রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনে নারীদের বিশেষ অবস্থান
২৬ মার্চ ২০১১নারী মুক্তি, নারী স্বাধীনতার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে যুগ যুগ আগে৷ আর এক্ষেত্রে যাঁরা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর৷
বাবা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের তৈরি শান্তিনিকেতনকে পরবর্তীতে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রসারিত করেন রবীন্দ্রনাথ৷ শান্তিনিকেতন ছিল নোবেলজয়ী এই বাঙালি কবির স্বপ্ন৷ পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যেকার সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন হিসেবে গড়ে তোলা হয় এই প্রতিষ্ঠানকে৷ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে গান, নাচ, এশিয়ার বিভিন্ন ভাষা নিয়ে গবেষক ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি, উচ্চশিক্ষা এবং বিভিন্ন গবেষণার ব্যবস্থা রয়েছে৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়টির উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে, প্রথম থেকেই এখানে মেয়েদের ভর্তি এবং নারীশিক্ষার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হতো, এবং এখনও সেই ঐতিহ্য বজায় রাখা হয়েছে৷ শান্তিনিকেতনে যে ছাত্র নেই তা নয়, তবে উল্লেখযোগ্যভাবে ছাত্রীদের সংখ্যা অনেক বেশি৷
একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিভিন্ন লেখা, গান, চিন্তা-ভাবনায় ছিল নারীমুক্তির চেতনার ছাপ৷ আজ থেকে প্রায় দেড়'শ বছর আগে জন্মগ্রহণ করা এই বাঙালি কবির চিন্তা-ভাবনা ছিল সময়ের তুলনায় অনেক বেশি আধুনিক৷ সেই সময়েই তিনি তাঁর বৌদিদের ঘরের বাইরে বের হতে উৎসাহিত করতেন৷ নিজে সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন, ঘোড়ায় চড়িয়ে বেড়াতে নিয়ে যেতেন৷ এই বছরেই তাঁর সার্ধশতবর্ষ জন্ম জয়ন্তী পালিত হবে৷
বিখ্যাত এই কবির স্বপ্নস্থান শান্তিনিকেতনে কীভাবে গান শেখানো হয়, পড়ানোই বা হয় কীভাবে, জানতে চেয়েছিলাম ড. মমতাজ বেগম মমতার কাছে৷ তিনি শান্তিনিকেতন থেকে পিএইচডি করেছেন৷ জোড়াসাঁকোয় রবীন্দ্র ভারতী থেকে করেছেন অনার্স ও মাস্টার্স৷ তিনি বলেন, সকাল ৭টা থেকে ক্লাস শুরু হয়, চলে ধাপে ধাপে দুপুর ১ টা পর্যন্ত৷ এই পুরো সময়টা চারদিক থেকে ভেসে আসে গান৷ সে এক অন্যরকম অনুভুতি৷ সেখানকার প্রকৃতি এবং পড়ালেখা, গান শেখা সব একসঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়৷ গান শেখা বা তালিমের জন্যে প্রকৃতির সঙ্গে এমন পরিবেশ আর হয়না৷
ড. মমতা রবীন্দ্র ভারতীতে পড়েছেন পাঁচ বছর৷ আর বিশ্ব ভারতী থেকে পিএইচডি করতেও লেগেছে পাঁচ বছর৷ কালজয়ী রবীন্দ্রনাথের পাদচারণা যেইসব জায়গায় ছিল, তিনি তার জীবনের দশটি বছর সেখানে কাটিয়েছেন৷
প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন