রাজনৈতিক দলগুলোর ১৫ আগস্ট
১৫ আগস্ট ২০১৯বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীর যত কর্মসূচি তাদের আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনেরই প্রাধান্য দেখা যায়৷ সরকারি কর্মসূচিও পালন হয় অনেক৷ এর বাইরে অন্য রাজনৈতিক দল কিভাবে দিনটি পালন করে? তাদের কি কোনো কর্মসূচি থাকে?
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি(সিপিবি) শুরু থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে কর্মসূচি পালন করে আসছে৷ ৭৫-এর ১৫ আগস্টে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রথম প্রতিবাদ যারা করেছেন তাদের মধ্যে সিপিবির ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন অন্যতম৷ প্রতি বছরের মত এবারও সিপিবি ১৫ আগস্ট বিকেলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে৷ সিপিবির ছাত্র সংগঠন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিলেও সিপিবি নেতারা এখন আর ফুল দিতে যান না৷
সিপিবির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন,‘‘আমরা মনে করি ৭৫-এর ১৫ অগাস্ট বাংলাদেশে একটি প্রতিক্রিয়াশীল ক্যু সংঘটিত হয়েছিল৷ মুক্তিযুদ্ধের ধারা থেকে দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যাওয়াই ছিল এই ক্যুর লক্ষ্য৷ আর এর কারণেই এই দিবসটি আমরা পালন করি৷ মুক্তিযুদ্ধের প্রধান স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে আওয়ামী লীগ তার কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে দলীয়করণ করার কাজটাই করেছে৷''
ওয়াকার্স পার্টি অবশ্য আলাদাভাবে শোক দিবসের কোনো কর্মসূচি বা আলোচনা সভার আয়োজন করেনি৷ ওয়াকার্স পার্টি নেতা মোস্তফা আলমগীর রতন জানান, ১৪ দলের সাথেই তারা সকালে ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়েছেন৷ সেখানে ওয়ার্কার্স পার্টি আলাদাভাবে ফুল দিয়েছে৷ আর পার্টির প্রধান রাশেদ খান মেনন এমপি ঢাকায় তার নির্বাচনি এলাকায় কয়েকটি সরকারি কর্মসূচিতে যোগ দেবেন৷ তিনি জানান,‘‘বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীতে ওয়াকার্স পার্টিতে আলাদাভাবে কর্মসূচি পালনের রেওয়াজ নেই৷''
শোক দিবসে জাসদে(ইনু) আলাদা কোনো কর্মসূচি চোখে পড়ছে না৷দলটির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল্লাহিল কাইয়ূম বলেন,‘‘কোনো কর্মসূচির কথা আমার জানা নেই৷''
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ১৫ আগস্টে বিকেলে মতিঝিল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে৷ এটা তারা প্রতিবছরই করে৷ ওই দোয়া মাহফিলে কাদের সিদ্দিকী থাকেন না৷তিনি সারাদিন ‘বাসায় বন্দি থাকেন' এবং বিকেলে ধানমন্ডির ৩২ নাম্বারে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে যান৷সেখানে তিনি নামাজ পড়ে আবার বাসায় ফিরে যান বলে জানান দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী৷ তিনি বলেন,‘‘আওয়ামী লীগ আসলে বঙ্গবন্ধুকে তাদের দলীয় স্বার্থে কুক্ষিগত করতে চায়৷ তাই তারা চায় না দলের বাইরে সবাই বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী ,জন্মবার্ষিকী পালন করুক৷বঙ্গবন্ধু সবার৷ তিনি একক কোনো দলের না৷''
ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম এবার ১৫ অগাস্টে শোক দিবসে কোনো কর্মসূচি পালন করছে না৷ তবে তারা ১৭ আগস্ট দলীয় কার্যালয়ে এবং ২৪ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভা করবে বলে জানান দলটির নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী৷ তিনি জানান, এর আগে অবশ্য তারা প্রতিবছর ১৫ আগস্টেই আলোচনা সভার আয়োজন করেছেন৷
ইসলামী দলগুলোর মধ্যে তরিকত ফেডারেশন প্রতিবছরই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে৷ এবারও তারা একই আয়োজন করেছে৷
দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি কখনোই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে কোনো কর্মসূচি পালন করে না৷ এবারও শোক দিবসে তাদের কোনো কর্মষুচি নেই৷তবে এই দিনটিতে তারা দলের প্রধান খালেদা জিয়ার জন্মদির পালন করে৷ তবে এবার তারা ১৫ আগস্টে খালেদা জিয়ার জন্মদিনের কোনো আয়োজন রাখেনি৷তারা আয়োজন রেখেছে ১৬ আগস্ট৷এনিয়ে বিএনপির দুই শীর্ষ নেতার কাছে জানতে চাইলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি৷