1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মেয়ে তুমি কোথাও নিরাপদ নও

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মেয়েরা কেবল রাস্তা-ঘাট, বাড়িঘর, কর্মক্ষেত্রেই নয়, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও অনিরাপদ, প্রতিনিয়ত তার প্রমাণ মিলছে৷ ব্ল্যাকমেইল আর হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী নারীদের৷ তাই সচেতন হওয়াটা জরুরি৷

https://p.dw.com/p/2YF8E
প্রতীকী ছবি
ছবি: Photographee.eu - Fotolia

কিছুদিন আগে এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে জনপ্রিয় মার্কিন অভিনেতা ডেনজেল ওয়াশিংটন প্রশ্ন রেখেছিলেন, ‘‘আমরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোকে ব্যবহার করছি নাকি ওগুলো আমাদের ব্যবহার করছে?'' এই প্রশ্ন আমার মনে হয় কম-বেশি সবার মাথাতেই আজ ঘুরছে৷ কেবল যে পরিবার বা বন্ধু বান্ধবের মধ্যে তথ্য আদান প্রদান হচ্ছে তা তো নয়৷ অনেকেই সংবাদের জন্যও আজ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের উপরই নির্ভর করছে৷ তাই কোন খবরটি সত্য, কোনটি মিথ্যা সে বিবেচনাবোধটাও হারিয়ে যাচ্ছে৷ ‘ভাইরাল' হলে মিথ্যা ঘটনাও হয়ে যাচ্ছে সত্যি৷ কিন্তু সত্য-মিথ্যা খুঁটিয়ে দেখার সময় কোথায়! কেননা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কী লেখা হচ্ছে বা হচ্ছে না, কারা লেখাটা লিখেছে সেটা না দেখে শিরোনাম আর ছবি দেখেই সবাই লাইক, শেয়ার মন্তব্য লেখা শুরু করে৷ অনেক সময় ব্যক্তি যাকে পছন্দ করেন বা যার অনুসারী তারা কোনো খবর দিলেই বা শেয়ার করলেই লাইক দেয়া বা শেয়ার করেন অনেকে, সেই সঙ্গে সেটা বিশ্বাসও করেন৷

আর এই বিশ্বাসটাই মেয়েদের জন্য বড় একটা সমস্যা৷ আমাদের সমাজে এখনো বেশিরভাগ মানুষ মেয়েদের হেয় করতে পারলেই শান্তি পায়৷ আর সে সুযোগটা যদি আপনিই করে দেন তাহলেতো কথাই নেই৷ কীভাবে আপনি সে সুযোগ করে দিচ্ছেন? সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর সাহায্যে৷ হ্যাঁ ঠিকই বলছি৷ মেয়েরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি অনিরাপত্তার শিকার৷

যেমন ফেসবুকে অনেক ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে৷ কিন্তু ঠিক কত মেয়ে সেই নিরাপত্তার ব্যাপারে জানে? অর্থাৎ আপনার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো, একান্ত ব্যক্তিগত মুহূর্তগুলোর কে বা কারা দেখতে পায় আপনি কি খেয়াল রাখেন? ফেসবুকে কিন্তু কে আপনার ছবি দেখতে পাবে, কারা আপনার সম্পর্কে জানতে পারবে এসব নির্দিষ্ট করে দেয়া যায়৷ যারা আপনার বন্ধু তালিকায় নেই তারা আপনার প্রোফাইল কতটা দেখতে পারবে সেটাও আপনি ঠিক করে দিতে পারেন৷ যারা পুরো প্রোফাইল ‘পাবলিক' করে দেন, তাদের তথ্য যে কেউ দেখতে পারে৷ তাই সেসব তথ্যকে যথেচ্ছা ব্যবহার করে ভুল তথ্য পরিবেশনও করতে পারে৷ আর মেয়েদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা হয় ছবি ও ভিডিও নিয়ে৷ যাদের প্রোফাইল পাবলিক, তাদের ছবি ও ভিডিও যে কেউ দেখতে ও ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারে৷ তাই এ সব ছবি দিয়ে একাধিক ক্লোন অ্যাকাউন্ট তৈরি করে তা দিয়ে মেয়েদের ব্ল্যাকমেইল করার ঘটনাও প্রতিনিয়তই ঘটছে৷ যারা পাবলিক ফিগার, অর্থাৎ তারকা তাদের কথা ভিন্ন৷ কারণ তাদের নাটক, গান, সিনেমা প্রচারণার একটা বিষয় থেকে তারা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করেন৷

অমৃতা পারভেজ
অমৃতা পারভেজ, ডয়চে ভেলেছবি: DW/P. Henriksen

কিন্তু অন্য মেয়েদের সাবধান না হয়ে উপায় নেই৷ ফটোশপের এই যুগে আপনার পোশাক পরা ছবিটা হয়ে যেতে পারে নগ্ন ছবি৷ আর সেটা ছড়িয়ে পড়তে পারে সর্বত্র৷ তাই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছবি দেয়ার আগে সতর্ক হোন৷ আপনার কোন ছবি কেবল পরিবার ও বন্ধুবান্ধবরা দেখতে পারবে সেটা ঠিক করে দিতে পারেন৷ অথবা যদি কেবল প্রেমিক বা স্বামীকে পাঠানোর জন্য কোনো ছবি তোলেন, দয়া করে তা সেভ করবেন না৷ ফোনে বা ল্যাপটপে যেখানেই সেভ করুন না কেন, সেটা মুছে ফেললেও কিন্তু কোথাও না কোথাও থেকে যায়৷ আর সেসব একান্ত ছবি বা ভিডিও যদি পাবলিক হয়ে যায় তাহলে তা কোন পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে সেটা বুঝতেই পারছেন৷ স্ন্যাপ চ্যাট, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, টুইটারে এখন তরুণ তরুণীদের অবাধ বিচরণ৷ তাই সাবধান হওয়াটা জরুরি৷ একটু সময় নিয়ে ভেবে-চিন্তে ছবি আপলোড করুন৷

আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন মন্তব্যে৷

ডয়চে ভেলের সাংবাদিক অমৃতা পারভেজ৷
অমৃতা পারভেজ ডয়চে ভেলের মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক৷
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য