যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম ট্রান্সজেন্ডার নারীর মৃত্যুদণ্ড
৪ জানুয়ারি ২০২৩অ্যাম্বার ম্যাকলাফলিনকে ২০০৬ সালে তার সাবেক গার্লফ্রেন্ড বেভারলি গুন্থারকে হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয় মিসৌরির আদালত৷ দুজনের ছাড়াছাড়ি হয়ে যাবার পরও অ্যাম্বার ক্রমাগত উত্যক্ত করতে থাকায় বেভারলি গুন্থার নিরাপত্তা চেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন৷ তাতেও শেষরক্ষা হয়নি৷ ২০০৩ সালে মিসিসিপি নদীর তীরে তার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়৷ ধর্ষণের পর রান্নাঘরের ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় তাকে৷
বিচারকরা সর্বসম্মতিক্রমে অ্যাম্বারলিকে দোষী সাব্যস্ত করলেও মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিষয়ে তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়৷ অচলাবস্থা কাটাতে একজন বিচারক তখন মিসৌরির বিশেষ আইন প্রয়োগের পক্ষে রায় দেন৷ আইনটি ইন্ডিয়ানাতেও কার্যকর রয়েছে৷
রায়ের পরও অ্যাম্বারের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যায়নি৷ ১০ বছর পর, অর্থাৎ ২০১৬ সালে অ্যাম্বার ম্যাকলাফলিনের মৃত্যুদণ্ড নিয়ে নতুন করে শুনানির আদেশ দেয় আদালত৷ তবে ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় আপিল আদালত ২০০৬ সালের আদেশই বহাল রাখে৷ বিবাদীর আইনজীবীরা তখন তার যন্ত্রণাময় শৈশব এবং দীর্ঘদিন ডিপ্রেশনে ভোগাকে অপরাধকর্মের পরোক্ষ কারণ হিসেবে উল্লেখ করে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার আর্জি জানান৷ কিন্তু রিপাব্লিকান গভর্নর মাইক পারসন তাতে সায় না দেয়ায় সে চেষ্টাও বিফলে যায়৷
মঙ্গলবার বোনে টেরে শহরের ডায়াগনোস্টিক অ্যান্ড কারেকশন সেন্টারে প্রাণঘাতী ইনজেকশন দিলে অ্যাম্বার ম্যাকলাফলিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন৷
মিসৌরির কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ৪৯ বছর বয়সি এই ট্র্যান্সজেন্ডার নারী তিন বছর ধরে তার পূর্ণাঙ্গ নারী সত্তায় ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন৷ তবে তিনি কোনো ধরনের হরমোন চিকিৎসা নেননি৷ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগ পর্যন্ত পুরুষ আসামীদের জন্য নির্ধারিত সেলও ছাড়েননি৷
অ্যাম্বার ম্যাকলাফলিনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর এক লিখিত বিবৃতিতে মিসৌরির গভর্নর মাইক পারসন বলেন, ‘‘ ম্যাকলাফলিনের কারণে জীবনের শেষ কয়েকটি বছর মিস গুন্থারকে ভীষণ আতঙ্কের মধ্যে কাটাতে হয়েছে৷ অবশেষে তার পরিবার এবং অন্যান্য ভালোবাসার মানুষেরা একটু শান্তি পেলেন৷''
এসিবি/ কেএম (এপি, এএফপি)