1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যৌন শোষণের শিকার পথশিশুরা

সমীর কুমার দে, ঢাকা৩ মে ২০১৬

বাংলাদেশের পথশিশুরা নানা ধরনের নির্যাতন ও শোষণের শিকার৷ বিশেষ করে নারী পথশিশুরা যৌন শোষণের শিকার হচ্ছে৷ তাদের নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা কাজ করলেও পথশিশুদের অবস্থার কোনো উন্নতি হচ্ছে না৷

https://p.dw.com/p/1Ih8j
প্রতীকী ছবি
ছবি: Fotolia/Kitty

তবে আশার কথা, বিদেশি অর্থায়নে পথশিশুদের নিয়ে কিছু বিশেষ প্রকল্পে কাজ শুরু হয়েছে৷ সেখানে পথশিশুরা থাকার পাশাপাশি লেখাপড়াসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন৷ তবে এভাবে ক্ষুদ্র পরিসরে খুব বেশি শিশুর অবস্থার উন্নতি হবে না৷ শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারকেই এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে৷ সামনের বাজেটে পথশিশুদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখার দাবিও করেছেন তাদের অনেকে৷

বাংলাদেশের জাতীয় শিশুনীতিতে ১৪ বছরের কম বয়সি ছেলে-মেয়েদের এবং বাংলাদেশের সংবিধানে ১৮ বছরের কম বয়সি সকলকে শিশু হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে৷সরকারি এক হিসেবে দেখা গেছে, বর্তমানে ৬ লাখ ৭৪ হাজার শিশু রাস্তায় বাস করে, যাদের মধ্যে ঢাকা শহরে বাস করে আড়াই লাখের বেশি৷ ৪ লাখের বেশি শিশু গৃহশ্রমিক হিসেবে কর্মরত৷

রানা

দেশে মোট শিশু রয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি৷ দেশে ১৪টি ব্রোথেলে ২০ হাজার শিশু বাস করছে৷ এ সব শিশু নানাভাবে যৌন শোষণের শিকার৷ শুধু তাই নয়, নারী পথশিশুরাও নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে৷ শিশুর এই বাণিজ্যিক যৌন শোষণ প্রতিরোধে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে তিনটি জাতীয় শিশু অধিকার বিষয়ক সংস্থা নতুন একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু করেছে৷

এই তিনটি সংস্থার একটি ‘কমব্যাটিং কমার্শিয়াল সেক্সুয়াল এক্সপ্লয়টেশন অব চিল্ড্রেন' (সিসেক)৷ এই প্রজেক্টের সমন্বয়ক চৌধুরী মোহাম্মদ তাইয়ুব তাজাম্মুল রানা ডয়চে ভেলেকে বলেন, প্রকল্পটি গত ১ জানুয়ারি থেকে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে৷ ৪২ মাস মাসব্যাপী এ প্রকল্প মিরপুরে ৭০০ রাস্তার শিশু ও টাঙ্গাইলের যৌনপল্লি এলাকার ৩০০ শিশুকে ড্রপইন সেন্টারের মাধ্যমে উন্নয়নের কাজ করবে৷ প্রকল্পটি প্রতিরোধ, প্রচারণা এবং আইনি সহায়তা প্রদানের কাজ করবে৷

পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের পথশিশুদের অধিকাংশই শ্রমিক হিসেবে কাজ করে৷ দেশে বর্তমানে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৬৫ লাখ যা পৃথিবীর মোট শিশু শ্রমিকের ২ দশমিক ৬ শতাংশ৷ শিশুশ্রম নিরসনে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে৷ এই কর্মসূচির আওতায় দু'টি পর্যায়ে ৪০ হাজার শিশু শ্রমিককে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদান ও কয়েক ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে৷ এছাড়া ৫০ হাজার শিশু শ্রমিকের মাতা-পিতাকে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে৷ সরকার এই পথশিশুদের ব্যাপারে আন্তরিক৷

ইমানুল হক চৌধুরী

গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি শিশু রয়েছে৷ তারা স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সব ধরনের সুবিধা থেকেই বঞ্চিত৷ সরকারি হিসেবে বাংলাদেশে ৭৬ শতাংশ ছেলে এবং ৬৪ শতাংশ মেয়ে প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি হয়৷ আর পথশিশুদের বঞ্চনা শুধুমাত্র শিক্ষাক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়, শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, নিরাপদ আবাসস্থল, পুষ্টিসহ সকল ক্ষেত্রেই তারা বঞ্চিত৷ তাদের মধ্যে বাল্যবিবাহ, অল্প বয়সে মাতৃত্ব বরণের হার বেশি৷ মানসিক ও যৌন হয়রানি, অশ্লীল ইভটিজিং-এর শিকারও হয় তারা৷ জমিতে কিষাণী হিসেবে কাজ করানোর পর তাদের অনেক ক্ষেত্রেই পারিশ্রমিক দেয়া হয় না৷

বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের সভাপতি এমরানুল হক চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের দেশের শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে পথশিশুরা৷ এ সকল শিশু রাস্তা ও অন্যান্য স্থানে জিনিসপত্র কুড়িয়ে বেঁচে থাকে৷ বেশিরভাগ পথশিশুর পিতা-মাতা নেই৷ অনেক সময় পিতা-মাতা থাকলেও তাদের পরিচয় পাওয়া যায় না৷’’

তিনি বলেন, আসলে তাদের রাস্তায় জীবন কাটে৷ অনেকের পিতা-মাতা আছে কিন্তু যোগাযোগ নেই৷ রাষ্ট্রের দায়িত্ব এসব পথশিশুর লেখাপড়া, স্বাস্থ্য সেবাসহ সব সুযোগ-সুবিধকার ব্যবস্থা করা৷ আগামী বাজেটে এ ব্যাপারে বরাদ্দ রাখার দাবি করেন তিনি৷ তার মতে, সরকার উদ্যোগ নিলেই এটা সম্ভব৷

সরকার কি পথশিশুদের ব্যাপারে আদতেই আন্তরিক? আপনার কী মনে হয়? লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান