রবীন্দ্রনাথের আঁকা বলে চালানো জাল ছবি নিয়ে মামলা
১১ ডিসেম্বর ২০১১নোবেল পুরস্কারজয়ী বাঙালি কবি, ভারত-বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের স্রষ্টা, বিশ্ববরেণ্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫০ জন্মবার্ষিকীতে, লজ্জায় মাথা হেঁট হল বাঙালির৷ খোদ সরকারি চারু-কারু মহাবিদ্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত চিত্র প্রদর্শনীতে রবীন্দ্রনাথের ছবি বলে যে ২০টি ছবি ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে আনা হয়েছিল, তার সবকটিই জাল বলে বিশেষজ্ঞদের পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে৷ আর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার এই মতামত জানার পর ব্যাপক আলোড়ন এখন শিল্পী-বুদ্ধিজীবী এবং প্রশাসনিক স্তরেও, যেহেতু বিষয়টি এখন আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে৷ বস্তুত, বিশিষ্ট ভাস্কর তাপস সরকার জাল ছবির ওই প্রদর্শনীর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করার পরই বিষয়টি সর্বসাধারণের নজরে আসে৷ এবং আদালতের নির্দেশেই ছবিগুলি যাচাই করার দায়িত্ব নেয় আর্কিওলজিকাল সার্ভে৷
ভাস্কর তাপস সরকার ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগকে জানিয়েছেন, কেন তিনি জাল ছবির বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলেন৷ তাপসবাবু জানিয়েছেন, তিনি একা নন, আর্ট কলেজের অনেক অধ্যাপক এবং একাধিক বিশিষ্ট শিল্পী প্রদর্শনীর আগেই ছবিগুলি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন৷ কিন্তু তাদের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে বরং কেন্দ্রীয় তথ্য-সংস্কৃতি মন্ত্রক এবং বাংলার শিল্প-সাহিত্যের কিছু বিশিষ্টজনের নাম প্রদর্শনীর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল, যাতে জালিয়াতিটি মান্যতা পেয়ে যায়৷
৯ ডিসেম্বর কলকাতা হাইকোর্টে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে আদালত আর্কিওলজিকাল সার্ভের রিপোর্টটি গ্রহণ করেছে৷ বাদীপক্ষের আইনজীবী আদালতকে বলেছেন, খাস সরকারি আর্ট কলেজে এই প্রদর্শনী কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়৷ জাল ছবির এক সংগঠিত দুষ্টচক্র সম্ভবত এর পেছনে রয়েছে, যার তদন্ত হওয়া দরকার৷ রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, যে বা যারা বিশ্বকবির সার্ধশতবর্ষে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটাল, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া দরকার৷ সে জন্য সরকারের তরফে যা করা দরকার, করা হবে৷
প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম