতটা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়েছে সেই প্রশ্নটি উঠে এসেছে সবার আগে৷

পুলিশের অনেক বাড়াবাড়ি ছিল: ওয়াহেদুন নবী অনু

তবে এই ঘটনায় পুলিশের অনেক বাড়াবাড়ি ছিল বলে মনে করছেন রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদুন নবী অনু৷ একইসঙ্গে অবশ্য রাজশাহীর খেলোয়াড়দের প্রধান সমন্বয়কেরও সমালোচনা করছেন তিনি৷ তবে ঘটনা যেহেতু মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে, তাই খেলোয়াড়দের আইনি এবং সার্বিক সহযোগিতা দিতে জেলা ক্রীড়া সংস্থা প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তিনি৷ 

আর পুলিশের করা মামলা কিংবা নির্যাতনের প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাজশাহীর ক্রীড়াবিদ এবং সংগঠকরা মানববন্ধন করবে বলে জানিয়েছেন ওয়াহেদুন নবী অনু৷ সঙ্গে আগামীতে এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে সে বিষয়ে সচেতন থাকার কথাও বলা হয়েছে রাজশাহী বিভাগ এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে৷ 

রাজশাহীর এই ঘটনাকে খুবই দুঃখজনক বলছেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ ও যুব গেমসের টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান এ কে সরকার৷ তিনি বলেন, ঢাকার বাহির থেকে যেসব খেলোয়াড় এবং কর্মকর্তারা গেমসে অংশ নিতে আসেন, তাদের সমস্ত খরচ বহন করে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন৷ এমনকি টাকা আগেই দিয়ে দেয়া হয়৷ আর খেলোয়াড়দের আনা-নেয়ার বিষয়টি সরাসরি তদারকি করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা জেলার কর্মকর্তারা৷ 

যারা সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন, তারা কম-বেশি সবাই দেশে কিংবা বিদেশি কোনো না কোনো গেমসে অংশ নিয়েছেন৷  তারপরও তাদের আরো বেশি সচেতন হওয়ার প্রয়োজন ছিল৷ কারণ, তারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতেন, তবে রাজশাহীর এই অনাকাঙ্খিত এই ঘটনা এড়ানো যেতো বলে মনে করেন এ কে সরকার৷ 

যেসব খেলোয়াড় কারাগারে আছে, তাদেরকে দ্রুত মুক্তি এবং মামলা থেকে অব্যহতি দিতে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন কোনো উদ্যোগ নেবে কিনা-  এই প্রশ্নের জবাবে এ কে সরকার বলেন, ‘‘এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে কথা হয়েছে এবং আগামীতে কী কী করতে হবে, খেলোয়াড়দের জন্য সেসব ব্যবস্থা করা হবে৷’’ 

আগামীতে কী কী করতে হবে, খেলোয়াড়দের জন্য সেসব ব্যবস্থা করা হবে: এ কে সরকার

রাজশাহীর এই ঘটনার আগে আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে এবারের যুব গেমসে দুটি পদকজয়ী সাইক্লিস্ট মাশরাফি হোসেন মারুফের জীবনে৷  গেমস শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে ট্রেনের দড়জায় দাঁড়িয়ে সেল্ফি তুলতে গিয়ে চলন্ত ট্রেনের নীচে পড়ে যান মাশরাফি৷ মাত্র ১৭ বছর বয়সি ছেলেকে হারিয়ে শোকে কাতর তারা বাবা-মা৷ শোক জানিয়েছিল গেমসের আয়োজক বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন৷ 

২২ কোটি টাকা বাজেটের যুব গেমসে কিছুটা হলেও কালো দাগ দিয়ে গেল এই দুটি ঘটনা৷ তাই আগামী আসর শুরুর আগে থেকেই ঢাকার বাহির থেকে অ্যাথলিটদের আসা-যাওয়ার বিষয়টি আরো গুরুত্বসহকারে দেখা হবে- এমনটাই প্রত্যাশা খেলোয়াড় এবং সংগঠকদের৷