২০১৮ সালের আগে কোটা বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নুরুল হক নূর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসাবে। তিনি তার সেই সফল আন্দোলন ও জনপ্রিয়তার কারণে ডাকসুর ভিপিও নির্বাচিত হয়েছিলেন। এখন তিনি গণ অধিকার পরিষদ নামে একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান। এই রাজনৈতিক দলটি তিনিই গঠন করেছিলেন।
তিনি বলেন, "২০১৮ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলনে সাধারণ ছাত্রদের সরাসরি একটা হিস্যার বিষয় ছিলো। কোটা উঠে গেলে তাদের চাকরির সুযোগ হবে। কিন্তু রাজনৈতিক আন্দোলন তেমন নয়। এখানে নির্যাতনের ভয়সহ নানা ভয় থাকে। আর আন্দোলন থেকে ওইভাবে সরাসরি লাভ হয় না, বৃহত্তর কোনো লাভ হয়। আর সামাজিক আন্দোলনে সরকারের দমন পীড়ণ তেমন থাকে না। ফলে সবাই অংশ নেয়। কিন্তু রাজনৈতিক আন্দোলনে গ্রেপ্তার, নির্যাতনের ভয় থাকে।”
নূর আরো বলেন, "এরশাদের পতনের পর যে সরকারই ক্ষমতায় এসেছে তারা গণতন্ত্রের নামে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে, দমন পীড়ণ চালিয়ে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করেছে। ফলে বাংলাদেশের যে দুইটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের যে বলয় তাদের প্রতি দেশের সাধারণ মানুষ আগ্রহ বা আকর্ষণ বোধ করছে না। ২০১৮ সালে যখন বিরোধী দল রাজপথে দাঁড়াতে পারছিল না, তখনও কিন্তু আমাদের কোটাবিরোধী আন্দোলনে মানুষ রাস্তায় নেমেছে, সমর্থন দিয়েছে।”
তিনি মনে করেন, বিরোধী দলের কর্মসূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রে দুর্বলতা আছে। তারা জনগণের ভাষা ধরতে পারছে না। তার মতে, "বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, হামলা, মামলা এগুলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে, তৃতীয় বিশ্বে বা এই উপমহাদেশে একটি নিয়মিত ঘটনা। সেই ক্ষেত্রে বিরোধী দল যদি শুধু তার রাজনৈতিক এজেন্ডায় পড়ে থাকে, যদি সামাজিক ইস্যু, জনগণের ইস্যুকে রাজনৈতিকভাবে সামনে আনতে না পারে, কাজে লাগাতে না পারে তাহলে তো ওইভাবে জনগণের সমর্থন পাবে না।”
রাজপথের নেতৃত্বেও ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করেন কোটাবিরোধী আন্দোলনের এই সাবেক নেতা। তিনি বলেন, "মানুষ তো নেতার পিছনে রাজপথে নামবে। কিন্তু গত ৮-১০ বছর ধরে যাদের মানুষ নেতা হিসেবে চেনে তাদের তো প্রতিকূল পরিবেশে মানুষ রাজপথে দেখছে না।”