মোদী-ট্রাম্প কথা
৭ জানুয়ারি ২০২০নরেন্দ্র মোদী ফোন করলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে৷ প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো বা পিআইবি জানিয়েছে, দুই নেতা নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন৷ তাঁরা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরালো করার কথা বলেছেন৷ মোদী জানিয়েছেন, দুই দেশের স্বার্থ যেখানে জড়িত, সেই সব ক্ষেত্রে তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে চান। আর গত কয়েক বছরে দুই দেশের সম্পর্ক যেভাবে আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে ট্রাম্প তাতে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, সম্পর্কের আরও উন্নতি করতে হবে৷
কিন্তু মোদী-ট্রাম্প কথা হয়েছে এমন এক সময়ে, যখন ইরানে মার্কিন ড্রোন হানায় সোলেইমানির মৃত্যু হয়েছে এবং সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফলে দুই নেতার আলোচনায় ইরান প্রসঙ্গ আসাটা স্বাভাবিক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের মতে, ''ইরান প্রসঙ্গ আলোচনায় উঠে আসাটা খুবই স্বাভাবিক৷'' ডয়চে ভেলেকে তিনি জানিয়েছেন, ''ইরানের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক রয়েছে৷ আমেরিকার আক্রমণে নিহত সোলেইমানির মৃত্যুর পর ইরাক পর্যন্ত ইরানের পাশে দাঁড়িয়েছে৷ এই পরিস্থিতি ভারতের পক্ষে অস্বস্তির৷ কারণ, একদিকে ইরান, অন্যদিকে আমেরিকা, দুই দেশের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক আছে৷ সেটা বজায় রেখেই চলতে হবে৷ ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হলে তেল নিয়ে ভারত সমস্যায় পড়বে৷ আবার আমেরিকাকেও চটানো যাবে না৷ তাঁদের বোঝাতে হবে ভারতের অসুবিধার কথা৷''
ভারতের কাছে ইরানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রখাটা খুবই জরুরি৷ কারণ, এর সঙ্গে ভারতের বানিজ্যিক স্বার্থ রয়েছে৷ ইরান ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণে চা, চাল ও অন্য জিনিস নেয়৷ ইরান থেকে তেল পাওয়াটা ভারতের কাছে খুবই জরুরি৷
পরিকল্পনা বিশারদ ও লেখক অমিতাভ রায় ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''ইরানের চাবাহার বন্দরে বিপুল বিনিয়োগ, তাদের সহায়তায় পাকিস্তানকে এড়িয়ে আফগানিস্তান সহ পশ্চিম এশিয়ায় বানিজ্যিক যোগযোগ বাড়ানো এবং অবশ্যই তেল আমদানি করা ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ ট্রাম্প ইরানকে একঘরে করে রাখার নীতি নিয়েছেন৷ তাই নয়াদিল্লিকে তেহরানের থেকে দূরে রাখতে চাইছে তারা৷ আমেরিকা চায়, ইরান নয়, পুরো তেল সৌদি আরব থেকে কিনুক ভারত৷ এই অবস্থায় ভাপরত ও আমেরিকা নিজেদের জাতীয় স্বারথ বজায় রেখে বারসাম্য বজায় রাখতে চাইবে৷''
ফলে এই প্রেক্ষাপটে মোদী-ট্রাম্প কথা আলাদা মাত্রা পেয়ে যাচ্ছে৷