যুদ্ধাপরাধের বিচার না হলে কলঙ্কমুক্ত হওয়া যাবেনা: জাফর ইকবাল
১৬ ডিসেম্বর ২০১১জাফর ইকবাল বলেন, ‘‘আমাদের বিজয় দিবসের যে আনন্দ তার তীব্রতাটুকু পৃথিবীর আর কোনো মানুষ কোনোভাবে অনুভব করতে পারবে বলে মনে করিনা৷ কারণ নয় মাস ধরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং রাজাকার ও আল বদর সদস্যরা যে নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছিল পৃথিবীর ইতিহাসে তার কোনো তুলনা আছে বলে মনে হয়না৷ একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার সব মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিল৷ লুকিয়ে থাকা মুক্তিসেনারাও সেদিন বেরিয়ে এসেছিলেন৷ সাধারণ মানুষ তাদের বুকে জড়িয়ে ধরেছিল৷''
জাফর ইকবাল বলেন, ‘‘এ মুহূর্তে পাকিস্তানের পরিস্থিতি দেখলে বোঝা যাবে যে, পাকিস্তানকে পরাজিত করে বাংলাদেশের স্বাধীন হওয়াটা কত বড় একটা ঘটনা ছিল৷ কেননা বাংলাদেশ যখন সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান তখন ক্রমশ পেছনের দিকে ছুটছে৷''
তিনি বলেন, কৃষি ও শিক্ষাখাতে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে৷ তবে শিক্ষাক্ষেত্রে যদি বাজেট আরও বাড়ানো যেত তাহলে আরও ভাল হতো বলে মনে করেন কম্পিউটার বিজ্ঞানের এই অধ্যাপক৷ জাফর ইকবাল বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা গেছে যে দেশ শিক্ষায় বেশি অর্থ ব্যয় করেছে সে দেশ বেশি উন্নত করেছে৷ এ ব্যাপারে তিনি মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ার উদাহরণ দেন৷
জনপ্রিয় এই শিশু সাহিত্যিক বলেন, বাংলাদেশ সরকার শিক্ষাখাতে জিডিপির ২.৪ শতাংশ খরচ করে৷ কিন্তু এটা হওয়া উচিত ছিল ৪ শতাংশ, যেটা বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলো করে থাকে৷ ‘‘বাংলাদেশ যদি এখন থেকে শিক্ষাখাতে জিডিপির ৪ শতাংশ খরচ করার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ দেখতে পাবো,'' বলেন তিনি৷
জাফর ইকবাল বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হয়েছে এজন্য তিনি খুশি৷ তবে যে গতিতে এই প্রক্রিয়াটা চলা উচিত ছিল সেটা হচ্ছেনা বলে মনে করেন তিনি৷ তবে যুদ্ধাপরাধের বিচারকাজ শেষ হওয়ার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী এবং বলেন, এটা না হলে বাংলাদেশ কলঙ্কমুক্ত হতে পারবেনা৷
সাক্ষাৎকার: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক