যখন যখন ডব্লিউএইচও-র বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ‘বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও৷ এর আগেও নানা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি জরুরি অবস্থা জারি করে৷
জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা
বিশ্বের কোথাও মরণব্যাধির প্রাদুর্ভাব হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একদল বিশেষজ্ঞ পরিস্থিতি বিবেচনা করে ‘পাবলিক হেল্থ ইমার্জেন্সি অব ইন্টারন্যাশনাল কনসার্ন’ (পিএইচইআইসি) ঘোষণা করেন৷ ২০০৫ সাল থেকে পিএইচআইসি ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ছয় বার বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে৷
করোনা ভাইরাস
উহান শহরে প্রাদুর্ভাবের পর করোনা ভাইরাস দ্রুত আশেপাশের নগরীতে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শুরুতে চীনে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে৷ কিন্তু আরো কয়েকটি দেশে এই ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী পাওয়ার পর বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়৷
সোয়াইন ফ্লু
২০১৯ সালে মেক্সিকোর ভেরাক্রুজ নগরীতে এইচ১এন১ ইনফ্লুয়েঞ্জার (সোয়াইন ফ্লু নামে পরিচিত) প্রাদুর্ভাব হয়৷ যা পরে আরো কয়েকটি দেশে জড়িয়ে পড়ে৷ সোয়াইন ফ্লুতে প্রায় পৌনে তিন লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হয়৷ যদিও আনুষ্ঠানিক হিসেবে মৃতের সংখ্যা সাড়ে ১৮ হাজার বলা হয়৷
পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলা
পশ্চিম আফ্রিকার তিন দেশ সিয়েরা লিওন, গিনি ও লাইবেরিয়ায় ২০১৩ ও ২০১৬ সালে ইবোলা ভাইরাস মারাত্মক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল৷ ইবোলায় আক্রান্ত হয়ে দেশগুলোতে ১১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়৷
পোলিও
বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ এখন পোলিও মুক্ত৷ কিন্তু পাকিস্তান সরকার দেশজুড়ে পোলিও প্রতিরোধে ব্যর্থ হলে ২০১৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাধ্য হয়ে রোগটি আবারও ছড়িয়ে পড়া নিয়ে ‘পাবলিক হেল্থ ইমার্জেন্সি অব ইন্টারন্যাশনাল কনসার্ন’ জারি করে৷ পাকিস্তান, সিরিয়া ও ক্যামেরনে এখনো শিশুদের পোলিও আক্রান্ত হতে দেখা যায়৷ বিশ্বে বর্তমানে পোলিও আক্রান্ত ৪১৭ শিশুর মধ্যে এক-পঞ্চমাংশের বেশি পাকিস্তানি৷
জিকা
২০১৬ সালে জিকা ভাইরাস নিয়ে ডব্লিউএইচও ‘পাবলিক হেল্থ ইমার্জেন্সি অব ইন্টারন্যাশনাল কনসার্ন’ জারি করে৷ তার এক বছর আগে ব্রাজিলে এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হয়, যা পরে আরো ৬০টির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়ে৷ এমনিতে প্রাণঘাতী না হলেও অন্তঃস্বত্তা নারী জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে গর্ভের শিশু মাইক্রোসেফালিতে আক্রান্ত হতে পারে৷ ওই সময় প্রায় ২৩০০ শিশু মাইক্রোসেফালি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিল৷
কঙ্গোতে ইবোলা
২০১৯ সালের জুলাই মাসে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে নতুন করে ইবোলার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে৷ ২০১৮ সালের অগাস্ট থেকে ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত কঙ্গোতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ইবোলা রোগী সনাক্ত হয়৷ যাদের মধ্যে ২২৩৬ জনা মারা গেছেন৷