মোদী সরকারের বাজেট
২৫ জুন ২০১৪মোদী সরকারের প্রথম কেন্দ্রীয় বাজেট সংসদে পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি আগামী ১০ই জুলাই৷ বাজেট তৈরির প্রস্তুতি চলেছে পুরোদমে, যেহেতু ক্ষমতায় আসার মাস দেড়েকের মধ্যেই বাজেট পেশ করতে হবে৷
বলা বাহুল্য, সরকার বদলের সঙ্গে অগ্রাধিকারেও বদল আসে৷ তারপরেও আসন্ন কেন্দ্রীয় বাজেটে ব্যয়বরাদ্দ ও অগ্রাধিকারের প্রকৃত পরিবর্তনের পুরো প্রতিফল নাও থাকতে পারে, এমনটাই মনে করছে অর্থনৈতিক মহল৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অর্থ ও পরিকল্পনা কমিশনসহ প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও আমলাদের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন প্রায় রোজই৷ কারণ একটাই – হাতে সময় নেই৷ তাঁদের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও ব্যয়বরাদ্দ সম্পর্কে তাঁদের নিজস্ব বক্তব্য জানতে চান৷ জানতে চান উন্নয়নী প্রকল্পগুলির সময়-ভিত্তিক রূপায়ন এবং সেই পথে বাধাবিপত্তি কী হতে পারে এবং সেগুলি দূর করার উপায়৷
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিপুল জনাদেশের ওপর দাঁড়িয়ে মোদীর কিন্তু জনমোহিনী পথে না হাঁটার সম্ভাবনাই বেশি৷ এর কারণটাও অত্যন্ত সহজ৷ বিগত সরকারের আমলে মুখ থুবড়ে পড়া অর্থনীতির হাল ফেরাতে হলে কড়া সিদ্ধান্ত নেয়া ছাড়া উপায় নেই৷ সেই অভিমুখে বাজেট পেশের আগেই ১৪ শতাংশের বেশি রেল ও মাল ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি৷ খুব শীঘ্রই বাড়তে চলেছে গ্যাসের দাম৷ এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী, তেলমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের মধ্যে উচ্চস্তরের বৈঠকে স্থির হয়েছে যে, গ্যাসের দাম এমনভাবে বাড়ানো হবে যাতে মুদ্রাস্ফীতির ওপর বাড়তি চাপ না পড়ে এবং বিদ্যুৎ ও সারে ভরতুকির পরিমাণ না বাড়ে৷ এছাড়া কেন্দ্রীয় বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি রাশ টানতে কিছু দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপের ইঙ্গিত থাকতে পারে৷ পাশাপাশি ঢেলে সাজানো হবে সরবরাহ ও বণ্টন ব্যবস্থা৷ আর আমজনতার রুজি-রোজগার বাড়ানোর সংস্থানকে দেয়া হতে পারে অগ্রাধিকার৷
অন্যদিকে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা কতটা মোদী সরকারের প্রথম বাজেটে প্রকাশ পাবে? মধ্যবিত্তদের করমুক্ত আয়ের ঊর্ধসীমা বাড়ানো হবো মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাল রেখে৷ বিনিয়োগে উৎসাহ জোগাতে শুল্কে কিছুটা ছাড়, অভ্যন্তরীণ ও সীমা শুল্কে পরোক্ষ কর-কাঠামোয় সামান্য পরিবর্তন, পণ্য ও পরিষেবা কর জিএসটি-র রূপায়ন ত্বরান্বিত করা এবং বিজেপির নির্বাচনি ইশতাহার অনুযায়ী ব্যয়বরাদ্দ বাড়ানো হতে পারে শিক্ষা, দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য সুবিধা ও শহরাঞ্চল প্রকল্পে৷ এই যেমন পাবলিক টয়লেট, পল্লি-আবাসন, রাস্তা, বিশেষ করে ম্যানুফ্যাকচারিং অঞ্চল গড়ে তোলা ইত্যাদি ক্ষেত্রে৷ এ রসঙ্গে যুক্ত হবে কৃষি, শিল্প ও অবকাঠামোর প্রসার৷ উন্নয়নের দিক থেকে শহর ও গ্রামের ব্যবধান যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা হবে৷ আসন্ন বাজেটে এ সবেরই একটা সবিস্তার রূপরেখা তুলে ধরা হবে, এমনটাই আশা করছে নাগরিক সমাজ৷
তবে বর্তমান বাজেটে আমূল কোনো পরিবর্তনের কথা না থাকার সম্ভাবনাই বেশি৷ কারণ এ বছরের ১৭ই ফেব্রুয়ারি পূর্বতন সরকার ২০১৪-১৫ সালের চার মাসের অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করেছিলেন৷ আর এবার, মোদী সরকার অবশিষ্ট আট মাসের বাজেট পেশ করবেন৷