রক্ষা পেল জার্মান সরকার
৩ জুলাই ২০১৮অবশেষে শেষরক্ষা হলো৷ আপাতত জার্মানির জোট সরকার ও দুই রক্ষণশীল দলের জোট অস্তিত্বের সংকটথেকে রেহাই পেল৷ সোমবার রাতে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার তাঁদের সংঘাত মিটিয়ে নিলেন৷ জার্মানির সীমান্তে অবৈধ শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর দাবিতে অটল থাকার পর বাভেরিয়ার সিএসইউ দলের নেতা সেহোফার শেষ পর্যন্ত এক আপোশ মীমাংসা মেনে নিলেন৷ তবে ‘ঐকমত্য' সত্ত্বেও ম্যার্কেল ও সেহোফার একসঙ্গে সাংবাদিকদের সামনে এলেন না৷ সেহোফার বলেন, তিনি পদত্যাগ না করে মন্ত্রী থেকে যাচ্ছেন৷
সোমবারের বোঝাপড়ার আওতায় বাভেরিয়া-অস্ট্রিয়া সীমান্তে অবৈধ শরণার্থীদের কিছু অন্তর্বর্তীকালীন কেন্দ্রে আটক রাখা হবে৷ তারপর অস্ট্রিয়ার সম্মতি পেলে তাদের ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে৷ উল্লেখ্য, অস্ট্রিয়া আগেই জার্মানির সীমান্ত থেকে বিতাড়িত শরণার্থীদের গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে৷ জার্মানিতে সোমবারের বোঝাপড়ার পরেও অস্ট্রিয়া সীমান্তে সুরক্ষার উল্লেখ করেছে৷ অর্থাৎ অবৈধ শরণার্থীদের শনাক্ত করে সীমান্তে এমন কেন্দ্রে আটক রাখলেও দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ছাড়া তাদের সেই দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে না, যেখানে তারা নিজেদের নথিভুক্ত করেছিল৷
এমন ‘সমাধানসূত্র' গত কয়েক সপ্তাহের রাজনৈতিক অস্থিরতা এই মুহূর্তে দূর করলেও আরও কিছু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে৷ প্রথমত জার্মানির বর্তমান জোট সরকারে ৩টি শরিক দল রয়েছে৷ গত দুই সপ্তাহে ম্যার্কেল-সোহোফার সংঘাতের সময়ে এসপিডি দল প্রায় নীরব ছিল৷ এবার সেই ‘সমাধানসূত্র' কার্যকর করতে হলে এসপিডি দলেরও সম্মতির প্রয়োজন৷ অথচ ২০১৫ সালে ঠিক একই প্রস্তাব নস্যাৎ করে দিয়েছিল এসপিডি৷ বর্তমান কোয়ালিশন চুক্তির মধ্যে এমন কোনো কর্মসূচির উল্লেখ না থাকায় তারা এই প্রস্তাব কার্যকর করতে বাধ্য নয়৷ সোমবার রাতে তিন দলের বৈঠকের পরে এসপিডি নেত্রী আন্দ্রেয়া নালেস বলেন, এখনো বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়ে গেছে৷ দলের মধ্যে ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে এসপিডি দল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সরকারি জোটের বৈঠকে যোগ দেবে৷
তাছাড়া সেহোফার এ যাত্রা নিজের মুখরক্ষা করতে পারলেও তাঁর সঙ্গে চ্যান্সেলর ম্যার্কেল-এর ব্যক্তিগত সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটেছে৷ সোমবার দুপুরেও সেহোফার গর্জে উঠে বলেছিলেন, ‘‘যাকে আমি চ্যান্সেলর বানিয়েছি, সেই আমাকে বরখাস্ত করবে!'' সরকারের কার্যকালের বাকি সময়ে দুই নেতা কীভাবে একসঙ্গে কাজ করবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে৷ দুই নেতার এই ব্যক্তিগত সংঘাতের ফলে ইউনিয়ন শিবিরের দুই দল – ফেডারেল স্তরে সিডিইউ ও বাভেরিয়ার সিএসইউ পরস্পর থেকে অনেক দূরে সরে গেছে৷ সেই ক্ষত আদৌ দূর করা সম্ভব কিনা, তাও স্পষ্ট নয়৷