ম্যার্কেলের দলে বিভ্রান্তি
২০ এপ্রিল ২০২১সোমবারের দিনটি জার্মানির দলীয় রাজনীতি জগতে একাধিক কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকবে৷ আগামী সেপ্টেম্বর মাসের সাধারণ নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের উপর এ দিনের সিদ্ধান্ত অনেকটাই নির্ভর করবে৷ একদিকে বেড়ে চলা জনপ্রিয়তার মুখে সবুজ দল এই প্রথম চ্যান্সেলর পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে৷ অন্যদিকে চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের ইউনিয়ন শিবিরের মধ্যে অন্তর্কলহ আরও জটিল হয়ে উঠেছে৷ ফলে চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ায় ঐক্যের বদলে ফাটল আরও গভীর হয়েছে৷
জার্মানির সবুজ দলের প্রথম চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হচ্ছেন আনালেনা বেয়ারবক৷ পরিকল্পনা অনুযায়ী সোমবার ৪০ বছর বয়সি এই তরুণ নেতার নাম ঘোষণা করেন দলের সহ-সভাপতি রোব্যার্ট হাবেক৷ দুই শীর্ষ নেতা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন৷ আগামী জুন মাসে দলীয় সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে বেয়ারবকের ‘অভিষেক' হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ বর্তমান জনমত সমীক্ষার প্রবণতায় বড় পরিবর্তন না হলে সবুজ দল আগামী নির্বাচনের পর যে কোনো জোট সরকারে শরিক হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ এমনকি সবচেয়ে বেশি আসন পেলে চ্যান্সেলর পদও দলের ঝুলিতে আসতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে ফেডারেল জার্মানির ইতিহাসে এই প্রথম দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তি ক্ষমতাকেন্দ্রের বাইরে থাকতে বাধ্য হবে৷
সবুজ দলের এমন সুবর্ণ সুযোগ আরও সম্ভাব্য করে তুলছে বিদায়ী চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের ইউনিয়ন শিবিরের তীব্র অন্তর্কলহ৷ জাতীয় স্তরে সিডিইউ দল ও বাভেরিয়ার সিএসইউ দলের শীর্ষ দুই নেতাই চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হতে বদ্ধপরিকর৷ সিএসইউ দলের নেতা ও বাভেরিয়ার মুখ্যমন্ত্রী ইউনিয়ন শিবিরে বিপুল জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে সেই দাবি থেকে সরে দাঁড়াতে নারাজ৷ সোমবার তিনি সিডিইউ দলের হাতেই সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছেন৷
অন্যদিকে সিডিইউ দলের শীর্ষ নেতা ও নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আরমিন লাশেটও নিজের জমি ছাড়তে নারাজ৷ সোমবার গভীর রাতে তিনি দলের পরিচালনা মণ্ডলীর সমর্থন আদায় করেছেন৷ মঙ্গলবার ভোররাতে ৩১ জন সদস্য তার পক্ষে এবং নয় জন স্যোডারের পক্ষে ভোট দিয়েছেন৷ ছয় জন ভোটদানে বিরত ছিলেন৷ ফলে প্রথা অনুযায়ী দুই দলের সম্মিলিত চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হিসেবে তার নামই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হতে পারে৷ তবে দলের তৃণমূল স্তরে লাশেট কতটা গ্রহণযোগ্য হবেন, সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে৷ সোমবার রাতের বৈঠকে যোগ দিলেও ম্যার্কেল নীরব ছিলেন৷ তিনি আগাগোড়া বিষয়টি থেকে নিজেকে দূরে রাখতে চেয়েছেন৷
লাশেট শেষ পর্যন্ত নিজেকে ম্যার্কেলের সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে আসরে নামতে সমর্থ হলেও নিজের দল, ইউনিয়ন শিবির ও ভোটারদের সমর্থন কতটা আদায় করতে পারবেন, এই মুহূর্তে সে বিষয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে৷ সেই কাজে ব্যর্থ হলে দীর্ঘ ১৬ বছর পর ইউনিয়ন শিবির সংসদে বিরোধী আসনে বসতে পারে৷ অথবা সবুজ দলের নেতৃত্বে সম্ভাব্য কোনো জোট সরকারের ছোট শরিকও হতে পারে বলে অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)