ইইউ-ব্রিটেন বোঝাপড়ার ক্ষীণ আশা
৪ ডিসেম্বর ২০২০বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত আলোচনা চালিয়েও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্রিটেনের মধ্যে ভবিষ্যৎ বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয় নি৷ ইইউ থেকে পাকাপাকি বিদায়ের মাত্র চার সপ্তাহ আগে এমন অনিশ্চয়তার ফলে দুশ্চিন্তা বেড়ে চলেছে৷ শেষ প্রহরে ঐকমত্যের আশাও সেইসঙ্গে কমে চলেছে৷ তবে দুই পক্ষ এখনো হাল ছেড়ে দেয় নি৷
ইইউ পক্ষের প্রধান মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে শুক্রবার ব্রাসেলসে ২৭টি ইইউ দেশের রাষ্ট্রদূতদের ব্রিটেনের সামনে আলোচনার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে নিজস্ব বক্তব্য পেশ করছেন৷ তিনি ছয় দিন ধরে লন্ডনে আলোচনা চালিয়ে তেমন কোনো অগ্রগতির মুখ দেখেন নি৷ বৃহস্পতিবার ইইউ প্রতিনিধিদলের সদস্য স্টেফান ডে রিংক জানিয়েছিলেন, যে দুই পক্ষের মধ্যে এখনো মৌলিক মতপার্থক্য রয়ে গেছে৷ তাঁর মতে, দুই পক্ষের কঠিন পরিশ্রম সত্ত্বেও ফলাফল এখনো অনিশ্চিত৷ তবে ম্যারাথন দৌড়ের মতো একেবারে শেষ মুহূর্তে সাফল্যের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন নি তিনি৷ ইইউ কূটনীতিকদের মতে, ব্রিটেনকে আর নতুন করে কোনো ছাড় দেবার সুযোগ প্রায় ফুরিয়ে এসেছে৷
এদিকে ব্রিটেনের সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ এনেছে৷ সরকারি সূত্রের দাবি, ইইউ একেবারে শেষ মুহূর্তে নতুন বিষয় অন্তর্গত করছে৷ এমন পরিস্থিতিতে সাফল্যের সম্ভাবনা কমে চলেছে বলে সরকার মনে করছে৷ ইইউ অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷
দুই পক্ষের মধ্যে বোঝাপড়ার পথে আরও একটি বাধার আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে৷ ইইউ-র প্রতিবাদ সত্ত্বেও ব্রিটেনের সরকার আগামী সপ্তাহে সংসদে বিতর্কিত একটি আইন অনুমোদন করাতে চায়৷ সেই আইন কার্যকর হলে ব্রেক্সিট চুক্তির শর্ত ভাঙা হবে৷ সে ক্ষেত্রে উত্তর আয়ারল্যান্ড ও আইরিশ প্রজাতন্ত্রের স্থলসীমানায় জটিলতা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে৷ ব্রিটিশ সংসদে নতুন আইনের খসড়া পেশ করে ব্রেক্সিট চুক্তির আরও কিছু শর্ত লঙ্ঘনের উদ্যোগের পূর্বাভাষ দিচ্ছে বরিস জনসনের সরকার৷ সে ক্ষেত্রে ইইউ-ব্রিটেন বাণিজ্য চুক্তি সম্ভব হলেও ইইউ পার্লামেন্টে অনুমোদন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে৷
ব্রিটেনের সার্বিক মনোভাবের ফলে কয়েকটি ইইউ দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে৷ ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডস চুক্তির স্বার্থে ব্রিটেনকে কোনো বড় ছাড় দিতে প্রস্তুত নয়৷ বার্নিয়ে যাতে নিজের ক্ষমতার সীমা অতিক্রম না করেন, সে বিষয়ে কড়া নজর রাখছে এই দুই দেশ৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)