মেয়েদের সাফ ফুটবল ‘ডাবল’ : বর্ণে বর্ণে ছবিতে...
আসরের আগে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ পাননি, বেতনও পাননি৷ তাতে কী, পাকিস্তান, ভুটান, ভারত আর নেপালের বাধা পেরিয়ে হিমালয়ের দেশ থেকে সাফ ফুটবলের টানা দ্বিতীয় ট্রফি জিতে এনেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা৷ তাদের জয়যাত্রা দেখুন ছবিঘরে ...
এভাবেও ফিরে আসা যায়
পাকিস্তানের বিপক্ষে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ১-০ গোলে পিছিয়ে বাংলাদেশ৷ ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগে শামসুন্নাহার জুনিয়র করলেন দুর্দান্ত এক গোল৷ শেষ মিনিটের ওই গোলেই অক্সিজেন পেলো বাংলাদেশ৷ অথচ ম্যাচের ১০ মিনিটে পাকিস্তানের অধিনায়ক মারিয়া জামিলা খানের সঙ্গে ধাক্কা লেগে চোখের নিচে কেটে যায় শামসুন্নাহারের৷ কপালে ব্যান্ডেজ বেঁধে খেলেন এই ফরোয়ার্ড৷ এভাবেও যে ফিরে আসা যায়, মনে করিয়ে দিলেন শামসুন্নাহার৷
সিনিয়র-জুনিয়রের সেতু বন্ধনে ভারতকে হারানো
পাকিস্তানের ড্র করার পরের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে প্রথম গোল উদযাপনের মধ্যমণি ডিফেন্ডার আফঈদা খন্দকার। এই ছবি দেখে কে বলবে, এক দিন আগেও দলের মধ্যে ঘটে গেছে বিদ্রোহ, যার কেন্দ্রে দলে সিনিয়র-জুনিয়র দেওয়াল। দেওয়াল তুলে দিয়েছেন কোচ পিটার বাটলার। মাসুরা, মারিয়া, তহুরাদের উল্লাসের সঙ্গী আফঈদার স্নিগ্ধ হাসিটাই বলে দিচ্ছিল এই দলটা ভালোবাসার এক সুতোয় বাঁধা।
তহুরার হ্যাটট্রিকে উড়ে গেল ভুটান
ভুটানকে সেমিফাইনালে বেশ সমীহই করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, ভুটানের রক্ষণ দেওয়াল ততই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে। ভুটানের রক্ষণের ত্রাস ছিলেন ময়মনসিংহের কলসিন্দুরের ‘মেসি’ তহুরা খাতুন। ম্যাচে হ্যাটট্রিক পাওয়ার আনন্দে যেন ডানা মেলে উড়তে চাইছেন দশরথ রঙ্গশালায়।
দশরথ রঙ্গশালা চুপ করিয়ে দিলেন ঋতুপর্ণা
ফাইনালে আকাশ ভেঙে যেন আওয়াজ ওঠে ‘নেপাল, নেপাল’। ওই আওয়াজ আরো ভয়ঙ্কর হয় নেপালিরা সমতায় ফিরলে। নেপালিরা তখনও জানতো না কে তাদের হৃদয় ভাঙার অপেক্ষায়। ঋতুপর্ণার জোরালো ক্রস নেপালের গোলরক্ষক আনজিলা তুমবাপোর গ্লাভসে চুমু খেয়ে ঢুকে যায় জালে। গ্যালারির সামনে ছুটে এসেছেন ঋতুপর্ণা চাকমা। তার মুখে আঙুল। ইশারায় চুপ করতে বলেন পুরো গ্যালারিকে। সত্যিকার অর্থেই সেদিন পুরো রঙ্গশালাকে চুপ করিয়ে দেন ঋতুপর্ণা।
পতাকা নিয়ে উচ্ছ্বাস নেপালি দর্শকের
নেপালের ফুটবল সংস্কৃতি বেশ উন্নত। পুরুষ বা নারী ফুটবল- যা-ই হোক না কেন ফাইনালের মঞ্চে স্বাগতিকরা থাকলে উপচে পড়ে গ্যালারি। ৩০ অক্টোবরও গালে নেপালের পতাকার রঙ এঁকে, গলায় জাতীয় পতাকা ঝুলিয়ে এসেছিলেন হাজারো দর্শক।
ঋতুপর্ণাই সেরা
ফাইনাল শেষে সঞ্চালক ঘোষণা দিলেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন ঋতুপর্ণা চাকমা। আনন্দে ঋতুপর্ণার গলা চেপে ধরলেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। আরেক হাত ওপরে তুলে ধরলেন শিউলি আজিম।
কৃষ্ণার সেলফিতে সেরা মুহূর্ত
পরপর দুবার দক্ষিণ এশিয়ার সেরার মুকুট বাংলাদেশের মেয়েদের মাথায়। এমন স্মৃতিময় মুহূর্ত সেলফিতে ধরে রাখার চেষ্টা কৃষ্ণা রানী সরকারের। আনন্দে শামিল মারিয়া, তহুরা, সানজিদা।
দশরথের গ্যালারিতে এক টুকরো বাংলাদেশ
গ্যালারি উপচে পড়া দর্শকের ভীড়ে কাঠমান্ডুতে এই দর্শকেরা যেন এক টুকরো বাংলাদেশের ছবি। যখনই মনিকা, ঋতুপর্ণাদের পায়ে বল পড়েছে ওমনি বাংলাদেশ ‘বাংলাদেশ’ বলে চিৎকার করেছেন এই দর্শকেরা।
সাবিনার হাতে স্বপ্নের ট্রফি
যে কীর্তি কখনো গড়তে পারেন বাংলাদেশ পুরুষ ফুটবল দল, কখনো দুবার জেতেনি সাফ। সেই কীর্তি গড়েছে মেয়েরা। টানা দুবার সাফে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। ট্রফি হাতে সাবিনাদের আনন্দটা তো এমনই হবে।
শিষ্যের ক্যামেরায় গুরুর স্মৃতি
কাঠমান্ডুর ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঢাকা ফেরার অপেক্ষায় বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন ট্রফি মাঝে রেখে কোচ পিটার বাটলার ও দলের ভিডিও অ্যানালিস্ট মেহেদি হাসান সিদ্দিকীর ছবি তুলছেন তহুরা খাতুন। তাদের সঙ্গে স্মৃতির স্যালুলয়েডে বন্দি হলেন শিউলি আজিম ও শামসুন্নাহার জুনিয়র।
বিমানে গর্বের ট্রফি
বাংলাদেশ বিমানে করে নেপাল থেকে ঢাকা ফেরেন সাফজয়ী মেয়েরা। গর্বের সেই ট্রফি ছুঁয়ে দেখার সৌভাগ্য হয় বাংলাদেশ বিমানের ক্যাপ্টেন, ক্রু, বিমানবালাদের। আকাশে হাজার হাজার ফুট উচ্চতায় অপরাজিতাদের সঙ্গে একটা স্মৃতিও রেখে দিলেন সবাই।
আকাশ থেকে হিমালয় দেখা
একদিন আগেই হিমালয় কন্যাদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। বিমানের জানালা দিয়ে এবার হিমালয় দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন সাফজয়ী কন্যারা। সেই স্মৃতি কেউ কেউ মুঠোফোনে বন্দি করেও রাখেন।
দেশের মাটিতে সাফজয়ীরা
ট্রফি হাতে বিজয়ীর বেশে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে সবার আগে অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। এক পাশে (বাঁয়ে) টানা দুবার সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার পাওয়া রুপনা চাকমা। অন্য পাশে সেরা ফুটবলারের পুরস্কার হাতে ঋতুপর্ণা চাকমা।
ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনা
দুই বছর আগে এভাবেই দেশে ফেরেন সাবিনারা। সেবারের মতো এবারও ছাদখোলা বাসে সারা শহর ট্রফি নিয়ে প্রদক্ষিণ করেন মেয়েরা। এরপর সন্ধ্যায় পৌঁছান মতিঝিলের বাফুফে ভবনে।
নগরবাসীর আগ্রহে সাবিনারা
পেছনে রঙের হোলি উৎসব। সামনে নগরবাসীর আগ্রহ। ছাদখোলা বাসে গর্বিত মেয়েরা। এমন আনন্দ-ক্ষণ ধরে রাখার কমতি ছিল না দেশের গণমাধ্যমের।