এসিপিডির নির্বাচনি পরিকল্পনা
১৩ আগস্ট ২০১৭সামাজিক গণতন্ত্রীরা তাদের নির্বাচনি প্রচার অভিযানের যে পরিকল্পনা ব্যক্ত করেছে, তাতে প্রাথমিকভাবে দলের নীতিসমূহের উপর জোর দেওয়া হবে; দ্বিতীয় স্থানে থাকবেন চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী মার্টিন শুলৎস৷ এসপিডি এই প্রচার অভিযানে মোট দু'কোটি ৪০ লক্ষ ইউরো ব্যয় করতে চলেছে৷
চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারে সামাজিক গণতন্ত্রীরা খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রীদের সহযোগী৷ কিন্তু নির্বাচনের ক্ষেত্রে দু'দল পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী – কাজেই এসপিডি দল তাদের নির্বাচনি প্রচার অভিযানে নিজেদের স্বাতন্ত্র্যের উপরেই বেশি জোর দেবে৷ এসপিডি দলের মহাসচিব হুব্যার্টুস হাইল মঙ্গলবার পাঁচটি নির্বাচনি পোস্টারের কথা বলেন, যেগুলিতে পরিবারবর্গের জন্য সুযোগসুবিধা, অবৈতনিক শিক্ষা, পর্যাপ্ত অবসরভাতা, প্রযুক্তিগত নবায়ন ও নারী-পুরুষের সমান পারিশ্রমিকের মতো সামাজিক গণতন্ত্রীদের বুনিয়াদি নীতিগুলিকে তুলে ধরা হবে৷
একটি পোস্টারে কারখানার এক নারীশ্রমিকের ছবির নীচে লেখা রয়েছে: ‘যে ১০০ শতাংশ কাজ করে, সে ২১ শতাংশ কম আয় করতে পারে না৷' জার্মানিতে মহিলারা যে একই কাজের জন্য পুরুষদের চেয়ে গড়ে ২১ শতাংশ কম রোজগার করে থাকেন – তারই প্রতি ইঙ্গিত৷
এসপিডি-র প্ল্যাকার্ডগুলি থেকে অভিবাসন, উদ্বাস্তু বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো বিতর্কিত বিষয়গুলি অনুপস্থিত থাকছে বটে, কিন্তু জার্মানির ভবিষ্যৎ সংক্রান্ত সব প্রসঙ্গই নির্বাচনি অভিযানে আলোচিত হবে, বলে হাইল সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেছেন৷ এসপিডি দল প্রতিদ্বন্দ্বিকে যথেষ্ট আক্রমণ না করে, মানুষজনকে খুশি রাখার প্রচেষ্ট করছে, এই অভিযোগের উত্তরে হাইল বলেন যে, এসপিডি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সমস্যাগুলির মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে৷ ‘‘আমরা এমনভাবে প্রচার চালাব না যাতে লোকে ভয় পান অথবা তাদের মেজাজ খারাপ হয়'', বলেন হাইল৷
রাজনৈতিক পুনরুত্থান?
মঙ্গলবার যে নির্বাচনি প্রচার পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়, তার কেন্দ্রবিন্দু হবে দলীয় নেতা মার্টিন শুলৎস-এর একটি দেশব্যাপি সফর – যা আগস্ট মাসের দ্বিতীয়ার্ধে শুরু হবে৷ শুলৎস প্রায় ২০,০০০ কিলোমিটার সফর করে ৬০টি স্থানে ভাষণ দেবার পরিকল্পনা করছেন৷ এসপিডি দল বর্তমানে রক্ষণশীল দলগুলির চেয়ে ১৪ থেকে ১৮ শতাংশ পিছিয়ে আছে, বলে বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে৷
ইউরোপীয় সংসদের সাবেক সভাপতি শুলৎস যখন এ বছরের সূচনায় সিগমার গাব্রিয়েলের পরিবর্তে দলীয় সভাপতি ও যুগপৎ চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হন, তখন স্বল্পকালের জন্য জরিপে এসপিডি দলের জনসমর্থন লক্ষণীয়ভাবে বেড়ে যায় – সাংবাদিকরা যার নাম দেন ‘শুলৎস এফেক্ট'৷ শুলৎসের দেশ জুড়ে সফর ও বক্তৃতার মাধ্যমে হয়ত সেই ‘শুলৎস প্রভাব'-এর পুনরাবৃত্তি করার আশা করছে এসপিডি দল৷
‘‘নির্বাচনি প্রচার অভিযান এবার বাস্তবিক চালু হচ্ছে'', বলেছেন দলের মহাসচিব হুব্যার্টুস হাইল: ‘‘শেষ দৌড়টাই গুরুত্বপূর্ণ আর আমরা তার জন্য ভালোমতো প্রস্তুত৷''
ম্যার্কেলের ছায়া?
ইতিহাস থেকে দেখা যাচ্ছে, ম্যার্কেলের সিডিইউ দলের সঙ্গে জোট সরকারে সংশ্লিষ্ট দলগুলির তার পরের নির্বাচনেই সাধারণত ভরাডুবি হয়ে থাকে – ২০১৩ সালে মুক্ত গণতন্ত্রী এফডিপি দলের যা হয়েছিল৷ এফডিপি দল সেবার পাঁচ শতাংশ ন্যূনতম ভোটের বেড়া পার হতে পারেনি৷ এবার এসপিডি দলেরও সেই অবস্থা হতে পারে, কেননা এফডিপি এখন জরিপে ৯শতাংশ ভোটে; এমনকি সবুজদের সঙ্গেও সিডিইউ-সিএসইউ দলের জোট সরকার গঠনের সম্ভাবনার কথা বলেছেন কেউ কেউ৷ অপরদিকে অভিবাসন বিরোধী ও জাতীয়তাবাদী এএফডি (‘জার্মানির জন্য বিকল্প') দল প্রায় সব দলের কাছ থেকেই সমর্থক ভাঙিয়েছে – কাজেই এসপিডি-কে সে ব্যাপারটারও মোকাবিলা করতে হবে৷
সামাজিক গণতন্ত্রীরা এবার নির্বাচনি প্রচারে সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করছে৷ সিডিইউ দল দু'কোটি ইউরো মতন খরচা করছে; ছোট ছোট দলগুলির ব্যয় ২০ থেকে ৩০ লাখ৷
এসি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)
জার্মানির সংসদ নির্বাচন নিয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে লিখুন নীচের ঘরে৷