জার্মান মেয়েটি বাড়ি ফিরতে চায়
২৪ জুলাই ২০১৭লিন্ডার বয়স আজ ১৬৷ এক বছর আগে সে ড্রেসডেনের কাছে একটি শহরে তার বাড়ি থেকে পালিয়ে ইরাকে যায় ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে যোগ দিতে৷ রবিবারে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে লিন্ডা তার ঐ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অনুশোচনা প্রকাশ করেছে৷
লিন্ডাকে আপাতত বাগদাদের কাছে একটি সামরিক হাসপাতালে রাখা হয়েছে কেননা সে জনতার রোষের শিকার হতে পারে, এমন আশঙ্কা ছিল৷ জার্মানির স্যুডডয়চে সাইটুং পত্রিকা ও এনডিআর এবং ডাব্লিউডিআর টেলিভিশন সংস্থার হয়ে একজন ইরাকি রিপোর্টার লিন্ডার সঙ্গে কথা বলেন৷
‘‘আমি শুধু এখান থেকে চলে যেতে চাই'', লিন্ডা ডাব্লিউ. তার সাক্ষাৎকারে বলেছে: ‘‘আমি যুদ্ধ থেকে চলে যেতে চাই, এত সব অস্ত্রশস্ত্র থেকে, এই আওয়াজ থেকে৷''
লিন্ডা রিপোর্টারদের বলে যে, তুরস্ক ও সিরিয়া হয়ে ইরাক পৌঁছতে তার এক মাস সময় লেগেছিল৷ সে গিয়েছিল একজন আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করতে৷ সে মোসুলে যেতে চায়নি, কিন্তু তাকে জোর করে সেখানে পাঠানো হয় ও এর কিছু পরেই তার স্বামী যুদ্ধে প্রাণ হারায়৷
লিন্ডা বলে, সে টাইগ্রিস নদীর কাছে একটি ভূগর্ভস্থ ভাঁড়ারে লুকিয়ে ছিল, যেখানে ইরাকি সৈন্যরা তাকে খুঁজে পায় ও সংখ্যালঘু ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের সদস্য বলে ধরে নেয় – কেননা আইএস সদস্যরা প্রায়ই ইয়াজিদি মহিলাদের যৌন ক্রীতদাস হিসেবে ব্যবহার করত৷ তাকে ইয়াজিদি হিসেবে গণ্য করায় লিন্ডা দৃশ্যত রুষ্ট হয়ে বলে, ‘‘আমি জার্মান৷''
সহযোগিতা করতে রাজি
সাক্ষাৎকারের সময় অবধি লিন্ডাকে জেরা করা হয়নি, তবে সে ইরাকি রিপোর্টারটিকে বলে যে, সে তদন্তকারীদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত৷ একজন ইরাকি বিচারক প্রথমে লিন্ডার ডাক্তারি চিকিৎসার নির্দেশ দেন৷
লিন্ডা জানায় যে, সে ভালোই আছে, যদিও তার বাঁ উরুতে গোলার টুকরো লেগে একটি ক্ষত আছে ও ডান হাঁটুতে একটা চোট আছে৷ ‘‘একটা হেলিকপ্টার আক্রমণ থেকে ওটা হয়'', বলে লিন্ডা রিপোর্টারকে জানায়৷
সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারটি একজন সৈনিক, জনৈক মার্কিন প্যারামেডিক ও তদন্তকারী কৌঁসুলির উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয়৷ দৃশ্যত লিন্ডাকে প্রথমে একটি সাধারণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেন যে, তারা লিন্ডার নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে পারবেন না, কেননা আইএস-এর শিকার হয়েছে, এমন অনেকের ঐ হাসপাতালেই চিকিৎসা চলেছে৷
আরেক জার্মান ‘আইএস পত্নী' ফতিমাকেও আহত অবস্থায় ঐ হাসপাতালে রাখা হয়েছে৷ ফতিমা ১৫ বছর বয়সে চেচনিয়া থেকে অস্ট্রিয়ায় পালায় ও মোগামেদ নামের এক জার্মান নাগরিককে বিবাহ করে৷ পরে উভয়ে তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে আইএস-এ যোগদান করে ও মোসুল যাত্রা করে৷ ফতিমা ইরাকি রিপোর্টারটিকে বলে যে, তার স্বামী বেশ কয়েক মাস আগেই নিহত হয়েছে ও মিত্রজোটের একটি বিমান আক্রমণের পর তার সন্তানদেরও কোনো খোঁজখবর নেই৷
লিন্ডার ভবিষ্যৎ
লিন্ডার বোন মিরিয়াম রিপোর্টারদের বলেছেন, লিন্ডা যে বেঁচে আছে, তাতেই তিনি সুখি৷ শনিবার জার্মান সরকারি কৌঁসুলি লোরেনৎস হাজে নিশ্চিত করেন যে, লিন্ডাকে ইরাকে খুঁজে পাওয়া গেছে ও বাগদাদের জার্মান কনস্যুলেটের তরফ থেকে তাকে সাহায্য করে হচ্ছে৷
লোরেনৎস বলেন, লিন্ডার ইরাকে বিচার হওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে, যেক্ষেত্রে তাকে সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দেওয়া হতে পারে৷ অথবা বিদেশি হিসেবে লিন্ডাকে ইরাক থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে৷
অ্যালিস্টেয়ার ওয়াল্শ/এসি